স্পেস কথাটা শুনলেই বিজ্ঞান কতটা উন্নত হয়েছে বা এগিয়ে গেছে তার কথাই মনে পড়ে। আমাদের জগতের বাইরেও যে একটা জগত আছে, সেটা সম্বন্ধে কত কিছু জানার আছে তা ঐ দুটো শব্দেই প্রকাশ পায়। আর যখন স্পেস কথাটা আসে তার সাথে আসে ভিনগ্ৰহীদের কথাও। এরকমই একটা সিরিজ হল- নেটফ্লিক্সের ‘লস্ট ইন স্পেস।’
এক বৈজ্ঞানিক পরিবার তার সকল সদস্যদের নিয়ে স্পেসে পাড়ি দেয়, সেখানে থেকে তথ্য আহরণের জন্য এবং সেখানে সবসময় বসবাসের জন্য। মৌরিন রবিনসন ও জন রবিনসন তার তিন ছেলমেয়ে- উইল, জুডি এবং প্যানি- এরা একটি স্পেস ক্রাফ্টে করে পৌঁছে যায় স্পেস কলোনি তৈরীতে; সঙ্গে আরো অনেক বৈজ্ঞানিক পরিবার যেমন- ধর পরিবার ছিল। তবে দুর্ভাগ্যবশত তাদের স্পেস ক্রাফ্টটা খারাপ হয়ে যায় এবং তারা ওখানে আলাদা এক গ্ৰহে আটকে যায় । তারা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন বিপদে পড়ে যায়। এই বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য ছোট্ট উইল(ম্যাক্সওয়েল জেনকিনস্) উদ্যত হয় এবং সেখানেই সে খুঁজে পায় ভিনগ্ৰহী এলিয়েন রোবোট। উইলের কথামতোই সে চলে এবং তাদের নানা বিপদ থেকে রক্ষা করে। গল্পের মূল চরিত্র উইল, তাকে ঘিরেই সিরিজ এগিয়ে চলে। প্রথম সিজনে ভিলেন হিসেবে ড.স্মিথ(পার্কার পোজ্যে) ছিলেন। তিনি রোবোটের মেক্যানিক্যাল কিছু পরিবর্তন করে উইল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তাকে লেলিয়ে তোলে যার ফলে রোবোট উইলকে মারতে আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠে। যদিও সে যাত্রায় উইল বেঁচে যায়।
দ্বিতীয় সিজনেও একভাবে গল্প আবর্তিত হয়। তারা স্পেসে থাকবার জন্য অনেক চেষ্টা চালাচ্ছে। সিরিজে দুটো ছোটো প্রেমের সম্পর্ক দেখানো হয়-একটি ‘প্যানি ও ভিজয়ের’, আরেকটি ‘জুডি ও মেজর ডনের’। এই সিজনে যদিও ড.স্মিথ প্রথমদিকে ভিলেন রোলে ছিলেন কিন্তু শেষে তার চরিত্রের রদবদল হয় যা মন ছুঁয়ে নেওয়ার মতো।
সিজন শেষে দেখা যায় তাদের সেই স্পেস কলোনি ভিনগ্ৰহী এলিয়েন রোবোটদের দ্বারা আক্রান্ত এবং তাদের সেই রোবোটের সাহায্যে তারা কীভাবে সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসে। সেখান থেকে যদিও উইল ও তাদের প্রজন্ম বেরিয়ে আসতে পারে বাকিদের ফেলে… তারপর তারা হারিয়ে যায় কোনো এক অজানার পথে। সেই অজানার পথে তারা কোনোদিন বাকি পরিবারদের খুঁজে পাবে কিনা কিংবা সেখানে তারা বড় আরো কোনো বিপদে জড়িয়ে পরে কিনা সেটা নিয়েই আসছে তৃতীয় এবং শেষ সিজন।
২০১৮ তে শুরু এই সিজনের শেষ পার্ট এই বছরের শেষে রিলিজ হচ্ছে। দুটো সিজন মিলিয়ে ২০টি এপিসোডে গল্প আপাতপক্ষে শেষ হলেও নতুন সিজনের অপেক্ষা রয়েই যায়। সায়েন্স ফিকশন এবং রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চারে পরিপূর্ণ এই সিরিজ ভালো লাগবে দেখে।
গত সিজন একরাশ মনখারাপী ও উত্তেজনা নিয়ে শেষ হয়েছিল, আশা করাই যায় এই সিজনে সব উত্তেজনা ও মনখারাপী মেটানোর অভিপ্রায় থাকবেই।