মুক্তি চাই …
(সুপ্রিয়া মনমরা হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলছিলো , হঠাৎ তার দাদা এসে ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটায়)
– কিরে , একা একা কি করছিস আকাশের দিকে তাকিয়ে । প্রেমে পড়লি নাকি ?
– দুর , তুই না …. একটা কথা ভাবছি ।
– সারাদিন কি এত ভাবিস বলতো? একটু পড়তে বসতে পারিস তো। রেজাল্ট ভাল হবে।
– হুম। তা ঠিক ।
– কী হুম ? বল কি ভাবছিলি?
-পাখিরা কী সুন্দর সারা আকাশ ঘুরে বেড়ায় , ওরা কত স্বাধীন । চাইলেই মুক্তি পেয়ে যায় । আমরা যদি পারতাম , বল কেমন হতো?
– ইচ্ছা থাকলেও সব কিছুই কী পাওয়া যায় ? মুক্তি পাওয়া অত সহজ নয়।
– আমার ও খুব ইচ্ছে করে জানিস ‘মুক্তি’র স্বাদ নিতে । দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াবো। আর কি চাই ?
-আচ্ছা , তাই বুঝি ?
– জানিস তো , মাঝে মাঝে দুনিয়াটা ঘুরে দেখতে ইচ্ছা করে,
চার দেওয়ালে বন্দিদশা আর ভালো লাগে না। মুক্তি চাই।
– এই মাসে তোর অপারেশন টা হয়ে গেলেই তুই নিজের পায়ে চলতে পারবি। পাহাড়ে নিয়ে যাব । সমুদ্রপথে পাড়ি দেব ।
পাহাড়ে তুই নিজের পায়ে উঠতে পারবি। তোর সব স্বপ্ন পূরণ হবে দেখিস।
– আমি পারবো তো ? দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে এই অপেক্ষায় আছি । কবে যে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবো কে জানে ?
– এত মনখারাপ করিস না । আমি তোর সব ইচ্ছা পূরণ করবো।
– তুই খুব ভালো দাদাভাই । তোর মতো করে আমাকে কেউ বোঝেনা। বাবা মা চলে যাওয়ার পর তুই আমার একমাত্র সম্বল ।
-পাগলি মেয়ে একটা । কে বলেছে তোর বাবা মা নেই। আমি তো তোর সব ।
– আমার অপারেশন এর এত টাকা কী করে পাবি দাদাভাই ?
– কেন তোর দাদাভাই কি এত টুকু পারে না তার বোনের জন্য ? চিন্তা করিস না এতো ।
– আমি জানি তুই সব পারবি । তুই আমার সবার সেরা দাদাভাই ।
- আচ্ছা ,আস্ত পাগলি মেয়েই রয়ে গেলি ।
– তুই পাগল ।
২ মাস পর –
(সুপ্রিয়ার অপারেশন সফল । ওরা দুই ভাই বোনে শিলং বেড়াতে যাচ্ছে আর কিছুদিন পর)
দীর্ঘ অপেক্ষার পর সুপ্রিয়ার স্বপ্নপুরণ হল। অবশেষে মুক্তি পেল চার দেয়ালের গন্ডি থেকে।