লাফালাফি- সমস্ত ফিল্ম মেকারদের জীবনে একটা স্ট্রাগল থাকে। আপনার ( প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য ) জীবনে স্ট্রাগল পিরিয়ড নিয়ে যদি কিছু বলেন?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য- আমার জীবনে স্ট্রাগল চলতেই থাকে এবং এখনও চলছে। আমি স্ট্রাগলটা কে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখি। প্রত্যেকটা ছবি বানানোর পিছনেই একটা স্ট্রাগলের গল্প থাকে। সেক্ষেত্রে আলাদাভাবে স্ট্রাগল বলে কোনো পিরিয়ড আমার জীবনে নেই।
লাফালাফি- আপনার প্রথম কাজ সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য- ‘রূপকলা কেন্দ্র’ থেকে ফিল্ম এডিটিং নিয়ে পড়াশোনার দরুন বেশ কিছু শর্ট ফিল্ম করেছি, তবে সেগুলোকে অভিজ্ঞতা হিসেবেই আমি ধরি। প্রথম বড় কাজ সেইভাবে যদি বলতে হয় তাহলে ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’-এর কথাই বলতে পারি।
লাফালাফি- ফিল্ম মেকিং ছাড়াও আপনি ‘প্রভট্ট’- নামে বেশ কিছু অণুকবিতা লেখেন, এবং আজকাল অনেকেই লেখালেখি করেন ফেসবুকে, সেইসব লেখকদের ভবিষ্যৎ কি দেখছেন?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য- আমি আমার লেখালেখি নিয়ে এইটুকুই বলতে পারি, আগে আমার ডায়েরি ছিল, এখন ফেসবুক আসায় সেটাই ডায়েরির কাজ করে। লেখালেখি আমার কাছে মনের ভাব সম্প্রসারণের একটা জায়গা। লিখতে ভালো লাগে আর সেখান থেকেই লেখার সূত্রপাত। কিছু মানুষ চমৎকার লিখছেন যা মনে দাগ কাটার মত। তবে অসুবিধা একটাই যে, এতো লেখা হচ্ছে এখন ফেসবুকে যে ভালো কিছু লেখা কোথাও যেন হারিয়ে যায় ভিড়ের মধ্যে, আর ভালো দিক এটাই যে খুব সহজে মানুষের কাছে অনেক লেখা পৌঁছে যাচ্ছে এবং চমৎকার লেখক উঠে আসছেন সেখান থেকে।
লাফালাফি- প্রত্যেক ফিল্ম মেকারই একটা ফিল্ম বানানোর পর দর্শকদের কাছ থেকে কিছু এক্সপেক্টেশন রাখেন। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার দর্শকদের থেকে কি এক্সপেক্ট করেন?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য- আমার শুধু মাত্র একটাই চাহিদা যেন দর্শক সিনেমাটা দেখার পর সেটা সম্পর্কে নিজস্ব মতামত দেন। সেটা ভালো হোক কি খারাপ, আমি চাই যেন সিনেমাটা সম্পর্কে কথা হয়। সিনেমাটা আসলে আমার ধ্যান, জ্ঞান এবং বেঁচে থাকার রসদ। সেখানে দাঁড়িয়ে একটা সিনেমা বানালাম হয়তো, আর দর্শক শুধু মাত্র দেখে চলে গেলেন সেটা আমি চাইনা, ভালো বা খারাপ সেটা একান্ত নিজস্ব ধারণা কিন্তু সেগুলো যেন তারা বহিঃপ্রকাশ করেন এটুকুই বলতে পারি।
লাফালাফি- ব্যক্তিগতভাবে আপনি কি ধরণের সিনেমা দর্শকদের উপহার দিতে চান?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য- কি ধরণের সিনেমা সেভাবে বলতে পারবো না, আসলে সিনেমা আমার কাছে জীবন ধারণের একটা অংশ, কথাটা বাড়াবাড়ি হলেও এটাই সত্যি। আমার ব্যক্তিগত জীবনের সাথেও সিনেমাটা এতটাই ওতঃপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে যে সিনেমাটাকে আলাদা ভাবে দেখতে পারিনা। যেমন যেমন চিন্তাভাবনা আসে সেগুলোর ওপরই পরবর্তীকালে কাজ করতে চাই। তবে এই বিষয়ে একটা কথা বলতে চাই বাচ্চাদের নিয়ে আজকাল তেমন ছবি হয়না, তাদের জন্য পরবর্তীকালে খুব ইচ্ছে আছে কিছু করার। বাচ্চাদের নিয়ে পরবর্তীকালে মজার সিনেমা বানানোর ইচ্ছে আছে খুব।
লাফালাফি- আপনি যেহেতু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এ বেশ অ্যাক্টিভ থাকেন তাই একটা কারেন্ট টপিকের ওপর একটা প্রশ্ন করছি। এই যে ফেসবুকে এখন ইন্ডিয়া এবং পাকিস্তান নিয়ে ক্রিকেট কে কেন্দ্র করে যে জোরদার জল্পনা চলছে রাজনীতির মোড়কে, এই ব্যাপারটা কিভাবে দেখছেন?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য- আমি অনেকবার এই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলবো ভেবেছিলাম ফেসবুকে, কিন্তু কোনো কারণে হোক হয়ে ওঠেনি। ব্যাপারটা সত্যি খুব লজ্জার। খেলাটা খেলার মতোই দেখা উচিত। খেলা ঘিরে যে নোংরা রাজনীতি চলছে সেটা শুধুমাত্র খেলাটা কে এফেক্ট করছে। মাত্র গুটি কয়েক দেশ ক্রিকেট খেলে, উপমহাদেশে তিনটি কি চারটি দেশে খেলাটা জনপ্রিয়, তাই এই খেলাটাকে জিইয়ে রাখতে সব দেশকে একত্রিত হয়ে নোংরা রাজনীতিকে অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। শুধু তাই নয় দর্শকদের পাশে থাকতে হবে।
লাফালাফি- একদম নতুনদের জন্য কি টিপস্ দেবেন?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য- প্র্যাক্টিস করতে হবে। প্র্যাক্টিস টা চালিয়ে যেতে পারলে সাফল্য আসবেই।
লাফালাফি- যদি ‘লাফালাফি’ নিয়ে কিছু বলেন ?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য- তোমরা যে কাজটা করছো সত্যিই অনবদ্য। আরো এগিয়ে যাও, আর কাজটা থামিও না।
লাফালাফি- অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের জন্য সময় বের করেছেন তার জন্য। আপনার আগামী কাজের জন্য লাফালাফির তরফ থেকে আগাম শুভেচ্ছা থাকলো।