মেঘনার আজ ২৫ বছরের জন্মদিন, আর সেই জন্মদিন পালন হচ্ছে নিখিল ও মেঘনার স্বপ্নের জায়গা ‘মেঘনিল’ ক্যাফেতে, তাই নিখিল আজ তার স্বপের ক্যাফেতে নিজের হাতে কেক বানিয়েছে তার প্রিয় মানুষটার জন্য। নিখিলের বয়স ২৮, সে একটি বেসরকারি অফিসে কর্মরত।
কিন্তু তার শখ হল নিত্যনতুন রান্নাবান্না করা, আজকাল নিখিলের অবসরযাপন মানেই হল রান্না করা এবং নিজের স্বপ্নের ক্যাফে মেঘনিল তৈরি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা। নিখিল যখন প্রথম ভাবে যে সে তার একটা নিজস্ব ক্যাফে খুলবে নিখিলের বাবা-মা একটু আপত্তি জানায়, তাদের ছেলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে তার স্বপ্নের ক্যাফে খুলবে সেটা ওর বাবা-মা মেনে নিতে পারেনি; কিন্তু মেঘনা জানে নিখিলের হাতে যাদু আছে তাই নিখিলের স্বপ্নের ক্যাফে খুব ভালই চলবে।
একমাত্র মেঘনা যে নিখিলের এই ইচ্ছেটাকে প্রাধান্য দিয়ে তার পাশে এসে দাঁড়ায়, এমনকি নিখিলের বাবা-মাকেও বোঝানোর চেষ্টা করে যে নিখিল যেটা করছে সেটা ভুল নয়। মেঘনাকে পাশে পেয়ে নিখিল অনেকটা মনের জোর পায় এবং একটু একটু করে তার স্বপ্নের ক্যাফে তৈরি করার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে থাকে।
নিখিলদের বাড়ির সামনে একটা ছোটো ঘর ছিল সেটাকে দুজনে মিলে ঝেড়ে মুছে পরিষ্কার করে নিল এখানেই হবে ওদের স্বপ্নের ক্যাফে। এরপর ওদের সামান্য সঞ্চয় থেকে সুন্দর সুন্দর লাইট কিনে, টেবিল চেয়ার দিয়ে ভালো করে স্বপ্নের মতো করে ক্যাফেটা সাজিয়ে ফেলল। যেদিন ক্যাফে সাজানোর কাজটা শেষ হল সেদিন মেঘনা আর নিখিলের মুখে আনন্দ ঝলমল করছে, অনেকটা খাটনি গেছে ঠিকই তবে তাদের স্বপ্নের ক্যাফে ‘মেঘনিল’ সেজে উঠেছে।
মেঘনার কাছে নিখিলের এই স্বপ্নটাই তখন যেন সবথেকে বেশি আপন হয়ে উঠেছে, খুব শীঘ্রই ওরা ক্যাফে চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের অনেকগুলো দিন থাকে উদযাপন করার মত, স্কুল-কলেজে পড়ে এমন ছেলেমেয়েরা এইসময় ভিড় জমায় বহু ছোট-বড় ক্যাফেতে আর সেই ভেবেই মেঘনা নিখিল তাদের স্বপ্নের ক্যাফে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে চালু করবে ঠিক করল।
যেমন ভাবা তেমন কাজ, নিখিলকে চাকরিটা ছাড়তে হলো তবে এবার নিখিলের বাবা-মা আর আপত্তি করেনি; দুটো ছোট ছোট ছেলে মেয়ের এতোটা কাজের উদ্যম দেখে তারাও ভরসা রেখেছে ওদের উপর। প্রথম দিকে তেমন লোকজন না হলেও, ধীরে ধীরে ক্যাফেতে ভিড় বাড়তে শুরু করল আর নিখিলের রান্নার যাদুতে ভালোই চলতে লাগলো নিখিল ও মেঘনার স্বপ্নের ক্যাফে ‘মেঘনিল’।