মেয়ে কে এতো পড়াশোনা করিয়ে কী হবে?সেই তো বিয়ের পর রান্না করেই সংসার করতে হবে।(চায়ের কাপটা টেবিলে রাখতে রাখতে বললেন সালমা বেগম)
কেন মা এই কথা বলছেন?(রেহানা পারভীন )
না মেয়েদের বেশি পড়াশোনা করিয়ে কী হবে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে নিয়েছে অনেক আছে।ওইসব কলেজ পড়িয়ে কী হবে। তার থেকে ভালো মেয়ের জন্য ভালো পাত্র দেখে বিয়ে করিয়ে দাও। যেহেতু তোমার ছেলে সাহিল বেশি পড়াশোনা করেনি সুতরাং মেয়ে কে ও এতো পড়িয়ে লাভ নেই।( সালমা বেগম)
এটা তো ঠিক না।আমার মেয়ে যত দূর পড়াশোনা করতে চাইবে তত দূর পড়াবো তাকে।সঠিক সময় আসলে বিয়ের কথা ভাববো।আর রইল আপনার নাতির কথা সে নিজের ইচ্ছাতেই পড়াশোনা করেনি। সে করেনি বলে কী আমার মেয়ে ও পড়াশোনা করবে না তা তো আমি হতে দেবো না। পড়াশোনা করার দুজনেরই সমান অধিকার আছে।(রেহানা পারভীন)
বিয়ের পর কী আর চাকরি করতে পারবে। সংসার করতে হবে,তো এতো পড়াশোনা করিয়ে লাভ কী হবে। অফিস সামলানো কোনো সোজা কাজ নয়।(সালমা বেগম)
বিয়ের পর যে মেয়ে কে সংসার সামলাতে হবে এটা তো কোনো কথা না।চাইলে বিয়ের পর চাকরি করতে পারবে, কেন মা আপনি পাশের বাড়ির মিতা দিদি কে দেখুন উনি তো খুব সুন্দর করে বাড়ি আর অফিস একসাথে সামলান। মেয়েরা শুধু সংসার সামলাতে পারবে এটা ভুল ধারনা,মেয়েরা চাইলে বাড়ি অফিস দুটো একসাথেই সামলাতে পারবে।(রেহানা পারভীন)
তোমাদের আর কী বলব, আজকালের ছেলে মেয়েদের কোনো ঠিক নেই কখন কী করে বসবে তখন বুঝবে। এমনিতেই দিনকাল ভালো না।যাইহোক আমার বলার কাজ বাকি টা তোমাদের উপর নির্ভর করে।(সালমা বেগম উঠে নিজের রুমে চলে যান।)
বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে রেহানা পারভীনের,একলা বসে পুরো কথা ভাবতে থাকেন
অল্প বয়সেই আমার বিয়ে হয়েছিল,তাই বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারিনি। কিন্তু আমার ইচ্ছা ছিল আমার ছেলে মেয়ে যতো দূর পড়তে চাইবে পড়াবো কিন্তু আমার ছেলে পড়াশোনা করলো না। অনেক বুঝিয়ে ছিলাম আমি আর তার বাবা কিন্তু সে শুনলো না।আমার মেয়ে পড়াশোনায় অনেক ভালো তাই আমি আর তার বাবা নিয়েছিয় এখন তার বিয়ে দেবো না আগে পড়াশোনা করে একটা ভালো চাকরি পেয়ে যাক তারপর বিয়ের ব্যাপারে ভাবা যাবে।
আমি বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারিনি তো কী হয়েছে আমার মেয়ে আমার স্বপ্ন পূরণ করবে।
ছবি:- সংগৃহীত