কি গো এখনো ঘুমাওনি? পা টিপে দিতে দিতে কল্পনা তার স্বামী সন্তোষকে বললো। সন্তোষ বলল, না ঘুম আসছে না। জানো তো কল্পনা, একেক সময় আমার খুব কষ্ট হয়, মা তোমাকে সারাদিন কত পরিশ্রম করায়, তার পরও তুমি আমার পা টিপে দিয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়লে তবেই তুমি ঘুমাও। তোমাকে কতবার বারণ করেছি, আমাকে সেবা করার দরকার নেই, তবুও তুমি কথা শোনা না। আমার মাঝে মাঝে নিজেকে কাপুরুষ মনে হয়, আমি তোমার স্বামী হয়েও, মায়ের অত্যাচারের হাত থেকে তোমাকে বাঁচাতে পারছি না। আমি একবার প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলাম কিন্তু মা এমন আচরণ করলো, আমি চুপ হয়ে গেলাম।
তুমি তো জানো আমি আমার মায়ের একমাত্র সন্তান, আমার আরেকটা ভাই ছিল সে এগারো বছর বয়সে মারা গেছে। তারপর থেকেই আমি কোনদিন মায়ের অবাধ্য হয়নি। ভয় হয় মা যদি কিছু করে বসে। তুমি আরেকটু ধৈর্য্য ধর দেখবে পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের একটা সন্তান হলেই মা পাল্টে যাবে। কল্পনা চোখের জল মুছে বললো, তুমি চিন্তা করো না, আমার এখন আর আগের মতো কষ্ট হয় না সহ্য হয়ে গেছে। তুমি এখন ঘুমাও তো, আমাকে আবার কাল সকালে উঠে কাজ করতে হবে। সন্তোষ ঘুমিয়ে পড়ল।
কল্পনা সন্তান সম্ভবা, শ্বাশুড়ী একটু হলেও খুশি হয়েছে সেই খবর শুনে। তারপর একদিন কল্পনা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিল। মেয়ে হয়েছে শুনেই শ্বাশুড়ী তো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। কেননা তার ইচ্ছে ছিল তার সংসারে একটা নাতি আসুক। যাইহোক মেয়েটি দেখতে খুব কিউট হয়েছে। মেয়ে হলেও সন্তোষ কিন্তু খুব খুশি।
মেয়েটির নাম রাখা হল রিতা। দেখতে দেখতে রিতা একটু বড় হলো। সে বুঝতে পারে তার মাকে ঠাম্মি সারাদিন খাটায়। সে মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করতে গেলে ঠাম্মি তার গাল ধরে টেনে বলে, “এতই যখন মায়ের জন্য দরদ উঠলে উঠছে, তখন মায়ের সাথে নিজেও কাজ করো।” সত্যি সত্যি রিতা তার মায়ের সাথে কাজ করতে শুরু করে। কল্পনা তখন মেয়েকে বলে “না রে মা তুই ছোট বাচ্চা এসব কাজ করা তোর কাজ নয়, তুই এখন মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা কর।” তবুও রিতা মাঝে মাঝেই ছোটখাটো কাজ করতো। সেটা দেখে সন্তোষ আরো কষ্ট পেত।রিতার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন কল্পনা একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়।
কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস দেখুন, কল্পনা সন্তান সম্ভবা থাকা কালীনই সন্তোষ ভীষণ অসুস্থ হয়। এমন অবস্থা হয়েছিল, সে বাঁচবে কি না সন্দেহ ছিল। একদিকে স্বামী হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে, অন্যদিকে বাড়িতে কল্পনার প্রসব ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে। তখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার লোকও ছিল না বাড়িতে। শেষে পাড়ার লোকে কল্পনাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসে। দুই জন দুই হাসপাতালে থাকাতে কল্পনার শ্বাশুড়ী কল্পনাকে দেখতে যেতে পারেনি। নাতি হয়েছে এই খবর পেয়েও এই পরিস্থিতে সে খুশি হতে পারল না।
এটাও পড়তে পারেন: পাড়াগ্রামের মেয়ে কল্পনা (প্রথম পর্ব)
সন্তোষ অনেকদিনই শয্যাসায়ী ছিল। এদিকে ছোট ছোট দুই সন্তান, অসুস্থ স্বামী, বাড়ির সমস্ত কাজ এসব কিছু সামাল দিতে কল্পনা হিমসিম খেয়ে যাচ্ছিল। যদিও সন্তোষের মাও করত। কল্পনা খুব যত্ন সহকারে তার সমস্ত কাজ করতো। অনেকদিন পর সন্তোষ কিছুটা সুস্থ হয়েই স্কুলে যেতে শুরু করে।
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
This website uses cookies.