আকাশের অসীম বিস্তারের দিকে তাকিয়ে কতবার ভেবেছি তোমার কাছে ফিরবো । গল্পের মতো টানটান উত্তেজনার ভিড়ে তোমায় বুকে জাপটে ধরবো সমাজের চোখে চোখ রেখে। কিংবা কলেজ ফেরত নীল চুড়িদারের প্রেমে পড়ার কবিতাকে উপহার দিয়ে আর একবার ক্ষমা চেয়ে নেব তোমার সম্মুখীন, এক সমুদ্র সাহস আর ভরসার আহ্লাদে।
তারপরও এ বুকের শুকনো উপকূলীয় জমিতে হাসিমুখে ফিরে এসে তুমি আর একবার শুধু বলবে না ‘ছেড়ে যাবো বলেই কি সাহস করে আগলে রেখেছি’ ?
সেদিন তুমুল বৃষ্টি। এসব ভাবতে ভাবতে তোমায় নিয়ে লেখা কবিতার খাতা ভুলে এসেছি চায়ের ঠেকে। হারিয়ে যাওয়া খাতা আর ফিরে পাইনি। তারপর তোমায় পাওয়ার জন্য একগুঁয়ে হয়ে বসে আছে কলম। না, আর দু শব্দ ও লিখতে পারিনি, শুধু বারবার মনে হয়েছে, ফিরবো বলা যতটা সহজ ফিরে যাওয়াটা ঠিক ততটাই কঠিন।
একদিন বিকেলে রামধনু দেখে মনে পড়েছিল সেই পাহাড়ের কথা। যে পাহাড়ে ভালোবাসার রঙ ছিল, যাতায়াতের পথ জুড়ে ঢেলে সাজানো ছিল একের পর এক গল্প। তুমি সবকিছু ওই পাহাড়কে দিয়েছিলে নিঃসন্দেহে। জানিনা কি দুঃসাহসে পাহাড় আজ ভেঙে পড়েছে তোমার এই ভরসার দু কাঁধে। যার কাছে তুমি ক্লান্তি ঘুমে মাথা রেখে কত তারাদের দেখেছ আর রাতজাগা প্রেমময় স্বপ্নের কথা বলেছ।
তবে এ প্রেম পূর্ণতা পেল না কেন?
আজকাল তোমার ছেড়ে যাওয়া , আমার খামখেয়ালিপনার চেয়েও দোষী মনে হয় সময়কে। সযয়ের মতো শিক্ষা দিতে পারেনা কেউই। সময়ের সাথে সাথে আমরা সব শিখে নিই। বলতে গেলে সময় বাধ্য করে শেখাতে। এই যেমন তোমায় ছাড়াও গঙ্গার ধার, গল্পের বই, কিংবা বৃষ্টি ভেজা সোঁদা মাটির গন্ধের প্রতি ভালোবাসাটা সেই একই আছে। বরং মুখভার হয়েছে তুমি আমির দূরত্বটাতে। দূরত্ব কি শুধুই কিলোমিটারে হয়? কখনো কখনো দুটো মনের দূরত্ব আলোকবর্ষকেও ছাপিয়ে যায়।
প্রেম বিরহ নিয়ে ভাবতে ভাবতে যখন স্বপ্নের মধ্যে তোমায় দেখি, তখন আশকারা পেয়ে মনখারাপি সিগারেটে ডুব দিই। পুড়তে পুড়তে একসময় সিগারেট শেষ হয়, তবুও হৃদয়ে যেন পুড়তেই থাকে। ক্ষতের দাগে তুমি লেগে থাক আর স্বপ্ন দেখাও ফিরবো বলে! স্বপ্ন ভাঙলে আবার পাথুরে বুকের ওপর লিখে দাও, ‘ফিরবো বলাটা যতটা সহজ, ফেরাটা ঠিক ততটাই কঠিন।’
আমি আবারো বিস্তৃত অসীম আকাশের দিকে একমনে তাকিয়ে ভাবি,
‘ এত বড় আকাশটা সবার মাথার ছাদ হয়ে আছে, অথচ মানুষ তবুও নিজেকে একা মনে করে!’