গল্প হলেও সত্যি

এক ষোড়শী বালিকা বধূর গল্প শোনাবো আজ,

বালিকা বধূ থেকে স্বাবলম্বী নারী হয়ে ওঠার গল্প।

সে তখন ষোড়শী, চোখে হাজার নতুন স্বপ্ন,

আর তার পুরুষটির আনাগোনা ওই বিশের দোরগোড়ায়…

জীবনের প্রথম বসন্তের হাতছানিতে ছুটেছিল সেই ষোড়শী,

নতুন সম্পর্ক সাথে সাথে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখেছিল সে।

তাদের মাঝে ছিল কয়েকশো কিলোমিটারের দূরত্ব…

বন্ধুত্ব দিয়ে শুরু হওয়া তাদের সেই সম্পর্কে দেখা করা ছিল না,

শুধু ছিল কিছু ফোনালাপ….

বন্ধুত্বের দু’মাসের মাথায় প্রেম নিবেদন আর তারপর শুরু তাদের প্রেমযাপন…

সম্পর্কের ঠিক চার মাস পরে আশ্বিনের এক সন্ধ্যায় তাদের প্রথম সাক্ষাৎ,

আবেগটুকু অনেক কষ্টে সামলে রেখেছিল সেদিন,

কারণ পুরুষটির মতে বিবাহপূর্ব স্পর্শ নাকি অবৈধ, তাই লাল রঙে সিঁথি রাঙালো মেয়েটি।

স্বামী সোহাগী নাস্তিক মেয়েটাও হয়ে উঠল ঘোর আস্তিক।

কুসংস্কার, ব্রত, চুলের ফাঁকে সিঁদুর সবটা বজায় রেখে সম্পর্কটা বহন করল সে।

আর পুরুষটি! তার প্রতিটা ভালোবাসার আর কাছে আসার দাগ রেখে গেল সেই ষোড়শীর শরীর আর মনে।

জীবনের প্রথম চুমুতে সেদিন রক্ত গড়িয়েছিল ঠোঁটের কষ বেয়ে,

বুকে বসানো কামড়ের দাগ আর ব্যথাটাও ছিল এক মাস,

যৌনাঙ্গে প্রথম স্পর্শে সেদিন যন্ত্রণায় কঁকিয়ে উঠেছিল সে।

তবু সে কালশিটে পড়া দাগ আর প্রতিটা ব্যথায় মেয়েটা ভালোবাসা খুঁজেছিল।

স্বপ্ন দেখেছিল ঘর বাঁধার, স্বপ্ন দেখেছিল মা হওয়ার।

আরও না জানি কত-শত স্বপ্নের জাল বুনেছিল সে।

সেই ভিনদেশী যথাসময়ে ফিরেছিল তার নিজের দেশে,

তবে সেই ষোড়শী বধূকে ছাড়াই।

কিন্তু বজায় ছিল তাদের মুঠোফোনে বন্দী বার্তালাপ,

ফিরে আসার কথাও দিয়েছিল…..

তবে না, সে পুরুষ আর ফেরেনি সেই ষোড়শী তন্বীর কাছে,

সম্পর্কটা ভেঙেছে, সে বেঁধেছে নতুন ঘর।

পাঁচ বছর সম্পর্ক বয়ে ষোড়শী সেদিন একুশ,

বাস্তব বোঝে সে,

তবুও সেদিন নিজের লালে রাঙা সিঁথি শূন্য করতে হাত কেঁপেছিল তার…

অনেকগুলো স্বপ্ন ভেঙেছিল, কত আশা- আকাঙ্ক্ষা মুহূর্তে শেষ হয়েছিল…

কালো পুঁতির মালাটা ছেঁড়ার সময়ও খুব কেঁদেছিল সেদিন।

 

তবে জীবন পথের ধাক্কাগুলোয় আজ সোজা হয়ে দাঁড়াতে শিখেছে মেয়েটা,

কোনো ঝড়ের আজ সাধ্য নেই তাকে টলানোর।

 

আজ তার সংসার হয়েছে, সে আজ “মা”।

না, কোনো সম্পর্কের বেড়াজালে আর সে জড়ায়নি নিজেকে,

সে আজ স্বাবলম্বী, কিছু ছোটো ছোটো শিশুর শিক্ষার ভার নিয়ে আজ সে তাদের গুরু “মা”।

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *