পরম দা বাড়ি আছো?
অচিন্তর কথা শুনে পরম বেরিয়ে এলো বাইরে ।
আরে পরম যে, এসো এসো ভেতরে এসো ।
তা হঠাৎ এতো দিন পর এই দাদা কে মনে পরলো তাহলে!
না দাদা আসলে…
ঠিক আছে বুঝেছি,
– কই শুনছো আরে অচিন্ত এসেছে ওর জন্য কিছু জল খাবার নিয়ে আসে, আগে চা দিয়ে যেও ।
– আরে পরম দা এতো ব্যস্ত হয়ে না ।
– ব্যস্ত না হলে চলে নাকি । তা বলো তো এবার কি ব্যাপার যে এতো দিন পর উদয় হলে? মুখ দেখে তো মনে হচ্ছে বেশ বড়সড় কিছু গোল বেঁধেছে !
– হ্যাঁ দাদা , তুমি পরেশ মুখার্জী কে চেনো তো?
– তা তো চিনি । কি হয়েছে তাঁর আবার?
– ওনার কিছু হয়নি হয়েছে ওনার ছেলের বউ এর, দেহ পাওয়া গিয়েছে ; ওনাদের চিলে কোঠার ঘরে, দেহ ঝুলছিল ।
– বেশ তা কেনো করল আত্মহত্যা ?
– না দাদা এ আত্মহত্যা কিনা এখনো বলা যাচ্ছে না ।
– (পরম বোস এর স্ত্রী সরোজিনী দেবী চা হাতে এলো ) তা কেমন আছো ভাই অচিন্ত? গিন্নি আর তোমার দুই ছেলে মেয়ে কেমন আছে? আজ কাল যে আসছোই না দেখি ।
– না বৌদি আসলে কাজের চাপে ভীষণ ব্যস্ত ।আর মাঝে আমার মেয়ে টার খুব শরীরটা খুব খারাপ ছিলো। বিছানা থেকে উঠতে পারতো না।
(পরম বাবু উঠে নিজের শোয়ার ঘরের দিকে যায়, সিগারেট হাতে ফিরে আসে )
– ওমা তাই নাকি ! কই খবর পেলাম না তো, তা এখন কেমন আছে, ভালো আছে তো?
– হ্যাঁ বৌদি এখন অনেক ভালো আছে ।
– বেশ, তবে বসো তুমি কথা বল তোমার দাদার সাথে আমি কিছু জল খাবার এর ব্যবস্থা করছি ।
– হুম বৌদি ঠিক আছে।
– (সিগারেট ধরাতে ধরাতে পরম) নাও বল এবার তারপর কি হল ? (অচিন্তর দিকে একটা সিগারেট এগিয়ে দিয়ে) এই নাও তুমিও।
– (সিগারেট টা হাতে নিয়ে) দাদা পরেশ মুখার্জির ছেলের বৌ আত্মহত্যা করেনি । যদিও পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছে এটা আত্মহত্যা। আর পুলিশ ও তাই বলছে ।
– (পরম জোরে হেসে ওঠে) অচিন্ত তুমি তো মাস্টার মশাই জানতাম, তা ডাক্তার হলে কবে?
(সেই সময়ই বিথী এসে উপস্থিত হয়)
পরম আর অচিন্ত দুজনই আলাদা মানুষ । পরম খাদ্য দপ্তর অফিসে চাকরি করে । আর অচিন্ত একটা স্কুলের মাস্টারমশাই। পরম বিবাহিত হলেও কোনো সন্তান নেই আর অচিন্তর এক ছেলে এক মেয়ে । এদের বন্ধুত্বের কারণ হলো এরা দুজন এই রহস্য প্রিয় । গত পনেরো বছর ধরে এরা অনেক রহস্য উদঘাটন করেছে । যখন পুলিশ হাল ছেড়ে দেয় তখন এরা দুজন দায়িত্ব নেয় ।
বছর পাঁচেক হয়েছে এদের সাথে যুক্ত হয়েছে বিথী । যদিও বিথী অনেক টাই ছোট ওদের দুজনের থেকে । কিন্তু ছোট থেকে ওদের থেকে রহস্যময় গল্প শুনে ওর ও এই কাজের প্রতি আগ্রহী হয় । পরম এর বাড়ি থেকে একটা বাড়ী পরেই বিথীর বাড়ি । বয়সে অনেকটাই বড়ো হলেও সম্পর্কে পরম ওর দাদা হয় । বিথী কলেজ এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী এবার ।
তবে ওরা এই কাজের জন্য কেউ কিন্তু কোনো রকম পারিশ্রমিক নেয় না ।
– আরে পরম দা অচিন্ত দা আমাকে ছাড়াই শুরু করে দিয়েছ তোমরা ।
– (অচিন্ত) আরে তোকে ছাড়া কি করে শুরু করা সম্ভব, আসল খবর তোর কাছে ।
– (বিথী চিৎকার করে সরোজিনী দেবীর উদ্দেশে) বৌদি আমি এসে গিয়েছি আমার জন্য একটু জল আর পারো নিয়ে এসো । প্রচন্ড খিদে পেয়েছে । কলেজ থেকে সোজা তোমাদের বাড়িতেই এলাম ।
– (সরোজিনী) আচ্ছা বাবা দারা আমি এক্ষুনি কিছু নিয়ে আসছি, তুই চুপ করে বোস একটু আগে ।
– আমাকে একটু খেতে দাও তার পর কথায় আসি কেমন।
– (পরম) আচ্ছা বাবা বেশ । তোর বৌদি আগে থেকেই বিকেলের জলখাবার বানাচ্ছিল এই খাওয়ার এলো বলে ।
(খাওয়ার নিয়ে সরোজিনী হাজির । সকলে জলখাবারে লুচি আর আলুর দম খেলো)
এবার তারা কাজের কথায় ফিরলো আবার ।
– (পরম) নে এবার বলে ফেল কি কি জানিস ।
– (বিথী)আপাত দৃষ্টিতে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখলেও কিন্তু ওর সম্পূর্ণ শরীরে ক্ষত বিক্ষত ছিল।
১ম পর্ব ।