ঈশ্বরের প্রতিভূ: মানব সেবাই ঈশ্বর সেবা

সকাল থেকেই বড্ড মন কেমন করছে সীমার। আনন্দে মেতে উঠতে পারছে না সহকর্মীদের সাথে।
বেসরকারী স্কুলের শিক্ষিকা সীমা। স্কুলে বনভোজনের আয়োজন করায় সাতসকালে উঠে বহু যত্নে রান্নাবান্না করেছে সকলের জন্যে। তারপর আর সময় করে উঠতে পারেনি আসনের ঠাকুরকে ভোগ নিবেদন করার। এই প্রথম এমন অঘটন! ঠাকুর পূজো না করে এর আগে কখনও বাড়ির বাইরে যায়নি। মা কিনা জোর করে টিফিন বাক্সে লুচি-আলুর দম পুরে দিয়েছে! ছিঃ ছিঃ! আসনের ঠাকুর অভুক্ত, সেও আজ খাবে না।
চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটাল স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে কাশতে থাকা রিক্সাওয়ালা। এগিয়ে গেল সীমা। বছর সত্তরের বৃদ্ধ, রিক্সায় বেশ কিছু সিমেন্টের বস্তা টেনে নিয়ে যাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছে; বিরবির করছে, “…আর বাঁচুম না, পেটে না পড়লে আর বাঁচুম না”।

নিজের অজান্তেই হাতের টিফিন বক্সখানা এগিয়ে দিল বৃদ্ধের দিকে। চোখ ভরে দেখল তাঁর তৃপ্ত ভোজন। অদ্ভুত শান্তি অনুভব করছিল সীমা। মা বোধহয় স্নান সেরে তার আসনের ঠাকুরকে ভোগ নিবেদন করেছেন। নাইলে নিমিষে কোথায় উধাও হয়ে গেল তার ব্যাকুলতা?

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *