চোখের জল এর দাম যদি দিতে হয়,
তাহলে বোধকরি তোমাকে অর্ধশতাব্দী অপেক্ষা করতে হবে।
না গো, এ আমার ভালোবাসা নয়, এ আমার অভিমান।
আমার আমির যদি এতটাই ফেলনা…তবে আজ আর আমায় ডেকো না।
জান সেদিন যখন জুঁইফুলটা খোঁপাতে গুঁজছিলে,
মনে হচ্ছিল জিজ্ঞেস করি চোখের দিকে তাকিয়ে,
ভালোবাস যদি, চোখের জলটা দেখতে পাও না কেন?
তোমার শেষ পাওনা বলতে,
একটা চিঠি আর শুকনো গোলাপ।
জল যদিও বা মরে যায়,
বুকের মাঝে তা আগলে রাখি,
বুকটা ধুকধুক করে যেন।
নির্ভয়ে দিনের আশায়, যদি মনের কথা মনেই থাকে তবে এটা পড়ুন, সবকটা না বলা কথার জন্য…
সেদিন মেজকাকি থুতনির কাছটা চুমু দিয়ে বলল,
“মেয়ে যেন মা লক্ষী, ও পারুলের মা এবার বিয়েটা দিয়েই দাও…”
মা হেসে চোখ সরিয়ে নিয়েছিল,
জলটা নইলে উথলে পড়ত।
এ কপালে আর বিয়ে নেই গো, পোড়াকপাল আমার।
চোখের জল শুকোবে না।
জানি… যেদিন শেষ দেখেছিলাম তোমায়, বিশ্বাস কর বুকটা তখনও ধুকধুক করছিল।
তারপর আবার অর্ধশতাব্দী পর তোমার স্পর্শ পেলাম,
মনে হল এ যেন শেষ পাওয়া।
সেবার বুকে মাথা রেখে বলেছিলাম,
“চল না বিয়ে করি”
হেসে থুতনি ধরে তুমি বলেছিলে,
“এই তো শেষ যাওয়া, এবারে সব বন্দোবস্ত করে রাখব। বাবা মাকে বলে দিয়েছি।”
নিশ্চিত ঘুম আর শান্তি চোখের জল বিঘ্নিত করেনি।
দেহটা এসে পৌছানোর পর, আমি আর ওদিকে যাইনি,
তাতে মুখ বেঁকিয়ে সবাই কত কিছু বলল,
আমার কানে শুধু তোমারই আওয়াজ,
“দেখ, এই কথা দিলাম, এইবার এক হব।”
চোখের জল আজও শোকায়নি,
শুধু বলব, মাতৃভূমির ভালোবাসাতে আমার ভালোবাসা বিলীন হয়ে গেছে, মাটিতেই না হয় প্রাণটা থাকুক।
এ বোধ করি আত্মহননকারী এক চিন্তা,
না সেটা না।
দীপ্ত আঁখিতে আবার উঠে দাঁড়াব আমি, তোমায় আবার পাব ধরিত্রীকে দিয়ে।
ভালোবাসাটা থাকুক, আর অভিমানটাও,
শুধু বলব শক্তি দিও আর চোখের জল যদিবা নাই আর পড়ে,
তাহলে বুঝে নিও মন শক্ত করে আমিও উঠে দাঁড়িয়েছি…
…মাতৃভূমির তরে।
তবে চললাম আমি মাতৃভূমির সেবার তরে,
পিছনে শুধু রেখে গেলাম, স্মৃতিটুকু, যেখানে, তোমার বুকে মাথা রেখে শেষবার পরম আরামের নিঃশ্বাস ফেলেছিলাম।
চোখের জলের দাম যদি দিতে হয়,
তবে সত্যি তোমায় নিয়ে গর্ব করব আমি…আমরণ।