– (পরম) কী বলছিস এসব? মানে খুন?
– (বিথী) আমার গোয়েন্দা চোখ তো অন্তত তাই বলছে । কারন দেখ ক্ষত কিন্তু যেসব জায়গায় ছিলো সেই সব জায়গা গুলো কিন্তু ঢাকা ছিলো । এমনকি ওরা বডি ছুঁতে পর্যন্ত দিচ্ছিল না । আমি নেহাত কাঁদতে কাঁদতে পাশে গিয়ে দু একটা ভিডিও করে নি সবার আরালে ।
আর দু-পায়ের গোড়ালি দিক টা তে শিরা কাঁটা ছিল, আর এক হাতের শিরা কাঁটা ছিল । যদিও বক্ত একদমই ছিল না । আমার মনে হচ্ছে অনেক বুদ্ধির সাথে কাজটা করেছে । যাতে সাপ ও মরে আর লাঠিও না ভাঙ্গে ।
আর আমি এও শুনেছি ওনার ছেলে প্রেম করে বিয়ে করায় তাঁরা নাকি বউকে একদম পছন্দ করত না ।
-(পরম) তবে তুই কি ভাবছিস ওনারাই ?
-(বিথী) এও শুনেছি শেষের দিক টায় নাকি ছেলে-বউ এর বনিবনা ছিলো না । তবে কি বিষয়ে এমন ছিল তা জানি না ।
-(অচিন্ত) কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখা যায় না । তবে আমাদের তদন্তের ভার দিয়েছে কিন্তু মুখার্জী দার ছেলে নিজেই ।
-(পরম) তবু ওকেও সম্পূর্ণ বিশ্বাস করার কারণ নেই । এর আগেও এরকম অনেক হয়েছে যারা তদন্ত করাতে আসে আসলে দোষী ।
-(বিথী)আচ্ছা আমার তো ভালো করে একবার ভিডিও টা দেখতেই পারি ।
-(পরম) হুম দে দেখি ।
(পরম আবার একটা সিগারেট ধরাতে ধরাতে ভিডিও দেখতে বসল)
ভিডিও তে হঠাৎ দেখা গেল মুখের কাছে অল্প ফেনা ।
পরম বুঝলো এটা কোনো ভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না ! তদন্ত শুরু হলো । প্রথম তদন্ত শুরু হলো মুখার্জীর ছেলে বিজয় কে দিয়ে । সে জানায় -তাদের বিয়ের চার বছর হয় । প্রথম প্রথম খুব ভালো ছিল কিন্তু দিন দিন বদলে যাচ্ছিল । বিজয় কিছু বুঝতে পারছিল না কি হয়েছে, জিজ্ঞেস করলে চুপ থাকতো । এর পর জিজ্ঞেস করা হয় মুখার্জী বাবু ও তার স্ত্রী সাথে । তারাও একি কথা জানান । তাঁরা এও জানায় তাদের অমতে বিয়ে করায় প্রথমে আপত্তি থাকলেও পরে ভালো ভাবেই মেনে নেয় ।
সব শেষে ওদের বাড়ির পরিচারিকা সাথে কথা হয় । সেই পরিচারিকার কথায় অনেক অসঙ্গত দেখা যায় । অনেক জিজ্ঞাসাবাদ এরপর সত্যি কথা সামনে এলো । সে শেষে জানায় যে সেই বউমা কে খুন করেছে । কারন জিজ্ঞেস করলে বলে- বছর তিন আগে তার মেয়ে বিজয় কে না পাওয়ার জন্য আত্মহত্যা করেছে, আর সেই বিষয়ে বিজয় এর স্ত্রী সব টাই জানতো তাই চুপ করে থাকত এক রকম মানসিক আঘাত এর জন্য । কিন্তু ওদের বাড়ির পরিচারিকা বিজয় ও তার স্ত্রী এর এমন ভালো সম্পর্ক কোনো ভাবেই আর সহ্য করতে পারছিল না ।
তাই প্রথমে খাওয়ার এর সাথে বিষ মিশিয়ে খাওয়ালে কিছু তা নেতিয়ে পরলে , হাত ও পায়ের শিরা কেটে দেয় । তার পর বিষ এর প্রভাবে মুখ থেকে বেরোনো ফেনা মুছে দেয় আর হাত-পা দিয়ে বেরনো রক্ত যত্ন সহকারে পরিস্কার করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয় যাতে সবাই আত্মহত্যা বলে ভেবে নেয় । কিন্তু ওর এটা জানা ছিলো না যে তদন্ত এতো গভীরেও যেতে পারে ।
এর পর সেই পরিচারিকা কে পুলিশ এর হাতে তুলে দেওয়া হয় ।
এতোদিন এর তদন্তের পর দোষী ধরতে পেরে ওরা তিন জনেই ভীষণ খুশি । আবার পরম এর বাড়ীতে বসে চা ও জলখাবার এর সাথে একটু আড্ডা বসে । সেই দিন অচিন্ত ও তার বৌ-বাচ্চা দের নিয়ে আসে । আর ওর ছোট ভাই টাকে আনে । সকলে মিলে একটা বেশ জমজমাট আড্ডা হয় সেই দিন ।
সমাপ্ত ।