তিতাস

আজ সকাল হতেই আকাশ মেঘলা। কালো কালো মেঘ গুলো কী ভীষণ রাশভারী। ওদের দেখলেই মনটা কেমন যেন খারাপ হয়ে যায়। আজ সকাল থেকে এমনিতেই মন খারাপ তিতাসের। ঘরের এক-চিলতে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে সে। আজকের দিনটি এমনিতেই মন খারাপের দিন। আজকের দিনই দিম্মা তাকে ছেড়ে নক্ষত্রের দেশে চিরতরে হারিয়ে যায়। আর এই আজকের দিনই অনুরোধও…।
খুব বাজে লাগছে তার। কি যেন অস্বস্তি ধীরে ধীরে গ্রাস করছে তাকে।

তিতাসের এই ছোট্ট এক কামরার ফ্ল্যাট টা তে সে তার নিজের একটা অন্য জগত নিয়ে বাস করে। এই শহরে সে একেবারে একা, ঠিক তার এক-কামরার এই ছোট্ট ফ্ল্যাটটির মত। এরই এক-চিলতে ব্যালকনিতে সে সৃষ্টি করেছে একটি ছোট্ট বাগান। তার একাকীত্বের সঙ্গী এই বাগান। নানান ফুলের গাছ গুলো তার মন ভালো করে দেয় নিমেষেই। ভীষণ ভালোবাসে তিতাস এদের। রোজ নিয়ম করে জল দেয়, আদরের স্পর্শ এঁকে দেয় তাদের গায়ে। ভালোবাসা স্বরূপ গাছ গুলিও তাকে ফুলে ফুলে ছেয়ে দেয়। পথচারীদের চোখেও সে দৃশ্য লুকানো থাকে না। সূর্যমুখী গুলো উৎসুক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে তিতাসের দিকে।
তিতাস ওদের একটু আদর করে দেয় হাত দিয়ে।

মন টা ভালো হতে থাকে তার একটু একটু করে। অফিস ছুটি আজ তাই আজ একটু অন্যরকম ভাবে সময় কাটায় সে। স্নান সেরে রিহাস কে ফোন করে। আজ ওর সাথে একটু দেখা করবে।
তৈরি হয়ে নেয় তিতাস। নীল ডেনিমি জিন্স আর একটা হোয়াইট শার্টটিতে বেশ উজ্জ্বল দেখায় তাকে। বেরিয়ে পরে তিতাস।
রিহাসের সাথে তিতাসের পরিচয় একটি পার্টিতে। সুনন্দার বার্থডে পার্টিতে দেখেছিল প্রথম রিহাসকে সে। গিটারে সুর তুলে দারুন একটি গান গেয়েছিল সেদিন রিহাস।
“আও হুজুর তুমকো, সিতারো পে লে চলে।”

উফফ! ভাবলেই এক অন্য অনুভূতির সঞ্চার ঘটে তার শরীরে। গান টা চালু করে নিজের ফোনে, হেড ফোন টা গুঁজে দেয় কানে।
বেলা ১২ টা নাগাদ পৌঁছলো সে রিহাসের ফ্ল্যাটে। রিহাসও একাই থাকে এই শহরের বুকে। বছর ২৭-২৮ এর ছেলে রিহাস।

(চলবে)

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *