অতিমারী

এই অতিমারী সময়টাকে যেন একঝটকায় থামিয়ে দিয়ে  গেছে। বদলে গেছে আমাদের চারিপাশের পরিচিত  চিত্রটা। তিলোত্তমা আজ হয়েছে আবৃত অতিমারির বসনে। ক্রমাগত বাড়িয়েই চলেছে বেকারত্ব এই অতিমারী। বাতাসে শুধু ভেসে আসে রজনিগন্ধার পোড়া গন্ধ। অবসাদে জানলার গ্রিলে হাত রাখি , শুনতে পাই এক করুন স্বর ” হবে নাকি এক মুঠো ভাত”?? সেই যে শুরু হয়েছিল যাত্রা আঠও।রো ই মার্চ থেকে তার রেশ চলছে এখনও। অতিমারী  প্রায় বিপযস্ত করে তুলেছে  যোগাযোগ মাধ্যম। শুনশান আজ প্লাটফর্ম। ক্লান্ত পথিক ঘরে ফেরে শূন্য হাতে। চলছে মানুষ ও যমেতে টানাটানি এই করোনাকালে। প্রতিমুহূর্তে হারিয়ে যাচ্ছে  কিছু ভাল লাগার মানুষ এবং মুহূর্তেরা। তাবুও কী চেতনা হয়েছে মানুষের??

 

কত কি যে ভাবি ,বুঝতেই পারি না। নিমেষেই বদলে যায় সব অভাবনীয় ভাবনারা

যাদের দিন যাপনের সঙ্গী  এখন শুধু এক ঝুরি হতাশা

শেষ করেছে এই অতিমারী তাদের  বাঁচার এক টুকরো আশা

প্রতিনিয়তই মৃত্যুদিন গুনছে কেউ না কেউ, কৃষকেরা আজ পা দোলাচ্ছে আত্মহননের খাদে। কেমন এক্তটা জড়তা মিশ্রিত অনুভুতি এই অতিমারী অনুসঙ্গ। রেললাইন চত্বরে ঘুরে বেড়ানো সেই পাগলীর চোখে মুখে কেমন একটা ছন্নছাড়া ভাব। কেমন একটা ভাবলেশহীন মুখে  শুধায় সে শূন্যে চেয়ে–” কবে  পাবো আবার সেই মানুষরুপী মুখোশের হদিশ?? মিলিয়ে যায়  লক  ডাউনে এইভাবেই  সে ধীরে ধীরে এই বিশাল মহানগরীর মহাশূন্যের মাঝে। অংশক হয়ে থাকে শুধু লক ডাউন তার জোড়া দুই চোখের ক্ষুধার্ত কাতর দৃষ্টি নিয়ে।

কিছু প্রেমিক প্রেমিকারা  প্রহর গুনছে এই  অতিমারী , মনে  তান বাঁধছে একটাই  ” মিলন হবে কত দিনে??” স্বপ্নের চারাগাছে তারা দিচ্ছে জল ভার্চুয়াল দুনিয়ার দৌলতে। পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস রেখে  কামনা করছে পুনর্মিলনের আরেকটি বসন্তের,যেখানে ভালবাসার রঙএ মুছে যাবে ছয় মিটার দূরতের ব্যাবধান। প্রতীক্ষিত দুই জোড়া ঠোঁট বাধা পরবে আবার আলিঙ্গনের সুতোয়। এত বাধা বিপত্তি পেরিয়েও অবশেষে মর্তে আগমন ঘটেছে মা মহামায়ার।নিরানন্দের ছোঁয়ায় রোদের তাপও আজ অতিমারীর বিষন্নতায় মোড়া কেমন যেন স্যাঁতস্যাঁতে আঁধারে ঘেরা। মা যেন নিজেই মেতেছে প্রতিশোধের অনলে।

 

 

করেনি সে কাউকে ক্ষমা, মানুষ তাই আজ পড়েছে ঐ দুর্দিনের মুখে

করোনা  তার প্রভাব বিস্তার করেছে মনের সুখে

ডাকি দিবা নিশি তাই মা কে করজোড়ে

কেটে যাক দ্রুত অতিমারী ও  লক ডাউন  সবাই এই প্রাথনা করে

ফিরে আসুক তিলোত্তমার বুকে পরিচিত সেই হাসি

পুরনো ছন্দে আবার আমরা মায়ের আগমনের আনন্দে একসঙ্গে হব বানভাসি ।

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *