সেদিন ছিল আমাদের বিবাহবার্ষিকী। আর পাঁচটা দিনের মতো নয়। এই দিন টা বিশেষ দিন। ভালোবাসা র দিন । হয়তো শুধু আমার কাছেই। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও সকালে অফিস যাওয়ার সময় বললাম – আজ তাড়াতাড়ি ফিরবে তুমি, দেরি করবে না কিন্তু। হুমম বলে ও বেরিয়ে গিয়েছিল। আমি খুব আনন্দে মেতে ছিলাম। ভেবেছিলাম আজ নিশ্চয় তুমি আমাকে সারপ্রাইজ দেবে সেই প্রথম বছরের মতো। তখন আমি মনে না রাখলেও তোমার সব মনে থাকতো। শত কাজের চাপেও তুমি আমাকে নিয়ে ভাবতে। রোজ বিকেলে বেড়াতে নিয়ে যেতে।
সন্ধ্যাবেলায় মাথায় বেল ফুলের মালা আর বিয়ের বেনারসি শাড়ি টা পরে সেজে ছিলাম। তোমার সব পছন্দের খাবার আমি নিজে রান্না করেছিলাম। ভেবেছিলাম আগের মতোই আবার আমাকে বিয়ের সাজে দেখে জড়িয়ে ধরবে। প্রথম দিনের মতো আমার প্রিয় লাল গোলাপ নিয়ে আসবে। চোখে পলক না ফেলে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে।
না, এত অপেক্ষার পরেও তুমি এলে না। সেদিন একমাত্র সঙ্গী ছিল অশ্রুজল। কাঁদতে কাঁদতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নিজের খেয়াল ছিল না।
আমি সব ই জানতাম। রোজ মিটিং বলে তুমি কার সাথে দেখা করো, কেন তুমি রাতে দেরি করে বাড়ি ফিরে আসো? এবং কেন আগের মত আমাকে ভালোবাসো না?
তাও তোমাকে কোনোদিন অভিযোগ করিনি। স্ত্রীর অধিকার দাবি ও করিনি। আমি তোমাকে ভালো রাখতে চেয়েছিলাম।
এটাও পড়তে পারেন – ওরা যারা নীল প্রতিফলনে প্রেমিক-প্রেমিকা
সেদিন রাত ১২ টায় বাড়ি ফেরার পর শুধু বলেছিলাম ,
তোমার মনে আছে আমাদের বিয়ের পর প্রথম বিবাহবার্ষিকী তে তুমি আমাকে সোনার আংটি দিয়েছিলে? দেখতে দেখতে পাঁচটা বছর পেরিয়ে গেছে। তোমার ভালোবাসা টা আগের মতো নেই। বুঝি তোমার আমার জন্য সময় নেই এখন।
আমি তো বেশি কিছু চাইনি। শুধু আজ দুজনে একসাথে ডিনার টা করতে চেয়েছিলাম। তার জন্যে একটা দিন সকাল করে অফিস থেকে ফিরে এলে না।
আজকের বিশেষ দিনে পুরানো দিনের কথা মনে পড়ে যায়। সেই বিয়ের পরের দিনগুলো কত রঙিন,মধুর ছিল। হয়তো সে সব ফিরে পাবো না ।
আজ সব শেষ। সম্পর্ক টা শুধু নামেই টিকে আছে, ভালোবাসা বা প্রেমের অস্তিত্ব নেই। তাও এতো সাজ সরঞ্জাম,পছন্দের রান্না করেছিলাম শুধু তুমি আসবে বলে।