ফুচকা চরিত

ধরা যাক একটি কলেজের বয়েজ হস্টেল থেকে গার্লস হস্টেলে এক যুগলের মধ্যে রাত দুটোয় ফোনে কথোপকথন (মতান্তরে প্রেমালাপ):
মেয়েটি: খুব ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে বুঝলি।
ছেলেটি: এখন??? এই মাঝরাতে? (আকাশ থেকে পড়াই স্বাভাবিক)
মেয়েটি: ফুচকা খাওয়ার ইচ্ছে কী সময় দেখে হয়!!! (কপট রাগ দেখিয়ে)
ছেলেটি: বেশ, কিন্ত এখন আর কোথায় ফুচকা পাওয়া যাবে বল তো?… কাল দেখা যাবে।

ভোর ছটা… মেয়েটির ফোন বাজতে থাকে ক্রমাগত, অতঃপর মেয়েটি আধা ঘুমজড়ানো গলায় ফোন ধরে…
ফোনের ওপারে তখন ছেলেটির ক্লান্ত অথচ উচ্ছ্বসিত গলার স্বর…
ছেলেটি: চট করে একবার হস্টেলের বাইরে আয় দেখি, তোর জন্যে ফুচকা এনেছি।
মেয়েটি: এখন??? (এবার তার আকাশ থেকে পড়ার পালা)
ছেলে: শোন সারারাত ইউটুব দেখে বানিয়েছি, নেহাত আমার রান্না করার হবিটা অনেকদিনের তাই সব সরঞ্জাম হাতের কাছেই ছিল… যদিও কিছু ফুচকা লুচির আকার নিয়েছে… তা যাকগে প্রথমবার নাহয় একটু অ্যাডজাস্ট করে নিস কেমন!
ফোনের ওপারে তখন নিস্তব্ধতা…

ছেলেটি: একী কাঁদছিস কেন… শুনেই কান্না পেয়ে গেল তোর? এতো খারাপ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে?!!
মেয়ে: ধুর পাগল… আমি কিছু বলার ভাষা পাচ্ছি না। কোনো সম্পর্কেই পারফেকশনটা ম্যাটার করেনা, নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়েও অপরজনকে খুশি করার, ভালো রাখার চেষ্টাটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ… আমার মজা করে করা একটা আবদারকে তুই এতো গুরুত্ব দিলি?
ছেলেটি: আহা, দেবীর মনবাঞ্ছা পূরণ করবনা, এতো দুঃসাহস আমার নেই।

মেয়েটি: (মুখে হাসি, চোখে জল) আসছি দাঁড়া…
অতঃপর, এক জোড়া সদ্য প্রেমে পড়া ‘দো দিল এক জান’ তাদের ফুচকা অভিযানে মন দিল…।

পুনশ্চঃ: কী ভাবছেন মশাই এইসব সত্যি? হে হে, আজ্ঞে এইসব শুধু গল্পেই হয়, বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই, তবে কিনা মাঝে মাঝে এমন সব কাল্পনিক ভালোবাসার কথা ভেবেই ভালো লাগে কিনা বলুন তো? বাস্তবে নাহয় আপনি একাই ফুচকা খেলেন, তাতেও মন ভালো থাকবে অবশ্যই…।

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *