Veere di Wedding
Veere di Wedding সিনেমাটার জন্য প্রথমেই বলিউডের কাছে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে ছেলেদের বন্ধুত্বর বাইরে মেয়েদের এমন একটা স্ট্রং বন্ডিং দেখানোর জন্য। আমাদের স্কুলের গণ্ডিতে চারজন বা তিনজনের বন্ধুত্ব আমরা সবসময়ই দেখেছি। তাদের মধ্যে চরিত্রগত অমিল থাকা সত্ত্বেও তারা একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠে। নিজেদের জীবনের ওঠাপড়া বা সমস্যা অন্যের কাছে খুলে ধরে এবং আগলে বাঁচে। এখানেও তেমনই চার কন্যের জীবন দেখানো হয়েছে। উচ্চবিত্ত হওয়ায় তাদের আর্থিক অবস্থার সাথে মধ্যবিত্তরা মেলাতে না পারলেও ক্রাইসিসগুলো রিলেট করতেই পারবে। চার কন্যে কালিন্দী (করিনা কাপুর), অভনী (সোনম কাপুর), সাক্সী সোনি (স্বরা ভাস্কর), মীরা সুদ (শিখা তালসানিয়া) স্কুলের চার কন্যের বন্ধুত্ব অটুট। স্কুল পেরিয়ে কলেজ, সেটাও পেরিয়ে জীবনের গণ্ডিতে তাদের বন্ডিংটাই তাদের ভরসা। স্কুলের দুষ্টুমি থেকে শুরু করে মদের গ্লাসে চুমুক কিংবা সিগারেটে টান, চার কন্যের বন্ডিং আরো স্ট্রং হয়েছে। সিনেমা দেখতে দেখতে মনে পড়ে যাবে স্কুল ফেরত পুরনো বন্ধুত্বের কথা যারা প্রথম প্রেম থেকে শুরু করে যাদের হাত ধরে সিগারেট কিংবা প্রথম মদের গ্লাসে চুমুক দেওয়া। সিনেমা দেখতে দেখতে “বন্ধু চল রোদ্দুরে” গানটা মনে আসতেই পারে।
কালিন্দীর ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের ভঙ্গুর রিলেশন দেখে অভ্যস্ত তাই বিয়ে নিয়ে তার ফোবিয়া বরাবরের। বাবার আবার বিয়ে, মায়ের মৃত্যু, একা অস্ট্রেলিয়া থাকা সব মিলিয়ে তার বয়ফ্রেন্ড বিয়ের প্রস্তাব দিলে খুশীর বদলে ভয় তার বেশী কাজ করে। যাই হোক, তিন বছরের বয়ফ্রেন্ডকে ভালোবাসে বলে রাজি হয় বিয়েতে। অতঃপর চার বন্ধুর রিইউনিয়ন।
অভনী ডিভোর্স ল-ইয়ার। মায়ের চাপে বাধ্য হয়ে ম্যাট্রিমণি সাইটে ছেলে খোঁজে বিয়ের জন্য। এটাই তার জীবনের একমাত্র ক্রাইসিস। বান্ধবীর বিয়ে দেখে তার মাও তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। যা দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যেতেই পারে যখন বন্ধুর অঙ্কের নম্বরের সাথে তুলনা চলত। অভনীর ভেঙে যাওয়া প্রেম সামনে আসা বা বারবার রিজেক্টেড হওয়া তার ক্রাইসিসকে তুলে ধরা।
মীরা সুদ বিয়ে করে ভিনদেশীকে। তার একমাত্র ক্রাইসিস তার স্বামী ও সন্তানকে পরিবারের না মেনে নেওয়া।
সাক্সী সোনি বড়লোকের মেয়ে। নেশাগ্রস্ত। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিয়ে করেও বিয়ে টেকাতে পারেনি। ফলে পাড়ার কাকিমাদের গল্পের খোরাক সে। নিজের মতন জীবন বাঁচতে চায়। ডিভোর্সের কারণ বাবা-মাকে বলতে পারেনা।
এই চার কন্যের কালিন্দীর বিয়েতে এক হওয়া। একসাথে ক্রাইসিসের সময় পাশে দাঁড়ানো বা কখনো ঝগড়া পুরনো বন্ধুত্ব মনে পড়ায়। একসাথে শপিং কিংবা ফুচকা খাওয়া পুরনো বন্ধুদের মনে পড়াবেই। গল্পের শুরুতেই বলা হয়েছে জীবন রূপকথা নয়, তাই জীবনে ছোটদের ভুল করতে দিতে হয়।
গল্পের শেষে রূপকথার মতন সব মিলে যাওয়াটা অতিরঞ্জিত হলেও গল্পটা খারাপ নয়।
গল্পের খাতিরে অভিনয় তেমন মুগ্ধ করতে না পারলেও অভিনেত্রীদের সাজগোজ কিংবা জামাকাপড় মুগ্ধ করবেই। মনে রাখার মতন গান না পেলেও আপনার পুরনো বন্ধুত্ব মনে পড়বেই।