তোমার আমার দেখা হয়েছিল বইমেলার ভিড়ে ।অত মানুষের ভিড়ে তুমি পাশ কাটিয়ে চলে গেলে। হইতো চিনতে পারো নি মনে হয়, অনেক বছর যে হয়ে গিয়েছিল। তোমাকে বড্ড ব্যস্ত মনে হলো । কত লোক তোমাকে ঘিরে কত জন আবদার করছে তোমার কবিতা গুলি তোমার মুখ দিয়ে শুনবে বলে। আমি সব লক্ষ্য করছিলাম এক কোনায় দাঁড়িয়ে। জানো তুমি অনেক পাল্টে গেছো। কেরিয়ার নিয়ে অনেক সচেতন হয়েছ ।আগে কতবার বলতাম তুমি কবিতা গুলো পাবলিশ করো করতেই না বলতে “তুমি শুনলেই আমার কবিতা গুলো সার্থক হয়ে যাবে গোটা জগৎ এর ও জানা হয়ে যাবে।” কতবার বলতাম একটু সিরিয়াস হও আমাদের কথা ভাবো তখন কবিতার ছলে আমার মন ভুলাতে। আর আজ দেখো নির্দ্বিধায় তুমি তোমার কবিতা পাঠ করছো আমাকে না শুনিয়েই। সব নুতন নুতন কবিতা লিখে আমাকেই শোনাতে আগে ,আর আমি বলতাম এত ভাষার সমাহার পাও কোথা থেকে , তখন তুমি হো হো করে হেঁসে বলতে তোমার জন্যে তো আমি ছন্দ বাঁধতে পারি। রোজ রাতে যখন তুমি ঘুমিয়ে পড়ো ফোন না কেটে তোমার ওই নিশ্বাস তাই আমার শব্দের যোগান দেয়, তোমার রেগে যাওয়া উষ্ণ ঠোঁট দুটো যখন অনবরত আমাকে বকতে থাকে তখন আমি ভালোবাসার ছন্দ খুঁজে পাই। তোমার ওই চিন্তিত মুখ আমার মনে কষ্টের কবিতার বাসা বোনে। তোমাকে না দেখতে পাওয়ার ব্যাকুলতা তখন আমার কবিতা গুলো ছন্দ ছাড়া হয়ে যায়। তোমার এসব কথা শুনে আমি বাস্তবটা ভুলেই যেতাম। সব সময় আমাকে তোমার কবিতার পৃথিবীতে রাখতে। আজ আমি বড্ড অভিমানী। সেসব কথা আজ খুব মনে পড়ছে, না আজ না তোমার যখন প্রথম কবিতা পাবলিশ হয় তখন থেকেই। মনে অনেক প্রশ্ন বাঁধা বাঁধছে জানো। খুব জানতে ইচ্ছে করে যে মানুষটা আমার নিঃশ্বাসের শব্দের জোগান পেত সে আজ শব্দগুলি পাচ্ছে কোথায়? যে মানুষটা বলতো হাজার ভিড়ের মধ্যেও তোমাকে খুঁজে নেব আজ কি হলো? আমাকে না দেখতে পেলে যার কবিতা গুলো ছন্দ ছাড়া হয়ে যায় সে আজ দিব্যি কবিতার ছন্দ বাঁধছে। সে আজ আমাকে ছাড়া গোটা পৃথিবীতে তার কবিতা শোনাচ্ছে। আজ এটুকুই উপলব্ধি করলাম তুমি আমাকে কল্পনার জগতে নিয়ে গিয়েছিলে বাস্তবটা এড়িয়ে ।
আজ এটুকুই বলবো সেদিন যদি বাস্তব টা একটু ভাবতে, তাহলে আজ এই প্রাক্তনের তকমা দিতাম না।
ছবি :zee photography