প্রথমে সম্পর্কটার মধ্যে টান, ভালোবাসা থাকলেও এখন রৃতিকা রনিতকে সহ্য করতে পারে না। এইসব আর তার ভালো লাগে না। ধ্রুব রৃতিকার এখন মনের মানুষ হয়ে গেছে। ধ্রুব অনেক বড় ডাক্তার। ভবিষ্যৎ আছে। যেটা রনিত এত বছর ধরেও করতে পারেনি। রৃতিকার মনে হয় প্রেম করতে হলে ভবিষ্যত থাকা উচিত। অন্যদিকে রনিত ফোন করে করে পাগল হয়ে যায়। যদি রৃতিকা তাকে একটু সময় দেয়। কিন্তু মেয়েটি আর ফোন তোলে না, আর তুললেও সারাক্ষণ ঝামেলা হয়। অতিরিক্ত ভালোবাসলে বুঝি এমনই হয়। রনিত সব বোঝে তবুও কিছু বলেনা একটা সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।
এদিকে রৃতিকা ভীষণ ব্যাস্ত ধ্রুব এর সাথে। ঘোরাঘুরি, শপিং এই করতে করতে ওদের সময় কেটে যায়। ধ্রুব ছেলেটা ভালোই, তবে একটু দোষ আছে। অনেক মেয়ে ওর ওপর ক্রাশ খায়। তাই ও ডেটিং-এ যেতে ভালোবাসে। রৃতিকা অনেকবার বারণ করলেও ধ্রুব কখনো শোনেনি। অন্যদিকে রনিত ভালোবেসে মরতে পযন্ত গিয়েছিল সেটা রৃতিকা জানে, তবুও কিছু যায় আসে না। কারন ও তো আর রনিতকে ভালোবাসেনা। রৃতিকার ছুটি পড়েছে। বাড়ি ফিরছে সে ৮ মাস পর। রনিত খবর পেয়েছিল ওর কাছের বন্ধুদের থেকে। পাড়ার মোড়ে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে ছিল। দেখতে পায় ধ্রুব এর গাড়ি থেকে রৃতিকা নামছে। রনিত অবাক হয়ে যায়। এই সেই মেয়ে যে কিনা রনিতকে ভালোবাসতো। কেমন যেন পাল্টে গেছে সেই মেয়েটা।
রনিত ওকে আর দেখা দেয় না। বাড়ি ফিরে ঠিক করে মায়ের দেখা মেয়েকেই বিয়ে করবে। ওর মা খুব খুশি হয়, এতদিন পর ছেলে রাজি হয়েছে। তাই ওর মা সপ্তাহের মধ্যে বিয়ের ঠিক করে। রনিত এখন ছোটোখাটো চাকরি পেয়েছে। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর রনিত বউ নিয়ে কাজের জায়গায় চলে যায়। কোনো টান, মায়াই রাখতে চায়না সে।
এদিকে রৃতিকা পুড়ছে, ঠিক যেমন রনিত ভালোবেসে পুড়েছিল। ধ্রুব ওকে ছাড়তে চায়। রৃতিকাকে জানিয়ে দেয় তার কোনো যোগ্যতা নেই। গ্ৰামের মেয়ে কে বিয়ে করতে পারবে না। এখন ধ্রুব অন্য কাউকে ভালোবাসে। প্রেম এতটা বেদনাদায়ক তা যে প্রেম করেছে সেই বোঝে। এদিকে রৃতিকার আর ফেরার পথ নেই।
কান্না মোছাবার জন্য সেই হাত টা আর নেই। চিরকালের জন্য সেটা সে নিজেই হারিয়ে ফেলেছে। আজ তার নিজের ওপর ঘৃণা হচ্ছে। তার মনে হলো রনিতকে ঠকিয়েছে বলেই আজ তার এই করূন অবস্থা। তাই কোনো উপায় না পেয়ে সে মৃত্যুর সিধান্ত নিল। মৃত্যু এতটাও সহজ নয়, চাইলেই মুক্তি পাওয়া যায় না। না, রৃতিকা মারা যায়নি। তবে মাথায় আঘাত পেয়ে স্মৃতি লোপ পায়। ডাক্তার রাও কিছু করতে পারে নি। প্রেম যে এতটা ভয়াবহ হতে পারে তাই কেউ জানেনা। আজও রৃতিকা রনিতের নাম ধরে চিৎকার করে ওঠে মাঝে মাঝে। কিছু ভালোবাসার শেষ বলে কিছু নেই।