কতই বা বয়স লিপিকার। অল্প বয়সেই তার উপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে। বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। চার ভাইবোনের মধ্যে লিপিকাই বড়ো। সে পড়াশোনায় এবং তার গানের গলা খুব ভালো। স্কুলের দিদিমণি মাস্টারমশাইরা বলতেন এই মেয়ে একদিন অনেকদূর যেতে পারবে। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস বাবা মারা যাওয়ার কিছুদিন পরেই মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে তখন পুরো পরিবারটির দায়িত্ব লিপিকার উপর।
অতটুকু বাচ্চা মেয়ে কি বা করতে পারে তবুও একটা বাড়িতে কাজ করতে শুরু করে সে। তাতে যা উপার্জন হয় কোনো রকমে চলে যায়। একদিকে ভাইবোনের মুখে খাবার তুলে দেওয়া অপরদিকে মায়ের ঔষধের টাকা। লিপিকা তাই আরো কয়েকটা বাড়িতে কাজ করতে শুরু করে। ঘোষ বাড়ির গিন্নি লিপিকাকে খুব ভালোবাসে তার মেয়েও লিপিকার বয়সি সে গান শেখে। যখন তাকে গান শেখানো হয় তখন লিপিকা পাশে দাঁড়িয়ে থাকে।
একদিন ঘোষ গিন্নি তা দেখতে পেয়ে লিপিকাকে বললো, তুই গান শিখবি? লিপিকা বললো শিখবো কিন্তু আমার তো টাকা নেই। তখন ঘোষ গিন্নি দিদিমনিকে বললো আজ থেকে ওকেও গান শেখাও। সেদিন থেকেই লিপিকার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করলো। আজ লিপিকা একজন বড়ো গায়িকা সে তার মায়ের চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তুলেছে, ভাই বোনকে পড়াশুনা করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে পেরেছে।