নষ্ট মাছ

“আরে বাবা একটুখানি টেস্ট কর না প্রিয়া। কিচ্ছু হবে না,আমি বলছি,আমরা তো খাই”,”না রে প্রতিম,আমি খাব না। আমার এসব ভালো লাগে না। তোরা খা।”,”আরে একটু খা। নে নে,খা। হাঁ কর। হ্যাঁ এইতো গুড গার্ল। তোর বার্থ ডে,আর তুই ড্রিঙ্ক করবি না সেটা হয়?” “এই নে চাখনা,মাছ ভাজা।” “এই ওটা খাস না নষ্ট হয়ে গেছে!”,পাশ থেকে অন্য একজন বলল।

“বাবাই মাছটা একটু খা সোনা। স্পেশালি তোর জন্য তোর বাবা গোটা বাজার ঘুরে ঘুরে ইলিশ মাছ এনেছে। তোর জন্মদিন বলে। তুই তো কিছুই খেলি না এটা অন্তত একটু খা। সারাদিন তো বাড়িতেই ছিলি না। এখন অন্তত খা।”

“প্লিজ মা,আর পারব না। আজ প্রতিমদের সাথে অনেকটা বিরিয়ানী খেয়েছি। তুমি রেখে দাও আমি কাল খাব মাছ টা।” এই বলে নিজের ঘরে এসে শুয়ে পড়ল প্রিয়া। গা হাত পা এ বড্ড ব্যাথা। ড্রিঙ্ক করার পর থেকে আর কিছু মনে নেই ওর। শুধু যখন চোখ খুলল দেখল রাত দশটা বাজে। একটা ট্যাক্সি তে শুয়ে আছে ও আর পাশে প্রতিম বসে। ওর কি হয়েছিল জিজ্ঞেস করায় প্রতিম বলে প্রথমবার ড্রিঙ্ক করেছে। ওইজন্যে একটু আচ্ছন্ন হয়ে গেছিল। তাই একটা ট্যাক্সি বুক করে ওকে শুইয়ে দেয় প্রতিম। কে জানে কি হয়েছিল। এসব ভাবতে ভাবতেই শুয়ে পড়ে প্রিয়া।

 

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে হোয়াটস্অ্যাপে এ আসা ভিডিওটা দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে প্রিয়ার। প্রতিম ওর মদ্যপ অবস্থার সুযোগ নিয়ে ওকে ধর্ষণ করেছে। আর তার ভিডিও বানিয়েছে। প্রতিমের নম্বরটা সুইচড্ অফ আসছে। কি করা উচিত বুঝতে পারে না প্রিয়া। বিছানা ছেড়ে উঠে চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে আসে। তারপর নিজের ঘরে এসে দরজাটা বন্ধ করে দেয়। তার মা ঘুম থেকে উঠে পড়েছে।ঘরের কাজ করছে তার খুটখাট শব্দ পায় প্রিয়া। ছটফট করতে থাকে প্রিয়া। মা এদিকেই আসছে হয়তো। এই হয়তো এক্ষুনি ডাকলো বলে। কেমন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছে প্রিয়ার। কোনো কিছু ভাবতে পারছে না ও। মা কিছু একটা যেন বলছে। গলায় ফাঁসটা লাগানোর সময় আবছা হয়ে মা এর কথাগুলো কানে ভেসে আসছে প্রিয়ার,
“বাবাই কালকের মাছটা নষ্ট হয়ে গেছে রে,ওটা ফেলে দিচ্ছি,নষ্ট হয়ে যাওয়া মাছ খেলে পেট খারাপ করবে ।”

এটাও পড়ুন: হেডফোন

 

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *