নৈঃশব্দ্য… বড্ড বেশি বাঙময়। কথায় কথায় চরিত্র জুড়ে যখন ঠিক-ভুলের বিক্ষিপ্ত কাটাছেঁড়া চলে— তখন চরিত্ররা নির্ভেজাল প্রতিবাদ জানায় ঘৃণার নৈঃশব্দ্যে, সামান্য সহিষ্ণুতার আশায়। যখন ভুখা পেটে কাঁদতে থাকা শৈশব ক্লান্ত হয়ে নুইয়ে পড়ে পথের ধারে— তখন অভাগী মায়ের শুষ্ক চোখ দু’খানি প্রতিবাদ জানায় অসহায়তার নৈঃশব্দ্যে, দুই গ্রাস ভাতের আশায়। যখন ভারী ভারী বইয়ের পাহাড় ডিঙিয়ে আসার পর প্রাপ্তির ভাঁড়ারে জোটে শূন্যতা— তখন হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার প্রতিবাদ জানায় ক্ষোভের নৈঃশব্দ্যে, অধিকার আদায়ের আশায়। যখন এক আকাশ ভালোবাসার বিনিময় মেলে আলোকবর্ষ দূরত্ব, তাচ্ছিল্য, অবহেলা
— তখন প্রেমিকের মনও প্রতিবাদ জানায় অভিমানের নৈঃশব্দ্যে, বোঝাপড়ার আশায়। যে কৃষকেরা মানুষের খাবার জোগান দেওয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন, দিনশেষে তাঁদের ঘরেই যখন ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’— নৈঃশব্দ্যে প্রতিবাদ তাঁরাও করেন, ন্যায্য পারিশ্রমিকের আশায়। নৈঃশব্দ্য মাত্রেই এমন এক হাতিয়ার যা অস্তিত্বের প্রাবল্য জানান দিয়ে যায়। নৈঃশব্দ্য শান্ত, তবুও উগ্র; নৈঃশব্দ্য ভাষাহীন, তবুও স্পষ্ট। নৈঃশব্দ্য আসলেই বড্ড বাঙময়।।