রক্তকরবী ফুল দেখেছেন কখনও? অনেকেই হয়তো দেখে থাকবেন। কিন্তু আজকের এই রক্তকরবী সেই মনমোহিত ফুলটি নেই,সে নৃশংস হতে হতে প্রতিটি পাতাকে রক্ত কালিমালিপ্ত করে গেছে।
পর্ব -১
ছুটতে ছুটতে রোহিত ঘরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দিল। সারা শরীর জুড়ে অসংখ্য ঘামের ফোঁটা। না গরিয়ে পড়ছে আর না শুকিয়ে যাচ্ছে। ঠিক যেন আটকে গেছে স্টপ ওয়াচের মতো। আতঙ্কে চোখগুলো এখনও যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। হার্টবিট যেন থমকে গেছে। আর মন বলছে এরপর আমি নয় তো?
প্রতিদিনের মতো রোহিত আজও গেছিল পাড়ার ওই একপসলা ছোটো মাঠটাতে।কিন্তু আজ সবাই আসলেও সাম্য আসেনি। এমনিতেই পাড়ায় একেরপর এক যা ঘটনা ঘটছে, কারোরই মন ঠিক নেই পাড়ায়। প্রথমে স্বপন জ্যেঠুর ওইভাবে নিখোঁজ হওয়া, তারপর ওই কাদামাখা বডিটা । কী হচ্ছে তা কেউ জানে না। এর মধ্যে আবার সাম্যর খেলতে না আসা। সাম্য টিমের ক্যাপ্টেন, ব্যাট বল সব ওর কাছে। সাম্যর বাড়িতে ব্যাট আনতে গেলে ওর মা বলে সাম্য তো স্কুল থেকে ফেরেনি এখনও। রোহিত জানে স্কুলে আজ হাফ ছুটি ছিল, নেহাতই কাকিমা চিন্তা করবে বলে সে স্কুলে যায়নি বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেল।
খেলতে খেলতে রোহিতের মাথায় একটা কথাই ঘুরছে, সাম্য কোথায়? ওর যেন খেলায় আজ মন বসছে না। হঠাৎই তার দিকে একটা ক্যাচ উঠে এল। ক্যাচটা তার হাতে লেগে দূরের ঝোপটায় গিয়ে পড়ল। কাছে যেতেই ও লক্ষ্য করল বলটা কিছুতে একটা আটকেছে, কিন্তু সেটা কোনো ঝোপ নয়। সেটা লাল লাল কিছু একটা, এটা কি তবে রোহিতের স্বপ্নে দেখা সেই রক্তকরবী? কিন্তু না এ যে রক্তকরবী নয় ,এ যে অন্য কিছু। এটা একটা মানুষ। কিন্তু তার পশ্চাৎ দেশ থেকে অবিরাম রক্ত বেরোচ্ছে, সেখানেই আটকেছে বলটা। এটাকে কী বলা চলে খুন নাকি ধর্ষণ?
বাকিরা এটা দেখা মাত্রই দৌড় দেয় বড়ো দের ডাকতে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসে। বডিটি উদ্ধার করে, স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছিল যে এটি একটি নাবালক। তার পিছনে একটানা পেনিসের আঘাতের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল এই রক্ত গহ্বর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ছেলেটিও আর বেঁচে নেই। কিন্তু একী? এ যে… এ যে সাম্য। কে করল এরকম অবস্থা ওর? রোহিত আর সেখানে নিজেকে স্থির রাখতে পারল না, ছুটে ঘরে চলে এল।
ক্রমশ…
অর্ঘ্যদীপ চক্রবর্তী