১। অভিনয় জগতের সাথে তোমার প্রথম আলাপ কবে কীভাবে হলো?
— আমার উচ্চ-মাধ্যমিকের সময় আমাকে স্টার থেকে কল্ করা হয়েছিলো অল্ ইন্ডিয়া অডিশন্-এর জন্যে, যেখান থেকে সাতজন মেয়েকে ওরা বেছে নেবে, সিরিয়ালের জন্য। আমি যাই, অডিশন্ দিই, এবং সেই সাতজনের মধ্যে আমি ছিলাম। এরপর দু’মাসের একটা ওয়র্কশপ্ শুরু হয় স্টারে। সেখান থেকে রাজ চক্রবর্তী আমাকে সিলেক্ট করে, ‘দুগ্গা দুগ্গা’ সিরিয়ালের জন্য।
২। ছোটবেলার স্মৃতি বলতেই সবার প্রথমে তোমার কী মনে পড়ে?
—স্কুলের নাচ। আমি ছোট থেকেই ক্ল্যাসিক্যাল নাচ শিখেছি। এছাড়াও রবীন্দ্র-নৃত্য। আমি সবসময়েই একটা সাংস্কৃতিক বাতাবরণে থাকতাম। আমার মা একজন নৃত্য-শিক্ষিকা ছিলেন। আমার সাড়ে তিন বছর বয়স থেকে আমি এগুলো দেখছি।
৩। তার মানে তুমি ছোট থেকেই পারিবারিক সহায়তা পেয়েছো?
—অবশ্যই! আমার চেয়ে আমার বাবা-মা বেশী আগ্রহী ছিলেন!
৪। অভিনয় ছাড়া তুমি আর কী কী করতে ভালোবাসো?
—নাচ তো আছেই, সাথে আমি লেখালিখি করতে ভালোবাসি।
৫। একটা কথা জানতে চাইবো তোমার কাছে, ইদানীং যারা, মডেলিং বলো বা অভিনয় বলো, গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রীতে কাজ করছে, খানিক খ্যাতি পেতে না পেতেই তাদের অনেকের মধ্যে একটা উন্নাসিকতা কাজ করছে। এই বিষয়ে তোমার কী বক্তব্য?
—দেখো, আমরা যারা অভিনেতা, তারা খুব খাটি, তবে একটা জায়গায় পৌঁছতে পারি। মডেলদের ৩/৪ ঘন্টার বেশী খাটতে হয়না। তাদের খ্যাতি বলো বা অর্থনৈতিক অবস্থা বলো, আমাদের চাইতে পরিপক্ব। ওদের প্রতিযোগিতাটাও বেশী। আমার মনে হয়, ওরা নিজেদের ইমেজটা বজায় রাখার জন্যে এমনটা করে। তবে, আদতে যে এতে তারা নিজেদের ইমেজ নষ্ট করে ফেলছে, এটা তারা বুঝতে পারে না। সত্যি কথা বলতে, তুমি নিজেকে যতদিন ধরে রাখতে পারবে, ততদিন সবাই তোমার! যেই তুমি নিজেকে হারিয়ে ফেলবে, সবাই তোমাকে হারিয়ে ফেলবে। সে অভিনয় হোক বা মডেলিং। তবে নিজেকে ধরে রাখতে গিয়ে, অন্য কারো ক্ষতি করা উচিত নয়। প্রতিযোগিতা তোমার নিজের সাথে।
৬। তুমি ‘অষ্টমী’ বলে একটা শর্টফিল্মে কাজ করছো, তার ব্যাপারে দু’চার কথা জানতে চাইবো তোমার থেকে।
— এটুকু বলতে পারি, যারা ‘অষ্টমী’ নিয়ে ভাবছে যে ‘এমন হবে, ওমন হবে’ তার একটাও হবে না। এটা একদম অন্যরকম একটা কাজ। সেটা একদম ফিল্মের শেষে বোঝা যাবে। ছবিটা ইউনিক!
৭। তোমাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, সমাজের কোন দিক বা কোন জিনিসটা পাল্টাতে চাও, তুমি কী বলবে?
—আমি সমাজের কোনো দিকই পরিবর্তন করতে চাই না। আমার মনে হয় মানুষের থেকে একটা অবলা প্রাণীকে সাহায্য করা উচিত! তারা অন্তত সেটা মনে রাখবে। মানুষ মনে রাখবে না। আর মানুষের চাহিদার কোনো শেষ নেই, তারা চাইতেই থাকবে। আমি মানুষকে বা বৃহদার্থে সমাজকে পাল্টাতে পারবো না।
৮। তোমার শ্যুট চলাকালীন যে কোনো একটা মজার মুহূর্ত আমাদের বলো।
—‘দুগ্গা দুগ্গা’র সময় রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আমি শ্যুট করছি, পরেরদিন আমার উচ্চ-মাধ্যমিকের রেজাল্ট! সিনটা ছিলো একটা কান্নার সিন। সেই সময় কান্নাটা আমার আসল বেরিয়েছিলো ভয়ের চোটে! ইন্ ফ্যাক্ট, রাজদা পরে প্রশ্ন করেছিলো, ‘তুই কি এটা অভিনয় করলি না সত্যি কাঁদলি?’
৯। তোমার পরবর্তী পরিকল্পনা কী?
—কোনো পরিকল্পনা নেই। আমি পরিকল্পনা করে চলতে ভালোবাসিনা কারণ পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে খুব কষ্ট হয়! আর আমি দেখেছি আমার প্ল্যানগুলো বেশী করে ভেস্তে যায়!
১০। যেসকল মানুষজন তোমাকে দেখছে, তাদেরকে কিছু বলো?
—আমি এটাই বলতে চাই, তারা আমাকে খুব সাপোর্ট করে, খুব ভালোবাসে। তাদের মধ্যে কোনো নেগেটিভিটি নেই! আমার তরফ থেকে তাদের সকলকে ধন্যবাদপূর্ণ ভালোবাসা।
১১। ‘LaughaLaughi’কে কী বলতে চাও তুমি?
—আমার নিজের কথা সবার সাথে শেয়ার করতে খুব ভালো লাগে, আমাকে ‘LaughaLaughi’ সেই সুযোগটা করে দিলো এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ। এটা সাক্ষাৎকারের চেয়েও বেশী একটা খোলামেলা আড্ডা হলো, ভালো লাগলো খুব।
ধন্যবাদ।
Journalist- Kolaj Sengupta.