॥ হিয়ার মাঝে ॥
পর্ব- ১
— তাহলে কাল ভোর ৭-টা ফাইনাল কিন্তু !
এই যে মহাশয়-মহাশয়াগণ করজোড়ে বিনতি করছি দয়া করিয়া ৭-টার বেশি লেট করিবেন না!
একরাশে কথাগুলো বলেই সবার মুখের দিকে তাকিয়ে হো হো করে হেসে উঠল সুজয়।
সুজয়রা সবাই সবে সবে কলেজে উঠেছে। সাবালকত্বের দরজাটা সবেমাত্র পার করেছে। সুজয় বোটানি ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট। ডিপার্টমেন্টে গাদাগুচ্ছের স্টুডেন্ট থাকলেও সখ্যতা বা চলতি ভাষায় ইয়ারির সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ৪ জনের সঙ্গে। হিয়া, আরশি, অগ্নিভ, প্রসূন,
সুজয়— এই হল ওদের গ্রুপ।ডিপার্টমেন্টের বাকি সবার কাছে কিন্তু ওদের গ্রুপটা মিস্টিরিয়াস গ্রুপ বলে পরিচিত কারণ ওরা কখন কী প্ল্যান করে সবটাই বোঝা বেশ সমস্যার!
পিকনিকটা ডিপার্টমেন্টের সবার উৎসাহেই আয়োজন করা হয়েছে। সুজয়রা অবশ্য একটু বেশি উৎফুল্ল পিকনিকটা নিয়ে কারণ হই-হুল্লোর প্রেমী মানুষ হলে যা হয় আর কি!
অবশেষে সব তোড়জোড় আয়োজনের সমাপ্তি ঘটিয়ে পিকনিকের দিনটা এসে হাজির হল। পিকনিক স্পটটা বিশাল বড় না হলেও আনন্দ করার জন্য যথেষ্ট ছিল। তাছাড়া সদ্য সাবালকত্বের ছাড়পত্র পাওয়া ছেলেমেয়েরা অর্থাৎ ফার্স্ট ইয়ারের ব্যাচ বন্ধুদের সঙ্গে এতদূরে এক নির্ভেজাল আনন্দ করতে আসার উপলক্ষ্য পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই যারপরনাই খুশি। লোকে বলে থাকে এই বয়সটা নাকি ওড়ার বয়স, এমন একটা বয়স যেখান থেকে জীবন যেকোনো দিকে মোড় নিতে পারে। এইসব তাত্ত্বিক কথা অবশ্য রাশভারী মানুষের মুখেই মানায়। হিয়া আর আরশির আজ সত্যি সত্যিই উড়তে ইচ্ছে করছিল, এক অদ্ভুত ছেলেমানুষি ওদের মধ্যে ভর করেছিল। সুজয়রা ৩ জনও অবশ্য কম যায় না! ৫ জনের মধ্যেই এক অদম্য আনন্দ ঘিরে ধরেছিল।
*************************
— ফার্স্ট ইয়ার, সেকেন্ড ইয়ার; সব কই গেলি? সব জলদি এদিকে আয় দেখি। পেটপুজো তো শেষ। তো আপাতত আমরা কিছু গেমস খেলব। আর সবাইকে খেলতে হবে কিন্তু!
থার্ড ইয়ারের রিনি, ফার্স্ট ইয়ার আর সেকেন্ড ইয়ারকে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ইয়ারের এদিক ওদিক ছড়িয়ে থাকা ব্যাচমেটদেরও হেঁকে-ডেকে টেনে আনল।