খুব কাছের দুই সই,
অবাক হচ্ছিস তাইনা? অন্যরকম লাগছে! -হ্যাঁ মাথা-মনের বিরাট এক দন্দ্ব কাটিয়ে অবশেষে লিখতে বসলাম। আলাদা করে হয়তো লেখাই যেত কিন্তু “তুই আর আমি”-র চেনা ছকে ফেলতে চাইনি। তাই দুজনকে একসাথেই চিঠি লিখছি। আর ব্যাপারটা কোনোদিনই তুই-আমিতে সীমাবদ্ধ ছিলও না। সবসময়ই ছিল আমারা’। আমারা তিনজন।
ছেলেবেলার বন্ধু হয়তো আমরা নয়, তবে মেয়েবেলার সই বলাই যায়। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা বছর একসাথে কাটিয়েছি। একসাথে খেয়েছি, একসাথে পড়েছি, একসাথে আনন্দ করেছি, ক্লাসে শাস্তিটাও একসাথে পেয়েছি! আমার ছোট বড় যাবতীয় ব্যাপারে তোদের উপস্থিতিটা বাধ্যতামূলক ছিল। এখনও আছে তবে ব্যস্ততার ভীড়ে তা বড়ই ফিকে হয়েছে। দূরত্ব বেড়েছে তবে তা মেটাবার চেষ্টা চলে আমাদের তিনজনের মধ্যে। মনে হয় “আমাদের গেছে যেদিন একবারেই কি গেছে? কিছুই কি নেই বাকি?”
এখন আমাদের কথপকথনে একগাদা ভনিতা! খুশির ইমোজির পিছনে একরাশ জমাট বাধা অভিমান। বলতে চাইলেও বলা হয়ে ওঠে না অনেক কথা।সেই অধিকারবোধটাও হারিয়েছে এখন। ব্যস্ততার মাপকাঠিতে কেউ একটু আগে,কেউ একটু পরে।
অবসরে যখন ফোনের গ্যালারি হাতরাই, তখন মনে হয় আবার পুরোনো দিনগুলোয় ফিরে যাই, আবার আমার সবকিছুতে তোদের উপস্তিতিটা অনুভব করি। পরক্ষনেই অনুভব করি চারপাশের শূন্যতা। আমার কোথাও ছিটে ফোটাও তোদের উপস্হিতি নেই।
বড্ড বেশী করে তোদের স্মৃতিগুলো মুঠোবন্দি করতে চেষ্টা করি।এখনও ভীষণ ভাবে তোদের চাই, অনেক জমে যাওয়া কথা ভাগ করে নিতে চাই, আসলে তোদের ওই জায়গাটা কাউকে দিতে পারিনি তো। তোদের চারপাশে কত নতুন মানুষের ভীড়, তা ঠেলে আমার ভিতরের কথাগুলো পৌঁছোয়না আর। কষ্ট হয় যখন দেখি কত সাবলীলভাবে এরিয়ে যাস, কষ্ট হয় যখন অনেক অপেক্ষার পরেও একটা ফোন আসে না। ভীষণ কষ্ট হয় যখন তোদের আর পাঁচজনের ভীড়ে মিশে যেতে দেখি…
-ইতি, তোদের অভিমানী সই।