বিছানা হল আমাদের জীবনের একটা বড় ফ্যাক্টর। যেখানে রোজ কত অভিমান খুনসুটি করে,কত অগোছালো কথা দিব্যি আদর খেয়ে গুছিয়ে যায়। চাদরের ভাঁজে ভাঁজে স্পর্শরা আনন্দে যায় ভেসে, যেখানে নৈঃশব্দের ধূসর নির্জনতা খেলা করে, ছায়াগুলো জ্বলে ওঠে একে একে ঠিক ঐ ঘষে যাওয়া চকমকির আগুনের মতো। কিছু অস্পষ্ট স্বর ফোঁটে লুকোচুরির আঁধারে, তেমনি আবার কিছু ফোঁটা ফোঁটা বিন্দুরা নিদারুন ভাবে জড়িয়ে পড়ে এ মায়াময় বিছানার অকুঞ্চিত ভাঁজে।
ঠুনকো সব অভিমানেরা রূপ নেয় এক একটা এলোমেলো ভাবনা,
শিশির ভেজা হয়ে সাক্ষী রয়ে যায় শুধু এক ফালি বিছানা।
কিছু সহানুভূতিরা ছদ্মবেশে লুকিয়ে থাকে নরম আদরের আড়ালে। যেখানে প্রেমের শিখারা আস্তে আস্তে ছোঁয়াচে হয়ে ওঠে ভোগবিলাসের গন্ধে।চড়চড়িয়ে উঠতে থাকে উষ্ণতার পারদ। বদলে যায় তারা এক শরীর থেকে আরেক শরীরে। ক্রমাগতই ফাটতে থাকে তখন জরায়ুরা এক ফালি কাপড়ের আড়ালে। পড়ে থাকে শুধু ঘর্মাক্ত পুরোনো গন্ধ এবং ঐ কুঞ্চিত মলিন বিছানা।
অনেক অগনিত প্রশ্নেরা সব তলানিতে ঠেকে চাদরের সংকোচনে, আবার কিছু ছাই রঙা স্মৃতির আলোয় সোহাগ মাখা আলু থালু বেশে অভিসারের চৌকাঠ ভাঙ্গে বিছানা।
আটকেছে মন তখন একাকীত্বের যন্ত্রনার ফাঁদে,
নোংরা মলিন সব বিছানা যন্ত্রনার জতুগৃহে বসে ছটফটিয়ে কাঁদে;
জীবন যখন ছেড়ে দিয়েছে হাত,
রক্তাক্ত ঐ বিছানা দিয়েছে তখন সাথ;
এক সময় যেখানে ভোগবিলাসের প্রবেশ ছিল মানা,
সর্বনাশা সব গল্পের জাল বোনে আজ সেই বিছানা;
শরীরে শরীরে চলছে আজ ধুন্ধুমার ফাইট,
নখের আঁচড়ে নরম খাঁজ হয়ে ওঠে শক্ত গ্ৰানাইট।
ধীরে ধীরে শরীর নুয়ে পড়ে ক্লান্তের পদভারে। বাঁচতে চায় সে একটু বিছানার ঐ এক ফালি কাপড়ের ভাঁজে,যেখানে আঙূলের মন্থনের চেয়ে ভালোবাসার গ্ৰন্থনটা সুখের হবে, যেখানে নীড়গুলো ধ্বংসাত্মক না হয়ে তারা এক একটা সম্পূর্ন উপসংহার গড়ে তুলবে রূপকথার মায়াজালে।
ভোগবাদের অনলে ক্লান্ত প্রেমের ছাই এ যখন বিছানায় লাগে ক্ষয়,
দীর্ঘ নীরবতা পেরিয়েও ক্ষনিকের ভালোবাসার স্পর্শেও কিছু বিছানা তখন মোহিত হয়।
কিছু অতীতের মোহনায় পলি পড়ে আবার কিছু অতীত পিছু নেয় কালো শূন্যময় অনন্তের পথে,কেউ আবার গুনগুন করে মশাদের ভৃত্য হয়ে, সময় এগিয়ে চলে, বদলে যায় চাদর, কথাও শুরু হয়ে শেষও হয়,সব বদলালেও বদলায় না ঐ ভাঁজ গুলো, দাঁড়িয়ে থাকে তারা নিষ্পলক ভাবে অস্তমিত এক সূর্যের মতো।