আমি চুপটি করে বসি শীত এর দুপুরের পাশে, ছাদে ঝুলে থাকে অপরূপ পশমিনা শাল। শীতের রোদে বড় মায়া লেগে থাকে জানো, আমি সেই মায়াটুকু নিয়েই আবার জন্মাতে চাই…
দূরে দেখি হেঁটে যায় তারা,
হাত দুটো শক্ত করে ধরা,
চোখ দুটো শান্ত, নিবিড়,
পা দুটো ধীর ও সচল…
ঠিক এমনটাই, এমনটাই তো ছিলাম এক সময়, আমরাও…
সোনালী রঙা গয়না পরে সেজে আছে অতীত,তার গায়ে আমি অভিমান ছুঁইয়ে আসি। দুপুর গাঢ় হয় নীরবে, ভুলে যাই রুমালের গন্ধ, ভুলে যাই কতগুলো শীত জড়িয়ে রেখেছে আমাদের!
আমাদের শহরে জমে থাকে লাল-নীল ফুল,
মেঘের কিনারে ছুঁয়ে থাকে নীলচে সভ্যতা।
চেনা যুবকের প্রিয় রঙে সেজে ওঠা যুবতীর কাছে খোঁজ নিয়ে দেখি,
শীতের কাছে তাদেরও এক অদ্ভুত ঋণ রাখা।
আমার শহরে শীত নামলে আমি তোমায় নিয়ে লক্ষ কবিতা লিখতে পারি;
সব দুঃখ হাতের মুঠোয় নিয়ে তোমার জন্যে গান বাঁধতে পারি।
ক্ষয় ধরে যাওয়া সম্পর্কে লাগিয়ে দিতে পারি ভালোবাসার প্রলেপ..
যা কিছু আজ ভেঙে খানখান, জুড়ে দিতে পারি যত্ন করে,
শুকিয়ে যাওয়া গাছে প্রাণ দিতে পারি নতুন ভাবে।
আমার শহরে শীত নামলে মাঝরাস্তায় তোমার হাত ধরতে পারি,
তুমি অবাক হয়ে তাকালে তোমায় আরো কাছে টেনে নিয়ে চারদিকে সমালোচনার ঝড়ও তুলতে পারি।
আমার শহরে শীত নামলে চারপাশে হেঁটে যায় কত প্রেমিক-প্রেমিকা,
উড়ে যায় কত পরিযায়ী, খিলখিল করে হাসে পিকনিকে যাওয়া ছেলেমেয়ে।
সন্ধ্যে হলেই তোমার কফির নেশা দ্বিগুণ বেড়ে যায়,
আমার ঘাড়ে পিঠে থেকে যায় হাজার চুমুর দাগ।
আমার শহরে শীত নামলে আমি তোমায় আগলে রাখতে পারি বুকের ওমে,
ভালোবাসার ডালপালা ছড়িয়ে দিতে পারি আকাশেরও ওপরে,
জানলার কাঁচে রোদ ঘন হয়ে এলে আমি খুঁজে পাই আমাদের পুরোনো ছবি,
ঝকঝকে নয়, তবু তরতাজা হাসি দুটো মুখে।
আমার শহরে শীত নামলে আমি ঠিক ওভাবেই হাসতে পারি আবার,
প্রত্যেকটা সেকেন্ড দিতে পারি তোমায়, কাগজের ফুলে সাজাতে পারি আমাদের ঘর।
আমার শহরে শীত নামলে ভুলে যেতে পারি সব অভিমান,
রেখে যেতে পারি কিছু বাগান, কিছু প্রশ্রয়, কিছু বিশ্বাস,
রেখে যেতে পারি উন্মাদ ভালোবাসা- এই ক্ষয় ধরা শহরের বুকে…