আমার আর রুহির পরিচয় কলেজ থেকে। প্রথম দেখাতেই আমার তাকে ভালোলেগে ছিল। দিন দিন আমার সাথে বন্ধুত্ব টা ও বেশ ভালো হয়ে ছিল। খুব সুন্দর গিটার বাজাতে পারতো সে,কলেজের অনেক প্রোগ্রামে সে গিটার বাজাতো আর আমি গান গাইতাম। ক্লাস শেষে কেন্টিনে বসে অনেক গল্প করতো আমার সাথে। একদিন সাহস করে তাকে মনের কথা জানিয়ে দিলাম, ভেবেছিলাম গালে চড় পড়বে কিন্তু না, সে আমার প্রস্তাব গ্রহন করেছিল।
সেদিন আমার থেকে খুশি হয়তো আর কেউ ছিলো না।দিন যত যেতে লাগল ততই আমাদের ভালোবাসা গভীর হতে লাগলো।
চাকরির জন্য যখন আমাকে বাইরে যেতে হয়ে ছিলো,তখন অনেক কান্নাকাটি করে ছিলো সে। কাজের চাপের জন্য তাঁকে আর বেশি সময় দিতে পারতাম না তার অবশ্য খারাপ লাগতো কিন্তু কিছু বলতো না।যখন ছুটি পেতাম বাড়ি যাওয়ার আগে ওর সাথে দেখা করতে যেতাম আর সঙ্গে তার প্রিয় নীল রঙের চুড়ি এবং বেলি ফুলের মালা তার জন্য নিয়ে যেতাম।আমাকে দেখেই রুহি খুশি হয়ে যেতো।
তার থেকে দূরে থাকতাম বলে অনেক ভয় করতো যদি তাকে হারিয়ে ফেলি কিন্তু না সে আমার উপর বিশ্বাস করতো অনেক তাই তো আমার অপেক্ষায় থাকতো।
একদিন হঠাৎ করেই আমাকে ফোন করে বলে বাড়ি থেকে তার বিয়ের জন্য অনেক চাপ দিচ্ছে। আমি তার পরের দিনই বাড়ি আসি এবং প্রস্তাব পাঠাই তার বাড়িতে। আল্লাহ্ র রহমতে তারা বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যান। দু’মাস পর আমাদের বিয়ে হয়। দেখতে দেখতে আমাদের বিয়ের আজ ১০ বছর হয়ে গেলো।
কী ভাবছো সেই তখন থেকে? (রুহি)
রুহির কথা ইমরানের ধ্যান ভাঙ্গে। রুহির দিকে তাকিয়ে উত্তর দায়
না কিছু না, শোনো আমার অফিস ব্যাগটা নিয়ে আসো তো। (ইমরান)
আচ্ছা, বলে রুহি ব্যাগটা নিয়ে এসে ইমরানের হাতে দায়।
রুহি আজ কি আছে তোমার মনে নেই? (ইমরান)
না আজ আবার কি আছে? (রুহি এসে ইমরানের পাশে বসে)
মনে করে দেখো আজ কী আছে। (ইমরান)
আমার মনে আসছে না,আমি গেলাম ঘুমাতে অনেক ক্লান্ত আছি। (রুহি)
আচ্ছা ঘুমা একটু পর এক মিনিট ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে পাক্কা ১২ টা বাজে। রুহির দিকে তাকিয়ে উত্তর দায়
হ্যাপি অ্যানিভার্স্যারি। (ইমরান রুহির হাতে তার পছন্দের বেলি ফুলের মালা আর চুড়ি দিয়ে বলে)
রুহি অবাক হয়ে যায়, কাজের চক্করে আজকের দিনটা কী করে সে ভুলতে পারলো। রুহি ইমরানের দিকে মন খারাপ করে বলে
সরি আমি একদমই ভুলে গেছিলাম আজকের দিনটার কথা। (রুহি)
ধূর পাগলি মেয়ে সরি কেন বলছো। আচ্ছা এইসব কথা বাদ দাও তোমার জন্য বেলি ফুলের মালা এনেছি কত দিন পর দাও তোমাকে পরিয়ে দি আমি। (ইমরান বেলি ফুলের মালা পরিয়ে ,চুড়ি গুলো পরিয়ে দায় রুহির হাতে।)
কি করে দশ বছর হয়ে গেলো আমাদের বিয়ের বুঝতেই পারলাম না বলো। (রুহি)
হ্যাঁ, দিন কত তাড়াতাড়ি পার হয়ে যায়।
রুহি! (ইমরান)
হুম বলো। (রুহি ইমরানের দিকে তাকায়)
ভালোবাসি অনেক তোমাকে। (ইমরান)
আমি ও অনেক ভালোবাসি তোমাকে।
মুচকি হেসে রুহি ইমরান কে জরিয়ে ধরে।
ছবি:- সংগৃহীত