— বাইরে কি তুমুল ঝড় আর তুমুল হাওয়ার ঘনঘটা উঠেছে তাই না?
— আর সাথে বৃষ্টি, খুব ভিজতে ইচ্ছে করছে রে! ভিজবি আমার সাথে?
— জানিস, ওই যে মন ব্যাজার করা একরাশ কালো মেঘের মিশেল, স্থির আকাশের কোল থেকে উত্তাল বাতাস বয়ে নিয়ে যখন সহসাই মাটিতে নেমে আসে, তখন গলা ছেড়ে গাইতে ইচ্ছে করে,
“শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা…”
— তুইও যেমন! বৃষ্টি পড়লেই তোর আবার কবিত্ব জেগে ওঠে! ওরে, আজকালকার জেনেরেশন বৃষ্টি মানেই রোমান্স বোঝে, আর কানে হেডফোন লাগিয়ে তথাকথিত ‘বারিষ’ গান শুনতেই তারা অভ্যস্ত। তোর এসব ফালতু কবিত্বের কোন মূল্য তুই পাবি না।
— ওই যে তুই বললি না, বৃষ্টি মানেই রোমান্স, তুই কি ভাবিস, আমি রোমান্টিক নই? যখন প্রখর রোদের অবসান ঘটে প্রথম বৃষ্টির ফোঁটাটা নেমে আসে, আর মেঘের গর্জনে গোটা আকাশ কেঁপে ওঠে, তখন আমি আবার নতুন করে ওই বৃষ্টির রিনিঝিনি শব্দের প্রেমে পড়ি। প্রকৃতিকে ভালোবাসা রোমান্টিসিজম নয়?
— কই, তোর মত করে তো এত গুছিয়ে আমি ভাবতে পারি না! তবে তোর সাথে মিশতে মিশতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি ইন্টারেস্টটা বেশ রপ্ত করেছি আমি। তোর মত প্রকৃতিকে নাই বা ভালোবাসতে পারলাম, তোকে তো ভালোবেসেছি আমি। তাই তো আজ প্রাণের দুয়ার খুলে আমিও বলতে পারি,
“খোলো দ্বার বধূয়া, রয়েছে সে দাঁড়ায়ে।
দেখো পরাণ উথলি যায়…রয়েছে সে দাঁড়ায়ে।”