কথা দেওয়া থাক
পর্ব- ১
তিন্নি: কী ব্যাপার হে কবি মশাই, seems to be in another জগৎ! সমস্যাটা কী বল ঝটপট।
মেঘ: ধুর্, কী আবার হবে? আমার কোনো কিছু হওয়ার অবকাশ আছে কি? নাহ্ রে আমার কিছু হয়নি! এমনকি বিকেলের মনখারাপটুকুও নয়।
তিন্নি: এভাবে টেঁরিয়ে-বেঁকিয়ে কথা বলার কারণটা কি জানতে পারি গরীবের বব ডিলান সাহেব? মনখারাপ বুঝি?
মেঘ: তোকে কিছু না বললেও অযথাই আমার দোষকে আঁকড়ে ধরে বসে থাকবি, আর কিছু বললেও আমার কথাগুলো এক ব্যর্থতার রূপ পায় তোর কাছে। এসব এখন ছাড় তো। ক্লাস ক’টায়?
তিন্নি: এক চড়, পাক্কা বুড়ো একটা। কথাবার্তা দ্যাখো, পুরো কবিত্ব যেন উপচে পড়ছে। ক্লাস… উমম্ বেলা ১১:৩০, যা তুই যেতে পারিস, আমাকে কিচ্ছুটি বলতে হবেনা— হুহ্!
মেঘ: যদি কিছু হয় থাকে তাহলে অতি অবশ্যই আপনাকে ঠিক জানানো হবে। কিন্তু এখন যান, চুপচাপ খেয়ে এসে আমায় উদ্ধার করুন এবং তাড়াতাড়ি কলেজ চলে আসুন, আমি ক্যান্টিনে অপেক্ষারত…
মেসেজ
(মেঘ: কিরে কতদূর?
তিন্নি: On the way রে বাবা, আসছি!)
তিন্নি: কী দেখছিস বলতো হাবলাকান্তের মতো হাঁ করে?
মেঘ: আজ চোখে কাজল কেন দিয়ে আসিসনি? মনে কি ভীষণ বিরহ জেগেছিল?
তিন্নি: আমার ইচ্ছে, তাই পড়িনি।
মেঘ: কাল থেকে যেন এই সূক্ষ্ম ভুল আর না হয়। কেমন!
তিন্নি: কেন রে হ্যাঁ হাবলা?
মেঘ: আমার ইচ্ছে, তাই।
তিন্নি: মানেটা কি হ্যাঁ? আ…
মেঘ: চুপ, এভাবে কথা বাড়াসনা, কথায় বড্ডো কথা বাড়ে। ক্লাসে আয় জলদি!
তিন্নি, ফার্স্ট ইয়ারের ছলবলে একটা মেয়ে। জীবনটাকে সে ভালোবাসে, প্রতিটা মুহূর্তে রসদ খুঁজে বেড়ায় বাঁচার জন্য। যাকে আগলে রাখার সাধ্য কেবল মাত্র একজনের, সে হল মেঘ! বন্ধুত্বের প্রথম দিনগুলো থেকে এক অলিখিত কাগজে তিন্নির সব আবদারেরা মাত্রা খুঁজেছে শুধু ওর কাছে। তা সে মাঝরাতের আইসক্রিমের হোক, কিংবা মুষলধারে বৃষ্টিতে ভেজা…
আর তিন্নির পাওয়া সবকটা প্রোপোজালের খুঁত খুঁজে সেগুলোকে বাতিলের খাতায় তোলা থেকে শুরু করে ওর কিছু না বুঝেও, ওর লিপস্টিকের শেড বাছাইয়ের দায়িত্বটাও একই রকম ভাবে মেঘের দখলে!
ওদের একে অপরকে বোঝার অদ্ভুত কেমিস্ট্রিটা ঠিক যেন শিল আর নোড়ার মতো, একজনের অন্যজনকে ছাড়া, জাস্ট চলেনা৷
চলবে…