থ্রিলার, বেশ জমজমাট থ্রিলার কাহিনী জমতে জিরো ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে হয় না কি বলেন! একটা ভেতো দুপুর আর একটা জাঁকিয়ে আদ্যপ্রান্ত বাংলা সিনেমা,হালকা আঁচের রহস্য আর মজবুত বাঙালিয়ানার গল্প। আর সেখানে ডিরেক্টর যদি হন ঋতুপর্ণ ঘোষ আর মুখ্য চরিত্রে রাখী গুলজার প্রমুখ।
২০০৩ সালে ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত সিনেমা “শুভ মহরৎ”। আগাথা ক্রিস্টির “mirror cracking from side to side” কাহিনী অবলম্বনে চলচ্চিত্রায়িত। মুখ্য চরিত্রে শর্মিলা ঠাকুর, রাখী গুলজার, নন্দিতা দাস, টোটা রায়চৌধুরী, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রতিটি চরিত্রে তাবড় কলাকুশলীদের নিয়ে বেশ আঁটোসাঁটো থ্রিলার।
বাঙালি সেকেলে বিধবা কোনো এক গৃহবধূ যদি ব্যোমকেশ বা ফেলুদার মতো ঘরে বসে কেস স্টাডি করে আবার রহস্যের উন্মোচনও করে, বেশ ভাবতে অবাক লাগছে না! ছবির মুখ্য চরিত্র রাখী গুলজার তথা রাঙা পিসি তদন্তকারিনী। পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, দূরদৃষ্টি , স্মৃতিশক্তি, ক্ষুরধার বুদ্ধি আর কর্মরতা এক গৃহবধূ, বলতে পারেন পৌঢ়া,থ্রিলার এর মুখপাত্র। এককালীন সুপারস্টার পদ্মিনী চৌধুরীর তথা শর্মিলা ঠাকুরের অসম্ভব ফ্যান থেকে দুটো খুনের সুরাহা। কুড়ি বছর প্রযোজক হয়ে ফিরে আসা পদ্মিনীর
সিনেমার নায়িকা কাকলীর ইন্টারভিউকালীন হঠাৎ মৃত্যু।
ভাইঝি মিলি তথা মল্লিকা রিপোর্টার তথা নন্দিতা দাসের চরিত্রটি বেশ নজরকাড়া, উক্ত সিনেমা তৈরির সেট থেকে অভিনেত্রীর মৃত্যু আর শেষ স্বীকারোক্তির সাক্ষী মল্লিকা রিপোর্টার হিসেবেই, ব্যাস এখান থেকেই শুরু থ্রিলার গন্ধ। কারণ মিলির ওরফে মল্লিকার রাঙাপিসিই সব তথ্যটা পেতে থাকে মিলি, টিভি, মিলির পুলিশ ও অন্যান্য সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে। ছবি বেগ পেতে শুরু করে যখন আরেকটি খুন হয়। আস্তে আস্তে ক্রমে জটিল সন্দেহ। সবার ওপরেই সন্দেহ প্রবলভাবে লাগু হয়। কিন্তু আসল কে??
এটাও পড়তে পারেন: কলকাতার বাড়িটা ও পাঁচজন
থ্রিলার এর মাঝেও কিছু সম্পর্কের টানাপোড়েন যেমন পিসি- ভাইঝি, মিলির নিজস্ব সম্পর্কের আঁত, জোজো- মামণির একটা অদ্ভুত ভালোবাসা আর মা- সন্তানের এক অসম্পূর্ণ ভালোবাসার নজির আর শেষমেষ চূড়ান্ততম সিদ্ধান্ত। শুধু কি মানুষ রাঙা পিসির পোষ্য হরিদাসীও উপমার চিহ্ন।
তবে কার খুন, খুনি কে? কীভাবে কেন থ্রিলার? সবটাই জানুন জাতীয় পুরস্কার পাওয়া সিনেমা দেখে। থ্রিলার এর থ্রিলিংটাই যদি বাতলে দি আপনি আমি মজার টান টান উত্তেজনাটা কোথায় পাবো বলুন। তাই দেরী না করে দেখে ফেলুন আজই “শুভ মহরৎ”।