১
টাইম মেশিন সম্বন্ধে একটা বিস্ময় ছোট থেকেই সবার মনে জায়গা নিয়ে রেখেছে।
ফেলে আসা সুখ-দুঃখের মুহূর্তগুলো থেকে শুরু করে অজানা ভবিষ্যৎ, সবই চোখের সামনে ভেসে উঠবে টাইম মেশিনটায় চড়ে বসলেই, – এমন ধারণা সবার মনে মনে উঁকি দিচ্ছে প্রতিদিন।
তবে সত্যিই কি সম্ভব ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হয়ে ওঠা? ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু যেমন চড়ে বসেছিল প্রফেসর রন্ডীর ইনভেনশনে, সেরকমটা কি সত্যিই সম্ভব?
একশো বছর পর পৃথিবীর চেহারা কেমন হবে?
একশো বছর আগেই বা কেমন ছিল আমাদের বসুন্ধরা? কীভাবে ঘটেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ?
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরই বা কী অবস্থা হবে মানব জাতির?
কিংবা যাদের সেসব নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই, তাদের মনে উত্তেজনা জাগতেই পারে নিজের ছোটবেলাটা একবার ফিরে দেখার, কিংবা নিজের শেষ জীবনটায় একবার ঘুরে আসার।
তাহলে সত্যিই কি সম্ভব নিজের অতীত কিংবা ভবিষ্যতটা নিজের চোখে দেখা?
২
টাইম মেশিন আদৌ আবিস্কার হবে কিনা,
আইনস্টাইনের ধারণা অনু্যায়ী সাতাশ নম্বর ডাইমেনশনে পৌঁছালেই আমরা ভবিষ্যৎ দেখতে পারবো কিনা,
কিংবা আলোর বেগের সাথে পাল্লা দিয়ে আমরা সশরীরে ভবিষ্যতে পৌঁছে যাবো কিনা….
সে ব্যপারে মাথা না ঘামানোই ভালো। দেশ বিদেশের অনেক তাবর তাবর বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।
তবে মজার বিষয় হল যে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ কোনোপ্রকার যন্ত্র ছাড়াই দেখতে পারি।
নাহ কোনো যন্ত্রের দরকার নেই। যতটুকু যা দরকার ততটুকু আমাদের কাছেই রয়েছে।
কীভাবে দেখবো ভবিষ্যৎ? –
৩
হাবু অঙ্কে লবডঙ্কা। এক্স আর ওয়াই সবসময় গুলিয়ে যায়।
পরীক্ষায় প্রায় সাদা খাতা জমা দিয়ে চলে এসেছে। এবার হাবুর মা বলছে হাবু অঙ্কে ফেল করবে।
হাবুর বাবাও তাই বলছে এমনকি হাবু নিজেও জানে সে ফেল করবে।
প্রশ্নটা হচ্ছে তারা কীভাবে জানল? কারণ রেজাল্ট তো ভবিষ্যতের কোনো একটা দিনে বের হবে তবে বর্তমানে বসেই হাবুর পরিবার কীভাবে ভবিষ্যৎ দেখলো?
তারা কি কোনো যন্ত্র দিয়ে টাইম ট্রাভেল করলো?
নবমীর রাতে তুমি ঐ শাড়িটা পড়বে কিংবা সরস্বতী পুজোয় তুমি এই পাঞ্জাবীটাই পড়বে কীভাবে বলতে পারো কয়েকমাস আগেই?
কে.এফ.সিতে প্রতিদিন গ্রিল্ড চিকেন সাটালে তোমার শরীরে জমবে মেদ, পক্ষান্তেরে ডায়েট চার্টটা ঠিকমতো মেইনটেইন করলে পেতে পারো সুন্দর একটা ফিগার, কীভাবে বলতে পারো?
কীভাবে বলতে পারো চোখ বন্ধ করে একশোতে বাইক ভাগালে দুর্ঘটনা নিশ্চিত?
৪
সত্যি তো এটাই আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।
আর তাদের মধ্যে যে ভবিষ্যৎগুলো খুব নিকটে, সে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারি।
আর আমাদের এই ভবিষ্যৎ দাঁড়িয়ে আছে আমাদের বর্তমানের ক্রিয়াকলাপের মধ্যে।
আমরা চাইলেই আমাদের বর্তমানকে বদলে দিতে পারি।
আর যদি তা বদলে যায়, আমাদের ভবিষ্যতও বদলে যাবে নিমেষে।
ধরে নাও গাড়ি নিয়ে চলছো তুমি, এবার তোমার গাড়ি, তোমার সিদ্ধান্ত, -তুমি কোন রাস্তায় গাড়ি নিয়ে যাবে।
তোমার উপরেই সবকিছু দাঁড়িয়ে।
৫
সত্যিই কোনোদিনও টাইম মেশিন আবিস্কার হবে কিনা জানা নেই।
তবে একবারটি ভেবে দেখো, ভবিষ্যত কিংবা অতীত দেখার জন্য আমাদের কিচ্ছুর দরকার নেই।
শুধু এভাবেই গাড়ি চালালে, কোন রাস্তায় পৌঁছে যেতে পারো, সে বিষয়ে সঠিক ধারনা থাকা আবশ্যিক ।