ফেলে আসা দিনগুলো

আজ থেকে বহুবছর পরেও যদি পঞ্চান্ন বছরের একজন মহিলাকে তার ফেলে আসা অপূর্ণ প্রেমের কথা জিজ্ঞাসা করা হয় হয়তো তিনি খুব হাসতে হাসতে সেদিন পুরোনো কিছু কথা বলবেন। সেদিন হয়তো ব্যর্থ প্রেমের জন্য তাঁর দুঃখবোধ নেই। তাঁর হাসির অর্থ কী এটা যে তিনি আজকের দিনগুলো ভুল এইজন্য হাসছেন? কিংবা নিজের মেয়েবেলার নিদ্রাহীন রাতগুলোকে হালকা করে দিচ্ছেন হেসে? কিংবা তাঁর কী মনে হয়, এইসব পাগলামিগুলো অর্থহীন বোকামো ছিল বলে তিনি হাসছেন? নাহঃ, মোটেই তা নয়। তিনি তাঁর অতীতের দিনগুলোতে ফিরে যাচ্ছেন তাই হাসছেন, তাঁর মেয়েবেলার টানাপোড়েন কিংবা কষ্টের মুহূর্তগুলো মনে পড়লেও সেটা তাঁরই জীবন তাই তিনি হাসছেন। আসলে সেখানে যত লড়াই লুকোনো থাকুকনা কেন সেটা তাঁর জীবনের সোনালী অতীত…  বর্ণময় এক একটা অধ্যায় যেগুলোর স্মৃতিচারণা করলে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটবেই। হাসতে হাসতে ঘটনাগুলো বলছেন মানে অল্পবয়সের লড়াইগুলোকে লঘু করে দিচ্ছেন, পিছনের জীবনে যা করেছেন ভুল করেছেন এমনটা নয়। কারণ, প্রতিটা বয়সের এক একটা স্বপ্ন থাকে, প্রতিটা সময়ের নির্দিষ্ট কিছু দাবি থাকে। অনেকটা এগিয়ে যাবার পরে পিছনে ফিরে তাকালে বোঝা যায় পুরোনোদিনের লড়াইটা মিথ্যে ছিলনা, সেইসময়ে দাঁড়িয়ে সেই লড়াইটা ভীষণ সত্যি ছিল। হয়তো কিছু পন্থা ভুল ছিল, কিছু জিনিস বুঝতে ভুল ছিল, কিছু কাজ না করলেও হতো… ব্যাস এইটুকুই ভুল। বাকি সবকিছুই ঠিক। 

আসলে সেদিনও সেই মহিলা পিছনে ঘুরে দেখবেন, চব্বিশ বছরের যুবতীবেলায় তিনি নিজে আজও কোনো পথের বাঁকে তাঁর প্রিয়তমর সাথে দাঁড়িয়ে আছেন, আর সময় সেখানেই থমকে গেছে… 

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *