জয়িতা- চতুর্থ পর্ব- কোথায় যেতে হবে?

জয়িতা গাড়ির সামনেই পড়ে থাকা ম্যাগাজিন টা তুলে পড়া শুরু করল। আর আমি নিস্তব্ধে গাড়ী চালিয়েই যাচ্ছি। কি কথা বলব কিছুই খুঁজে পাচ্ছিনা।
তখন আমার হঠাৎ মনে পড়ল যে আমি তো জিগ্যেস করতেই ভুলে গেছি যে আমরা যাচ্ছি কোথায়? এখন জিগ্যেস করাটা কি ঠিক হবে?যদি রেগে যায়? কিন্তু না করেও তো উপায় নেই। এতটাই বোকা মনে হচ্ছিল নিজেকে তখন মা কে জিগ্যেস করেই আসা উচিত ছিল আমার

“ধ্যাত”- বাকি কথা গুলো মনে মনে বলে এই “ধ্যাত” টা জোরেই বলে ফেল্লাম।জয়িতা যেন একপ্রকার চমকেই উঠল।

-” কি হল?” জয়িতা প্রশ্ন করল
– “এই রে জোরে বলে ফেললাম?”
– “হ্যাঁ। যথেষ্ট। আমি চমকে গেলাম যখন………”
-“ওহ sorry. আসলে একটা কথা ভাবছিলাম”
-” কি সেটা জানতে পারি কি? না…… তোমার যদি কোন অসুবিধে না থাকে।”
-” না না। কথাটা তোমাকে নিয়েই। একটু awkward তাও। বলতে পারবে কি………যে ……… আমরা কোথায় যাচ্ছি?”
-“ওহ। কাকিমা বলেননি? আমরা দার্জিলিং যাচ্ছি।”

আমি শুনেই ব্রেক কষলাম গাড়িতে।
আমি আস্তে করে মুখ ঘোরালাম জয়িতার দিকে। অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বললাম-

-“মানে?”
-“মানে বার কি মানে? তুমি জানতেনা নাকি?”
-“না একদমই না। জানলে প্রশ্ন টা করি?”
-“যাহ্‌! তোমার মা তোমাকে বলেননি?”
-“আমি ভাবলাম কোলকাতা র মধ্যেই কোথাও হবে। তাই আর মা কে জিগ্যেসাও করিনি। তুমি এখন দার্জিলিং যাবে গাড়িতে? ট্রেন কি ধর্মঘট ডেকেছে?”
– “নাহ মশাই। ট্রেন যদি cancel না হত আমি অহেতুক আপনাকে ঝামেলায় ফেলতাম না। “- এবার একটু বিরক্তি র সাথেই জবাব দিল জয়িতা।

আমি এবার একটু সংযত হলাম। আর চুপটি করে বসে থাকলাম। দুজনেই একদম চুপ। প্রায় ৫-৭ মিনিট ওরকম চুপ হয়েই বসে থাকলাম দুজনে। তারপর জয়িতা আবার বলল-

” কি হল? যাত্রা শুরু হবে না নেমে পড়ব?”
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম- ” এমনিতেও বিয়ে বাড়ি পোষাচ্ছিল না। তো যাত্রা করাটাই শ্রেয়। তবে একটা উপদেশ আছে।”

– “কি?”
-“একটু চা খেয়ে যাত্রা শুরু করি?”
জয়িতা এবার হেসেই উত্তর দিল – ” নিশ্চয়”

Facebook Comments Box