কম বেশী প্রত্যেকেই আমরা খেতে ভালোবাসি আর বাঙালীর প্রতিশব্দ হিসাবে তাকে খাদ্যরসিক তো বলাই যায়। আর বিশেষত যে খাবার দেখলে খাদ্যরসিক বাঙালী আর নিজেকে সামলে উঠতে পারেনা, তা হল “স্ট্রিট ফুড”। কি হল? স্ট্রিট ফুডের নামেই কেমন চোখের সামনে চাউমিন, এগরোল, মোগলাই, চিকেন পকোড়া দেখতে পাচ্ছেন তো? জানি জানি, আর সেটাই স্বাভাবিক। তার ওপর আবার পূজোর রেশ-টাও পুরোপুরি কাটেনি এখনো! তো আজ বরং আপনাদের হেঁশেলের খবর দেওয়ার আগে এই স্ট্রিট ফুড নিয়ে আমার নিজের কিছু অভিজ্ঞতা শোনাই। সেগুলো শোনার পর না হয় ভাববেন যে স্ট্রিট ফুডে লাল সিগনাল দেখাবেন নাকি সিগনাল সবুজই করে রাখবেন।
পূজোয় বাবার সাথে বেরিয়েছি ঠাকুর দেখতে। উত্তর কলকাতার রাস্তায় বাবার হাত ধরে চলেছি যখন, তখন ঘড়ির কাঁটা বলছে সময় বেলা ১২টা। রাস্তার ধারের খাবারের দোকানগুলোয় তখন রাতের খাবার প্রস্তুতির তোড়জোড় চলছে। এই রকমই এক দোকানের বাইরে রাস্তার ওপর বেঞ্চ পেতে আর সেই বেঞ্চের নীচে প্লাস্টিক পেতে কাটা হচ্ছে স্যালাড, যেগুলো রাতে এগরোল, চাউমিন, মোগলাই কিংবা পকোড়ার সাথে দেওয়া হবে। পাশে ডাই করে রাখা শসা, পেঁয়াজ আর গাজর, আর দোকানের কর্মচারীটি প্রায় রাজধানী এক্সপ্রেসের গতিতে কেটে চলেছে স্যালাড আর সেগুলো হাত দিয়ে ছুঁড়ে সরিয়ে দিচ্ছে নীচে পেতে রাখা প্লাস্টিকের দিকে। যদিও তার নিক্ষেপ খুব খারাপ ছিলনা, তবুও খানিক অমনোযোগী হয়ে পড়ায় বেশ কিছুটা কুচোনো স্যালাড প্লাস্টিকের বদলে গিয়ে পড়ল সোজা রাস্তার ওপর ড্রেনের ধারটায়। তা সেই কর্মচারী মহাশয়ও নিজের কর্তা ও কাজের প্রতি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। তাকে দেখলাম এদিকওদিক তাকিয়ে আলগোছে সে সেই স্যালাডটা তুলে এনে মিশিয়ে ফেললো কেটে রাখা স্যালাডের সাথে। এবার আপনারাই বলুন, এসব দেখার পর আর কোনো খাদ্যরসিক বাঙালীর খাদ্যরস কি জাগবে?
