কাট ওয়ান:
– তুই জানিস তো তোকে আমি ঠিক কতটা ভালোবাসি?
– তাই বুঝি?
– কেন তুই বুঝিস না সেটা?
– কি করে আর বুঝবো বল, কখনও তো আর এর আগে নিজে মুখে আমাকে বলিসনি সেকথা।
– জানিস, সামনাসামনি তোকে অনেকবার বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু বলে উঠতে পারিনি।
– কেনো?
– ভয় পেয়েছি, যদি তুই না বলিস, যদি ফিরিয়ে দিস?
– তবে আজ হঠাৎ কেনো বললি?
– জানিনা ঠিক, হয়তো মনে হয়েছিল যে এবার তোকে সত্যিটা জানানো উচিৎ যে তোকে নিয়ে আমি ঠিক কতটা ভাবি, তুই আমার কতটা জুড়ে আছিস।
– ভেবে বলছিস তো?
– তোর কী মনে হয়?
– তুই বল…
– তোর জন্যে আমি কতগুলো দিন, কতগুলো বছর অপেক্ষা করেছি তোর ধারণা আছে? সবসময় তোর পাশে থেকেছি বন্ধু হিসেবে, এইভাবেই আমি আমার বাকি সারাটা জীবনও তোর পাশেই থেকে যেতে চাই, কারণ তুই ছাড়া আর কাউকেই আমার চাইনা।
– থাকতে পারবি তো আমার সাথে? জানিস তো আমি ঠিক কতটা মুডি, কেমন অল্পতেই রেগে যাই।
– আমি সবটা সামলে নেবো দেখিস। তুই এক পা বাড়িয়ে দেখ, একটু ভরসা রাখ আমার উপর।
– …( নিস্তব্ধতা )
– একবার হ্যাঁ বলে দে প্লিজ। ফেরাস না আমাকে আজ আর, আমি শুধু তোকেই চাই, আর কাউকে না, কোনোদিনও না।
– ছেড়ে যাবিনা তো কখনও? কথা দে।
– কথা দিচ্ছি, তুই ছেড়ে যেতে চাইলেও আমি তোকে কখনও কোনোদিন ছেড়ে যাবনা মন… টিল দ্য লাস্ট ব্রিদ।
– আফটার অল দিস টাইম?
– অলওয়েজ।
কাট টু:
– তোর সাথে আর থাকা যাচ্ছেনা জানিস তো, প্রতিটা দিন আমার কাছে দুর্বিসহ হয়ে যাচ্ছে। এই সম্পর্কটার কোনো ভবিষ্যত নেই।
– আজ এতোগুলো বছর পেরিয়ে এসে তোর এটাই মনে হয়?
– তুই খুব বেশি ডিম্যান্ডিং।
– দিনের শেষে তোর আমার জন্যে কিছুটা সময় চাওয়া খুব বেশি ডিম্যান্ড হয়ে যাচ্ছে বল?
– তোকে খুশি করা আমার পক্ষে অসম্ভব। তুই কোনোদিনই আমাকে বা আমার কাজের গুরুত্বকে বুঝিসনি।
– বেশ, কী চাস তাহলে তুই?
– আমি এই সম্পর্কটা আর চাইনা। আমাদের একসাথে কোনও ভবিষ্যত হতেই পারেনা। তোকে বিয়ে করলে হয়তো সেই আমাদের ডিভোর্সই হয়ে যাবে, তার চেয়ে এটা এখানেই শেষ হোক নাহয়।
– কথা দিয়েছিলি কোনোদিন ছেড়ে যাবিনা।
– ওসব কথার কথা, আমাকে আর কোনোভাবেই যোগাযোগ করার চেষ্টা করিসনা তুই।
– যাসনা প্লিজ, একবার আমার কথাটা শোন, শেষবার একটা চেষ্টা… প্লিজ…
নাহ, বিপরীতে থাকা মানুষটা আর কিছু শুনতে চায়না, বলার সুযোগও দেয়না। তারা জাস্ট সারাজীবনের মত চলে যায়, আর পেছনে রয়ে যায় অজস্র স্মৃতি বিজড়িত আর একটা মানুষের খোলস যার ভিতরটা পুড়তে থাকে রোজ একটু করে। ফরএভার ইজ আ মিথ। এভাবেই আজকাল খুব সহজে রোজ ভেঙে যাচ্ছে অসংখ্য সম্পর্ক, যেগুলো হয়তো আর একটু চেষ্টা, আর একটু যত্ন পেলেই থাকতে পারত অটুট। কিন্তু আমরা সেই চেষ্টাই করিনা, বরং যেতে দি উল্টো দিকের মানুষগুলোকে। সম্পর্কের ভাঙাগড়া উভয়পাক্ষিক, তাই উক্ত কথোপকথনে কোনটা একটা ছেলের ভাষ্য আর কোনটা একটা মেয়ের সেটা নাহয় পাঠক নিজেই ঠিক করে নিলেন।