ভালোবাসা তো একটা গভীর বোধ… সবার সেই বোধ থাকেনা। অনেকে ভালোবাসেও হিসেবনিকেশ করে। তাদের ভালোবাসার গভীরতা নেই, ভাবনার পরিধিটাও ক্ষুদ্র। আমাদের চারপাশে থাকা অনেক মানুষই ভীষণ অগভীর। এদের ভাবনা যেখানে শেষ হয় সেখান থেকেই ভাবতে শুরু করে কিছুসংখ্যক গভীর মানুষ।
– তুমি কী মনে করো, যারা সত্যি ভালোবাসে তারা কখনো এইসব কারণে সম্পর্ক ভাঙে? বরং এরকম সিচুয়েশনে পরস্পরকে আগলে রাখে। এমনকি পরিবারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে তারা ভয় পায়না।
– নীপা এটা সাধারণ ক্রাইসিস নয়! এটা আমাদের ভবিষ্যতের ব্যাপার।
– আমিও ভেবেছি আমাদের ফিউচার নিয়ে। আমরা দুজনে ভালোবেসে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, টেস্ট রিপোর্ট বলছে আমরা দুজনেই থ্যালাসেমিয়ার কেরিয়ার! সেইজন্য এখন তুমি পিছিয়ে যেতে চাইছো। বুঝেছি সবই।
– তুমি ভাবছো আমি সরে পড়ছি, আসলে তো সেটা নয়! বায়োলজিক্যালি আমরা পেরেন্টস হলে সেই বেবির থ্যালাসেমিয়ার পেশেন্ট হবার চান্স থাকবেই! নাও হতে পারে তবে হবার সম্ভবনাটা উড়িয়ে দিওনা। গ্রো আপ!
– আমি সব জানি আবির! মা-বাবা হবার জন্য কেউ কাউকে ভালোবাসেনা। আমি এখনও তোমার সাথে থাকার স্বপ্ন দেখি, অন্য কাউকে বিয়ে করার কথা ভাবতেও পারিনা! আজকাল মেডিকেল সায়েন্স অনেক এগিয়েছে, খোঁজ করলে আমরা নিশ্চয় এর কিছু সমাধান পাবো। চাইলে ফিউচারে আমরা চাইল্ড অ্যাডাপ্ট করতে পারবো। যে সন্তান এখনো আসেনি, তার কথা ভেবে যে মানুষটাকে আমি ভালোবাসি তাকে অস্বীকার করতে পারিনা। পেরেন্টহুড কোনো সম্পর্কের উদ্দেশ্য নয়!
– নীপা!
– বাচ্চা জন্ম দেবার জন্য কেউ বিয়ে করেনা। কেবলমাত্র বংশরক্ষা মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের বেঁচে থাকার কারণ যদি বংশবৃদ্ধি হয় তাহলে আমাদের জীবনের মানেটা খুব তুচ্ছ হয়ে যাবে আবির… মানুষের জীবনের পরিধি এতো ক্ষুদ্র এতো অর্থহীন নয়। তবে আমি জোর করে কাউকে আটকে রাখতে চাইনা। যদি তুমি চাও তবেই…