গল্পটা সহেলীর উড়ানের। গ্রাম থেকে সহেলী কাজ করার জন্য সাহা গিন্নির বাড়িতে এসেছে। বিমানবন্দর থেকে খুব কাছে ওদের বাড়ি। সহেলী প্রথম দিন ছাদে জামা কাপড় মেলতে গিয়ে প্রথম প্লেন উড়তে দেখলো। মস্ত বড়ো সাদা পাখির মতো। দুটো ডানা ও আছে আবার আলো জ্বলে। সহেলী কিছুটা আবাক হয়ে গেছিল। প্রথমে তো এটা তার পাখি বলেই মনে হয়েছিল তাই কিছুটা ভয় ও পেয়েছিল। পরে সাহা গিন্নিকে জিগ্যেস করায় সে প্লেন কি জিনিস তা ভালো করে বুঝতে পারলো। তারপর থেকে রোজ বিকালে সহেলী ছাদে যেতো। অদ্ভুত এক আকর্ষণ ছিল তার প্লেন দেখার জন্য।
একদিন রাতে খাবার টেবিলে সে ছোট কাকার কাছে জানতে পারলো ওগুলো নাকি মানুষ চালিয়ে নিয়ে যায় আকাশে মেঘের ভিতর দিয়ে। সবকিছু সহেলী কাছে সপ্ন বলেই মনে হলো। সে সাহস করে ছোটকাকা কাছে বলেই বসলো আমি প্লেন চালাতে চাই। ছোট কাকা খানিক হেসে বললো, তাহলে তো পড়াশোনা করতে হবে। সহেলী বললো, বেশ আমি তাই করবো। রোজ কাজ শেষ করে সহেলী রাতে পড়াশোনা করতো। সত্যি বলতে ওই বাড়ির সকলে তাকে সাহায্য করতো। অনেক সময় কিছু কাজ সাহা গিন্নি একাই করে নিতেন। যেনো মেয়েটার পড়াশোনা ক্ষতি না হয়।
আজ এই ঘটনার দশ বছর হয়ে গেছে। সহেলী আজও ওই বাড়িতেই থাকে। আজ ওই বাড়িতে সবাই খুব ব্যস্ত। সহেলী সাথে সবাই আজ বিমানবন্দর যাবে কারণ আজ সহেলী প্রথম ফ্লাইট। সহেলী আজ প্লেন চালাবে।
যে সপ্ন সে এতোকাল দেখে এসেছে আর তা পূরণের দিন। মেঘেদের মাঝে দিয়ে নীল আকাশে পাড়ি দেওয়ার দিন। আজ সহেলীর প্রথম উড়ানের দিন।