আবার আরেক জায়গায় দেখলাম চাউ সেদ্ধ করার পর তা জল ঝরাতে রাখা হয়েছে এক নালার পাশে। মধ্য কলকাতার গলির ভিতরে এক দোকানে তো আবার আধ ভাজা চিকেন পকোড়া মেঝেতে পড়ে গেলে সেটা তুলে ঝুড়িতে রেখে দিতেও দেখেছি। তাই এসব দেখবার পর আর রাস্তার ধারের খাবার দেখে জিভে জল আসেনা। বরং যেমন ভাবে আমি স্ট্রিট ফুড আজকাল বাড়িতে বানানো শুরু করেছি তেমন আপনারাও শুরু করুন, ভালো খান, ভালো খাওয়ান আর সুস্থ থাকুন।
আপনাদের সাহায্য করতে আমি তো আছি। আজ তাহলে দুটো স্ট্রিট ফুড বানিয়ে ফেলা যাক একদম ঘরোয়া ভাবে কিন্তু দোকানের স্বাদে।
শুরু করা যাক সহজ কিছু দিয়ে, যেটা খাদ্যরসিক মানুষের রসনাকেও তৃপ্ত করবে আবার পকেট আর পরিশ্রম দুই-ই বাঁচাবে। তাই শুরুটা হোক আমাদের অতিপ্রিয় চিকেন ফ্রাই দিয়ে।
●চিকেন ফ্রাই বানাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ:
বোনলেস মুরগীর মাংস ২৫০ গ্রাম, কাঁচালঙ্কা বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ৩ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, ভিনিগার ১ টেবিল চামচ, ডিম ১ টা, সোডিয়াম বাইকার্বনেট ১/২ চা চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল চামচ, ময়দা ৪-৫ টেবিল চামচ, ভাঙা কর্নফ্লেক্স ১/২ কাপ, নুন ও চিনি স্বাদ অনুযায়ী, ভাজার জন্য সাদা তেল।
●চিকেন ফ্রাই বানানোর পদ্ধতি:
১. মাংসের টুকরো ভালো করে পরিষ্কার করে নিয়ে কর্নফ্লেক্স আর তেল বাদে বাকি সমস্ত উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে মাংস মেখে নিতে হবে এবং তা রেখে দিতে হবে ঘন্টা আধেক।
২. এবার কড়াইতে বেশ অনেকখানি তেল গরম করে নিতে হবে। এবার মিশ্রণ মাখানো মাংসের টুকরোগুলো একটা করে তুলে, গায়ে ভাঙা কর্নফ্লেক্স লাগিয়ে ডুবো তেলে ভেজে তুলে নিলেই তৈরি “চিকেন ফ্রাই”। সস আর স্যালাড সহযোগে সন্ধ্যের জলখাবারে কিন্তু জমে যাবে “চিকেন ফ্রাই”।
এবার আসা যাক দ্বিতীয় পদে। বর্তমানে জনপ্রিয় মোমো নামক খাবারটি পছন্দ করেন না এমন মানুষ কমই আছে আর খাবারটি যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর। তাই এই মোমো বাড়িতে বানালে কীভাবে বানাবেন সেটাই বরং জেনে নিন এবার।
●মোমো বানাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ:
মুরগীর মাংসের কিমা ২৫০ গ্রাম, কাঁচালঙ্কা বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, ভিনিগার ১/২ টেবিল চামচ, কুচোনো পেঁয়াজ ১/২ কাপ, কুচোনো রসুন ১ টেবিল চামচ, ডিম ১ টা, গোলমরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, ময়দা ১ কাপ, নুন ও চিনি স্বাদ অনুযায়ী।
●মোমো বানানোর পদ্ধতি:
১. আগে সামান্য নুন মিশিয়ে গরম জল দিয়ে ময়দা মেখে নিতে হবে।
২. এবার একটি পাত্রে কিমা সহ ময়দা বাদে বাকি সমস্ত উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
৩. এবার মেখে রাখা ময়দা থেকে ছোটো ছোটো অংশ কেটে তা লুচির মতো বেলে নিতে হবে।
৪. এবার ওই বেলে নেওয়া লুচির মাঝখানে কিছুটা মাংসের মিশ্রণ দিয়ে পুলির আকারে গড়ে নিতে হবে।
৫. এরপর স্টিম কুকারে ভাপে ১৫-২০ মিনিট ভাপিয়ে নিলেই তৈরি চিকেন মোমো।
যারা চিকেন খান না তারা ভাবছেন তারা কী করবেন? একদম সহজ ব্যাপার। শুধু মাংসের কিমার বদলে ব্যবহার করুন আপনার পছন্দের সবজি বা চিংড়িমাছ কুচোনো, ব্যস হয়ে গেল আপনার সেই সমস্যার সমাধান।
এবার তাহলে এই সহজ স্ট্রিট ফুডগুলো বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন আর লাল সিগনাল দেখিয়ে দিন দোকানের অস্বাস্থ্যকর খাবারকে। আমি আবারও ফিরবো আরও স্ট্রিট ফুডের হদিশ আর নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে, আর তার জন্য চোখ রাখতে হবে LaughaLaughi-তে। আর হ্যাঁ, চিকেন ফ্রাই আর মোমো কেমন খেলেন সেটা জানাতে ভুলবেন না যেন।
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
This website uses cookies.