চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে আছে আয়ান। পিছন থেকে আচমকাই একটা ডাক, শোন না, আমি না। কথাটা শুনে চায়ের দোকান থেকে পিছনে মুখ ফেরালো দুটো মানুষ। একজন নীলাদ্রি, যে রিমির চেনা এবং আর একজন হলো আয়ান। প্রায় বছর চারেক পর সেই চেনা একটা আওয়াজ শুনে আয়ান রীতিমতো স্তম্ভিত। কি হয়েছে বল, নীলাদ্রির গলার স্বরে জ্ঞান ফিরলো রিমির। কিছুনা তুই তাড়াতাড়ি আয়, বলেই গাড়ির কাঁচটা আবার তুলে দিল রিমি। যেমনি কথা তেমনি কাজ, নীলাদ্রি গাড়িতে এসে গাড়িটা স্টার্ট দিল। আয়ানের চোখের সামনে দিয়ে একটা কালো স্করপিও বেরিয়ে গেলো।
রিমি আর আয়ান একে অপরের কলেজের বন্ধু। সেই সময় থেকেই ওদের সম্পর্কটাও শুরু হয়। ওদের ভালোবাসার কথা অনেকেরই মুখে মুখে শোনা যেতো। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। তারপর কি হলো, আয়ান বাইরে চলে গেলো আর ওদের সম্পর্কটাও শেষ হলো ওখানেই।রিমির সাথে নীলাদ্রির আলাপ হয় কলেজের তৃতীয় বর্ষের বার্ষিক অনুষ্ঠানের সময়। রিমির সিনিয়র ছিল নীলাদ্রি। এবং ওদের তারপর কথাবার্তা চলতে থাকে, দুজনে খুব ভালো বন্ধু হয়। তারপর সেখান থেকেই, ওদের সম্পর্ক খুব বেশিদিনের না। ওই বছর চারেক মতো হবে।
এটাও পড়তে পারেন – বন্ধুতেও মন ভাঙে
হঠাৎই আজ বৃষ্টিটা নেমেছে বেশ জোরেই হচ্ছে বৃষ্টিটা, আর আজই আমার গাড়িটাও খারাপ হতে হলো, মনে মনে বলতে লাগলো আয়ান। কোথাও একটা দাড়িয়ে যাওয়া উচিৎ। তাই একটা ব্রিজের নিচে এসে দাড়ালো আয়ান। মনে হলো রিমি, হ্যাঁ রিমিই তো দাঁড়িয়ে। নিজে থেকে গিয়েই কথা বললো আয়ান। তারপর বৃষ্টি থেমে গেলো আর ওরা যে যার বাড়িমুখো হলো।রাতে হঠাৎই রিমির মোবাইলে একটা নোটিফিকেশন এলো, আয়ান চ্যাটার্জী সেন্ড ইউ এ ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট। কিছু না ভেবেই রিকুয়েস্টটা অ্যাকসেপ্ট করলো রিমি, তারপর আবার শুরু হলো ওদের। কথা শুরু হলো মেসেঞ্জারে সেখান থেকে হোয়াটস অ্যাপ তারপর আবার রিমির মনে, আবার ঠিক আগের মতো।
কোনোরকম দ্বিধাবোধ না করেই রিমি আয়ান আর ওর সম্পর্কটা খুলে বললো নীলাদ্রিকে। ভেবেছিল, ওর দিকে থেকে হয়তো একটা পিছুটান থেকে যাবে। রিমি ভেবেছিল নীলাদ্রি হয়তো ওদের দুজনের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু না কিছুই বললো না নীলাদ্রি। হয়তো আটকাতে চাইনি রিমিকে। হয়তো ভেবেছিল শুধুমাত্র রিমির সুখের কথাটা। তাই নিজের ভালোলাগা, খারাপলাগা এবং নিজের ভালোথকার কথা না ভেবেই রিমিকে যেতে দিয়েছিল আয়ানের সঙ্গে, নিজের পর করে দিয়ে।