ষষ্ঠী থেকে নবমী ঘরের মেয়ে উমার আরাধনার পর আসে মনখারাপের দশমী।এবার যে বাপের বাড়ির পাট চুকিয়ে কৈলাসে ফেরার পালা। বছরে মাত্র চারটে দিনই বাপের ঘর আলো করে পূজিত হয় দেবী দুর্গা। বোধন থেকে ঘট বিসর্জন এই লম্বা প্রক্রিয়াতে বিদায়ের করুন সুর বেজে ওঠে নবমীর রাত থেকেই। মর্ত্যবাসী আকুল প্রার্থনা করে ” ওরে নবমী নিশি না হইও রে অবসান” মাটির মূর্তির দুই চক্ষু তেও যেন নেমে আসে জলের ধারা। পিতার ঘরের আদর যত্ন ত্যাগ আবার সংসারে ফেরা। পুজোর পাঁচ দিনের আনন্দ যেন নিমেষে যন্ত্রনায় পরিণত হয় দশমীর দিন। দুর্গা পুজো মানেই অনেক উপাচার, নিয়ম নীতি ও তিথি মেনে পুজো। চক্ষু দান থেকে বিসর্জন বনেদি বাড়ি কিংবা বারোয়ারি পুজো হরেক নিয়মের সাথে আমরা মাঝে মাঝেই পরিচিত হই । খবরের কাগজ বা টিভির পর্দায় সেটা আমরা পুজো exclusive হিসেবে কভার হতে দেখি। কিন্তু কালের নিয়মে হারিয়ে যাওয়া অনেক বনেদি বাড়ি কিংবা বাড়ির পুজোর নিয়ম কিন্তু লোক মুখে এখনও প্রচলিত রয়েছে। ধ্বংসস্তূপ হয়ে অতীতের গর্ভে তলিয়ে গেছে জমিদার দালান ,শরিক রাও ভাগ হতে হতে আজ প্রায় বিলীন। কে কোথায় আছে কি ভাবে আছে বা আদৌ আছে কিনা তা হয়তো জানা যায়না। কিন্তু এককালের উজ্জ্বল বনেদিয়ানায় ঐতিহ্যের গৌরবে সেই বাড়ির প্রচলিত রীতি আজ ও সমাজের মুখে মুখে ফেরে গল্প কথা হিসেবে।সেই রকমই এক বিশেষ প্রথার কথা জানাবো আজ।
এটাও পড়ুন : জোড়া ইলিশ আঁশ মাহাত্ম্য
দশমীর সকালে দেবীর ঘট বিসর্জনের পরেই গৃহস্থ্য এর ঘরে স্থাপন হতো আরও একটি ঘট। যাকে এক কথায় মঙ্গল ঘট ও বলা যেতে পারে। এটি বিশেষত বরিশালের প্রথা। প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে বরিশাল জেলার বিরমহল গ্রামের ঘরে ঘরে এই রীতি প্রচলিত ছিলো। দশমীর দিন সকালে বাড়ির মহিলারা বাড়ির সামনের উঠোন গোবর দিয়ে নিকিয়ে শুদ্ধ করতেন। তারপর সেই নিকোনো উঠোনের একপাশে মাটি দিয়ে ছোট আকারের একটি বেদি বানানো হতো পবিত্র ঘটটি স্থাপন করবার জন্য। বেদি অলংকৃত হতো শুভ্র আলপনায়। সেই আলপনায় ফুটে উঠতো সিঁদুর কৌটো , ধানের ছড়া, স্বস্তিক চিন্হ। সমগ্র বিষয়টি ই করা হতো অত্যন্ত নিপুন ভাবে। বাড়ির মহিলাদের নিয়ম নিষ্ঠা ভক্তির সংমিশ্রণে গড়ে উঠতো ঘটের বেদি।
দশমীর দিন সকালে বেদি বানানোর পর বাড়ির বিবাহিত মহিলারা স্নান করে পরিষ্কার কাঁচা বস্ত্র পরে পুকুর ঘাট থেকে ঘটে জল ভরে এনে তা বেদিতে স্থাপন করতেন। ঘটের গায়ে থাকতো সিঁদুরে আঁকা পুত্তলি। জলভর্তি ঘটের উপরে দেওয়া হতো আমের পল্লব , ফুল , সিঁদুর।
দশমীর সকালে এই কাজটি সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর বিকেল বেলায় বাড়ির কর্তারা সাদা ধুতি ও পাঞ্জাবি পরিধান করে গায়ত্রী মন্ত্র জপ করতে করতে ঘট প্রণাম করতো।এরপর ছিল বাড়ির মেয়েদের পালা। মাথায় ঘোমটা দিয়ে হাটু মুড়ে ঘটের সামনে মাথা ঠেকিয়ে চলতো প্রণাম পর্ব। পরিবারের সুখ শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় এই ঘট স্থাপন করা হতো এমনটাই শোনা যায়। পরিবারের সকল সদস্যের সুস্থতা সৌভাগ্য মঙ্গল প্রার্থনায় পালন করা হতো এই রীতি।
এরপরেই শুরু হয়ে যেত বিজয়ার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন পর্ব। বাড়ির ছোটরা বয়োজ্যেষ্ঠ দের প্রণাম করার পর শুরু হতো মিষ্টি মুখ। যার মধ্য অন্যতম ছিলো নারকেল নাড়ু ও নারকেল তক্তি।ঘরের গাছের নারকেলের তৈরি মিষ্টির স্বাদ ও ছিলো অতুলনীয়। বিজয়া দশমীর মিষ্টিতে প্রাধান্য পেতো নারকেল।।
বনেদি বাড়ির মানুষদের দম ফেলার ফুরসত কিন্তু মিলতো না।দশভুজার আরাধনার পর এই মঙ্গল ঘট রীতি তারপরেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যেত লক্ষ্মী পুজোর। কোজাগরী তিথিতে লক্ষ্মী দেবীর পুজোর পর সেই মঙ্গল ঘট বিসর্জন হতো। বছর পঞ্চাশের আগের এই প্রথা এখনও বিরমহলের ঘরে ঘরে প্রচলিত আছে কিনা তা অবশ্য জানা যায়না। কিন্তু কান পাতলেই শোনা যায় এই ঘট কথা। ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বাড়ি ভেদে প্রথার কিছু বদল হয়তো বা ছিলো আন্দাজ করে নেওয়া যায়।বাঙালি উৎসব প্রিয় বরাবর। পারিবারিক এই রীতি রেওয়াজ ই তার প্রমান। পারস্পরিক সৌহার্দ্যতা ও বজায় থাকতো এই সকল প্রথার মধ্যে দিয়ে।
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
This website uses cookies.