চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণ, হাসছে দেখো রূপক হাসি
বন্দিঘরের হিসেব নিকেশ পাল্টে গেছে রাশি রাশি।
মাথার ওপর মুক্ত আকাশ, বাকিসব জলঘোলা।
লকডাউনে বন্দি নিশ্বাস, মানুষ যখন পথভোলা।
হারিয়ে গেছে যুক্তি, তর্ক, চায়ের ঠেকের আড্ডাবাজি
চার দেওয়ালের বন্দি জীবন চিড়িয়াখানায় গররাজি!
মনের বিরুদ্ধে ইচ্ছে পুষে মানুষের যখন দু’পা বাঁধা ,
ভাইরাস নামক আতঙ্কে সহজ জীবন জটিল ধাঁধা!
কেউবা লেখে কেউবা আঁকে বদ্ধঘরের রোজনামচা
ঘুচিয়েছে বিভেদ,ভেঙেচে প্রাচীর, মনুষ্যত্বের বন্ধ খাঁচা!
মানুষে মানুষে প্রাচীর ফেলে হিংসা হানাহানির ঈর্ষার সমন্বয়
সবকিছু আজ যেন ভিত্তিহীন, মনুষ্যত্বের নিদারুন গাঢ় ক্ষয়!
যেটুকু বাঁচা ঐকিকে হিসেব আর পাঁচজনের ও ভালো।
ভালোবাসা বিলিয়ে দিলেও আলোর চোটে ঘুচবে কালো!
বোঝাতে হলে ক্ষমা করো আমায়, বিদূষক হেসে পার পায়
সময় স্রোতে টেনে হিঁচড়ে বাস্তবায়নের সূত্রে খুঁজে পায়,
জীবন নামক এক অসীমের সীমা।
চিড়িয়াখানার বন্দি, মিনিটে ৭২ বারের একটা স্থিতিশীলতা মাত্র!
তবে তুমি ক্ষমা করো ধরিত্রী, এ আপামর বিশ্ববাসীর বন্দনা।
অবহেলে তোমায় দূরে ফেলে করবো না আর যৎসামান্য ও ভৎসনা!
হেরেছে অন্ধবিশ্বাস, বুজরুকি, ভন্ডামি সব ষোলোআনা।প্রাণ বাঁচাতে অবহেলিত একলা বিজ্ঞান দিয়েছে হানা।
তবুও মানুষ ধর্মে ধর্মে লড়েছে তরবারির মতো,
এদেশ চিড়িয়াখানায় আটকেও হয়েছে রক্তস্নাত!
হিন্দু মুসলিম শিখ খ্রিস্টান রক্ত সবার লাল
তবুও লড়ছে তারা, ধর্ম তাদের রক্ষাকারী ঢাল!
নতুন ভোরের আশায় দিন গুনেছে একশো কোটির দেশ ।
মুক্তি পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে, তবু ভোলেনি বিদ্বেষ।
এদেশে রাজনীতির মতো জটিল কিছুই হয় না।
তাইতো গরীব মানুষের পেটের খিদেও সয় না।
মায়ের কোলে দুধের শিশু, তবুও মা হাঁটছে
চিড়িয়াখানার মানুষ ব্যলকনি থেকে দেখছে!
একদিন সবুজে সকাল মিশে যাবে, জয় হবে নিশ্চয়।
বন্দিঘরের স্মৃতিরা সব গল্প হবে, রয়ে যাবে অক্ষয়।
ভাইরাস ঝড় মিটে গেলে প্রাণ পাবে মিইয়ে পড়া শহর,
ততদিন বন্দিঘরে গুনতে হবে অপেক্ষার কয়েক প্রহর!
চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণ আর ঘরবন্দি শুকনো ঘ্রাণে
বদলে গেছে সমীকরণ, অজানা সুরের সহজ গানে!
শেষমেশ বদলাবে পৃথিবী, বদলে যাবে মানুষ।
প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম একমাত্র প্রকৃতি, নিরঙ্কুশ!
একদিন থেমে যাবে সব, সেরে যাবে ব্যধি
সেদিন একটাই কথা বলবো-
প্রকৃতি তুমি থেকো শান্ত সবুজের পবিত্র ভূমি
এ দেহ দিয়ে লিখে দেব প্রেমিকার নামে তুমি!