সখা কে খোলা চিঠি দিলাম আজ,
সখা, আজ প্রথম মনে হচ্ছে চিঠিটা তোকে লেখা দরকার। আসলে কোনোদিন বলা হয়ে ওঠেনি, তোর আমার সম্পর্কটা এভাবে। তাই ভাবলাম চিঠিটা লিখেই ফেলি।
নার্সারির প্রথম দিন মনে নেই। তবে খিচুড়ি স্কুলের কথা মনে আছে। আমরা পাশে বসে স্লেটে লিখতাম। আমি বরাবরের দুরন্ত তবে তুই বরাবরের শান্ত। তাই প্রথম থেকেই আমাদের জমত।
সখা মনে আছে তোকে কত জ্বালাতন করতাম আমি? আমার নাসিকা থেকে বাহিত সর্দি তোর গায়ে মুছতাম বা স্লেটে লেপটে দিতাম। এখন ভাবলে হাসি পায়,
হাসতে হাসতে চোখে জল আসে।
তোর মনে আছে, সেই সবাই ভাবত আমরা দু বোন?! নামের ছন্দের মিল ছিল, আর ছিল অগাধ বন্ধুত্ব। মনে আছে সখা?
সখা তুই কিন্তু তারপর হাইস্কুলে এসে ভুলেই গেছিলি। কী জানি বা আমিই ঠিক বুঝতে ভুল করেছি। কোনোদিনও এক সেকশনে না পড়ার দুঃখ বুকে বাজত। কিন্তু এখন মনে হয়, যা হয় ভালোই হয়। স্কুলের ছুটির পর তোর সাথে ফিরব বলে দুরু দুরু বুকে অপেক্ষা করতাম, মনে পড়ে সখা?
ক্লাস নাইনের ক বিভাগ ছিল গ বিভাগের থেকে অনেক দূরে। তাই আমাকে বেশি দাঁড়াতে হত। কতবার ছুটির ঘন্টা বাজার পর ভেবেছি, বেশ আমাদের সেকশন গুলো একজায়গাতে হত।
মনে পড়ে? ক্লাস টেন থেকেই বিচ্ছেদটা শুরু হয়েছিল। নাম কে ওয়াস্তে ফিরতাম তখন তোর সাথে। অথচ এই আমিই একটা টাইম তোর আমার সাথে আর কেউ ফিরলে রাগ করতাম।
তারপর তো পুরোপুরি বিচ্ছেদ ঘটে গেল। আমার স্কুল পরিবর্তন। আর আমাদের মাঝে লম্বা দেওয়াল। তার উপর কো-এড স্কুলে প্রথমবার পড়ার অভিজ্ঞতাটা যেন আমায় আষ্টেপৃষ্টে বেঁধেছিল।
সখা, মিলন যদিও হল বাংলা কোচিং এ, তাও আমার নতুন প্রেমের মাঝে তোর আমার বন্ধুত্ব কোথাও যেন ফিকে হয়ে গেছিল।
তারপর তো একটা টাইম মুখ দেখাদেখি বন্ধ। মনে আছে সখা?
হঠাৎ করে এই ইতিটা বোধকরি দরকার ছিল। না হলে আবার তোকে পেতুম কিভাবে বল সখা?
এখন যেন আরও নতুন করে পেয়েছি তোকে,
” নতুন করে পাব বলে তোমায় হারাই ক্ষণে ক্ষণে”
এই কথাটি মিলেছে। তোর সাথে বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়েছে।
বেস্টফ্রেন্ড তো শুধু একটা শব্দ তোর আমার সম্পর্ক তো জনম জনম কা। হাহাহা, জানি বরাবরের ফিল্মি আমি।
সখা, এই সম্পর্ক এবার আরও মজবুত হয়েছে, শুধু বলব,
আছি তোর পাশে আছি আমি।
চিরটা কাল।
( তাই তোর জন্মদিনে সবথেকে বাজে কিম্ভূত ছবিটা আপলোড করার অধিকার শুধু আমার)
– ষোলো বছরের বন্ধুত্বের দাবিদার তোর একমাত্র ফিল্মি সখা।
সখা কে খোলা চিঠি দিলাম আজ, সখা আজ..
Facebook Comments Box