আমি কোনো ফুড ব্লগার নয়। কিন্তু মনে প্রানে খাদ্যরসিক এবং জন্মগত বাঙালি। ইদানিংকালে, আমি পড়াশোনার জন্য(তথাকথিত পড়াশোনা) নিজস্ব বাস্তুভিটে ছেড়ে, শহরবাসীর ছদ্মবেশ নিয়েছি। বর্তমান সময়ে আমি ফ্ল্যাটবাড়িতে ভাড়া থাকি। আর যেটা সবচেয়ে বেশী চাপের বিষয়, তা হলো খাদ্য সন্ধান। তো, আমার মতো যারা ভিনশহরে এসে বাস করতে বাধ্য হয়েছেন( ব্যাচেলরদের কথা বলা হচ্ছে) তাদের সুবিধার্থে কিছু সহজ সরল উপায়, যাতে আপনার অন্তত দৈনিক খাদ্যচর্চায় ব্যাঘাত না ঘটে।
সকাল:
এই সকালের জোগাড়টা আগেরদিন বাড়ি ফেরার সময় করে নিন। ব্রেকফাস্টে লুচি আর আলুরদম তো রান্না করার সময় নেই। তাই কিছু টাটকা ফল কিনে আনুন আগের দিন। আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, বাড়ি ঢোকার সময় অন্তত একটি মুদি বা সবজির দোকান চোখে পড়বেই। আপনার ফল পছন্দের হলে কলা, আপেল, এসব কিনে আনতে পারেন। আর ছাতু খুব সাহায্য করে এক্ষেত্রে। দুটো ফল আর ছাতুর ঘোল যথেষ্ট দুপুর অব্দি শক্তি জোগানোর জন্য। আর সবচেয়ে ভালো ব্যাপার এতে কোনো পেটের রোগও হবে না।
দুপুর:
অনেকে রান্নার লোক রাখে, আবার দুপুরে অফিস থাকলে, মধ্যাহ্নভোজন বাইরেই করতে হয়। যেকোনো অফিস এর আশেপাশে হোটেল থাকে। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে সেখানে খাবারের দাম মাত্রাতিরিক্ত হয়। তাই লাঞ্চ করতে হবে সীমিত পর্যায়ে। ওইসব বার্গার, পিজ্জা না খেয়ে একটা ভালো ভাতের হোটেল খুঁজুন, নইলে একটা ধাবা। দুপুরে মাছ, ডিম কিংবা মাংস দিয়ে ভাত, ব্যাস! কম খরচে পেট ভর্তি। একেবারে নো ভ্যাকেন্সি। আর জাঙ্ক ফুড খাওয়াটা একটু কম করাটাই শ্রেয়।
রাত:
বাড়ি ফেরার সময়, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যাবেলায়, ওই ফল, সবজি কিনে নিন। অল্প করেই কিনুন যাতে একরাত কিংবা দুইরাতের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। আপনি যদি প্রকৃতই ভেতো হন, তবে ইন্ডাকশনে রান্না করতে জানতে হবে। কারণ রাতেরবেলায় মহানগরীতে ভাত পাওয়াটা একটু ডিফিকাল্ট। আপনি ইন্ডাকশনে আলু সেদ্ধ ভাত আর অমলেট করতে পারেন, তবে সবদিনের জন্য নয়। রাতে রুটি খাওয়াটায় শ্রেয়। যেকোনো হোটেল থেকে রুটি কিনুন। আর সাথে খাওয়ার জন্য তরকারি টা বাড়িতে রান্না করলে ভালো, তবে বাইরে থেকেও কিনতে পারেন। আর যদি রান্নার লোক থাকে আপনার কাছে, তবে তো কোনো কথাই নেই। যা ইচ্ছে করছে খান, তবু তেল ঝাল মশলা সীমিত রেখে। আর হ্যাঁ কথায় কথায় সুইগি আর জোমাটোর পা চাটতে যাবেন না। শহর টা একটু ঘুরে দেখুন, অনেক কমদামে, সেসবের চেয়ে ভালো খাবার পাওয়া যায়।
বি. দ্র. – সপ্তাহের শেষে বিরিয়ানির বিলাসিতা খুব একটা মন্দ নয়।