কিছু স্বপ্ন শুরু হবার আগেই শেষ হয়, বা শুরু তেই শেষ হয়ে যায় তবে আজগেরটা বাস্তব।
সদ্য বিয়ে হয়েছে কুনালের। পূজা আজ নিজের হাতে খাবার বানিয়ে দিয়েছে। আলু-পোস্ত, ডাল আর ভাত। আজ পূজার ইচ্ছে ছিলনা কুণালকে অফিসে যেতে দেবার। সদ্য বিবাহ ভালোবাসার ছোঁয়া পাওয়া স্বাধীন ভাবে, একে অপরের এই বিশেষ সময়টা খুবই কল্পনাপ্রবন ও স্বপ্নের মনে হয়। ওদের Arranged Marriage, কিন্তু অনুভূতি গুলো সেই প্রথম প্রেমের মতোই।
যাই হোক অনেক বুজিয়ে কুনাল বাড়ি থেকে বেরোল অফিস যাবার জন্যে, কিন্তু পূজার মন চাইছিল না আজ কুনাল অফিস যাক।
কিন্তু কুনালের দিকটাও বুজতে হবে, বিয়ের কারণে ১০ দিন অফিস ছুটি করেছে, তার পর আজ 2nd working day, তাছাড়াও আবার পরের সপ্তায় হানিমুন এর জন্যে 15 দিন এর ছুটির প্রয়োজন – সব মিলিয়ে আজ কুনালের আর পূজার মন রাখা হলনা। বউ কে বুঝিয়ে কোনো মতে অফিস এর জন্যে বেরোলো।
কিন্তু কুনালের কিছু করবার নেই, ওর নিজের ও খুব কষ্ট হচ্ছিল, ওউ চাইছিল পূজার সাথে দিনটা কাটাতে।
যাক, বাইক নিয়ে কুনাল অফিসের পথে রওনা দিল, তার মনের মধ্যে তখন কেবল পূজার সেই অভিমানী মুখটা ভাসছে।
বাইকে চালাতে চালাতে দেখল বেশি তেল নেই, সে ভাবলো সামনের পেট্রল পাম্প থেকে ভরে নেবে।
আবার তার পূজার সেই অভিমানী মুখটা খুব মনে পরতে লাগলো, সে ফোন টা বের করে ফোন করল, কিন্তু পূজা ফোন ওঠালো না।
সামনেই কুনাল পেট্রল পাম্প দেখতে পেলো, Right Side এ পাম্পের দিকে ইন্ডিকেটর মেরে বাইকটা ঘোরাতেই, পেছন থেকে একটা AC বাস কুনালের বাইকটাকে সজোরে ধাক্কা মারলো, অনেকটা দুড়ে ছিটকে পড়লো রাস্তার ওপর। আবার সেই বাসটা না থেমে কুনালের বুকের ওপর দিয়ে চলে গেল।
রাস্তার ধারের সব মানুষ ছুটে আসলো।
তখন কুনালের সারা শরীর রক্তে ভরে গেছে,
কিন্তু কুনালের চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগলো। তার দেহ শান্ত, কিন্তু চোখে জল ।
জানিনা বা জানা হলোনা কুনাল কেন কাঁদছে, হয়তো সে এইটা ভেবে কষ্ট পাচ্ছে যে সে তো আর বাঁচবে না, কিন্তু তার মা, বাবা বা তার সেই প্রিয় পূজার কী হবে?
আমি জানিনা ওই সময় কুনাল কী ভেবেছিলো, তবে হয়তো আমি হলে এমনই কিছু ভাবতাম।
শুরুতেই শেষ
Facebook Comments Box