ক্রিং ক্রিং ক্রিং… (রিং হচ্ছে অর্পিতা-র ফোন।)
– আরে ঘুমোলি না কি !? এই তো ধরেছে।
– হুম বল!! কী রে এ সময়!!
– এই অর্পি শোন না আজ একটা ঘটনা ঘটেছে !!
– কী!? বল!! (ঘুম ঘুম কন্ঠে হাই তুলতে তুলতে)
– আমি dinner এর পর বেলকনি তে দাড়িয়ে সিগারেট টানছি লাম এমন সময়…
– তুই আবার ওসর ছাইপাস ছুঁয়েছিস্!! তোকে না কতো বার বারণ করেছি ? তুই আমার কথা শুনবি না বল!?কেনো-ই বা শুনবি আমি কে হই ? আমার তো তোর জীবনে কোনো দাম নেই … (রাগ মিশ্রিত খেয়ালী কন্ঠে)
– আরে আরে শোন না রাগ করিস না!! তুই তো আমার সবথেকে কাছের বন্ধু বল !? তুই তো আমার কাছের মানুষ। বাবা-মা চলে যাবার পর তুই ছাড়া কে আছে বল আমার ? তুই তো আগলে রেখেছিস্ মা এর মতো করে।
[কাকু-কাম্মা-র কথা কানে আসতেই emotional হয়ে অর্পি বললো।]
– আঃ ছাড় ওসব কিন্তু কথা দে আর ছুবি না!! এবার বল কী হয়েছে ?
– ঠিক আছে আস্তে আস্তে চেষ্টা করবো!! আরে ব্যাপার হচ্ছে কী যে তরুণ কাকুদের বাড়িতে একটা নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে…!!
– তোঃ!! এই কথা বলার জন্য আমার ঘুম ভাঙ্গালী!? বা…
– আর না না!! শোন না একটা মেয়ে এসেছে, বেশ দেখতে!!
– ওঃ আচ্ছা এই ব্যাপার !! তা আমাকে কী করতে হবে ?
– তোকে একটু… ছাড় পরে হবে এখন ঘুমা… টাটা!!
– বুঝেছি!! তোর স্বভাব যাবে না। (দুষ্টুমি হাসি হেসে)
– হিঃ হিঃ উম্মা…!! এই জন্য তো তুই আমার সন্টা বেষ্টি। (দুষ্টুমি হাসি হেসে)
– নে এবার ঘুমা কাল কথা হবে।
– হুমঃ টাটা (হাই তুলতে তুলতে)
এ বাবা আমার পরিচয়টা-ই তো দেওয়া হয়নি!!
আমি আবির, যাদবপুরের গড়ফা’র আদি বসু বাড়ির একমাত্র বংশধর। একমাত্র বলতে যখন আমি স্কুল শেষ করে সবে কলেজে ভর্তি হব এমন সময় বাবা-মা দুজনেই এক্সিডেন্টে মারা যায়। তখন থেকে আমার একমাত্র কাছের জায়গা অর্পি মানে অর্পিতা।আর হ্যাঁ ওটা কিন্তু আমার কাজের মাসি ও বটে !! আরে হ্যাঁ ঠিক শুনেছেন। রোজ সকালে ওর ঘুম ভাঙলে নিজের কাজকর্ম গুছিয়ে আমার বাড়ি আসে, এই কাছেই ওর বাড়ি। লক্ষণকুঠি !? লক্ষণকুঠির দত্ত বাড়ির ছোট মেয়ে। সকালে উঠে অর্পির ডিউটি আমার বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেলটার উপর অমানবিক অত্যাচার করা সেই আওয়াজে আমার নিদ্রা নিপাত। তারপর গেট খুলতেই হুড়মুড় করে ধুকে আমার জামা কাপড় কাচা হোক বা রান্না মোটামুটি গুছিয়ে আমার সাথে কলেজ যাওয়া বুঝলেন তবে কী জালাতে রয়েছি আমি ? যাই হোক এখন ঘুমাতে যায় কাল সকালে আবার অত্যাচারীর আগমন ঘটবে। টাটা…!!
টিং …টং…টিং …টং…টিংটং…টিংটং…
আলস্য ছাড়তে ছাড়তে ঘুম ঘুম চোখে উঠে দরজার খুলতেই…
– কতক্ষণ লাগে !? দরজা খুলতে ? সর দেখি !!
অন্য দিকে সজোরে হাই…
– আ…আ…আও…!! যাই ব্রাশটা করে আসি।
– যা আমি চা বানাচ্ছি, তাড়াতাড়ি আয়।
মোটামুটি সব গুছিয়ে অর্পি চলল বাড়ি স্নান আগে নিজে ফেলে আসা বাকি কাজ করে আবার একসাথে কলেজ যেতে হবে।
– ভাত ডাল আর ডিম ভাজা করা আছে খেয়ে নিস। আর সময় মতো আমাকে নিতে আসিস। আর হ্যাঁ জামাটা সোফার উপর রাখা আছে। আর ওই ব্যাপারটা বিকেলে দেখছি। এখন টাটা…!!
– হুম!!
ঘড়ির কাটায় দশটা তিরিশ আবির পৌঁছে গেছে যথারীতি অর্পির বাড়ির সামনে….
– আসছি মা!! বাঁদর টা চলে এসেছে!!
– হু, সাবধানে যাস আর লুচি তরকারি করে দিয়েছি দুজন মিলে খেয়ে নিস্।
– চল…!! (অর্পি আবির কে বললো।)
টিফিন টাইমে দুজন গাছ তলায় বসে…
– আজ কী মেনু আছে রে ?
– আজ আমি নয় তোর কাকিমা বানিয়েছে।
– wow!! তারমানে আজকেরটা খাওয়ার উপযুক্ত । (দুষ্টু হাসি হেসে)
– আচ্ছা !! আমার তৈরী অনুপযুক্ত তাইতো ? ওই খেয়েই তো বেঁচে আছিস।
– কি করব বল আমার তো মা নেই।
– চুপ মন খারাপ করবি না একদম। চল খাবারটা খেয়ে নিই।
অর্পি ব্যাগ থেকে টিফিন কৌটোটা বের করতে হামলে পরল আবির !! তারপর দুজন মিলে চেটেপুটে খাবার শেষ করে বাড়ি যাবে বলে ঠিক করলো অর্পি।
– চল তাহলে।
– বিকেলে আমার বাড়িতে আসিস একটু ফুচকা খেতে বেরোবো।
– আমার তো পড়ানো আছে।
– ওটা শেষ করেই আসতে বলেছি। সব কথা কি তোকে ভেঙে বলে দিতে হবে নাকি ? তার আগে আমি খোঁজ নিয়ে রাখবো তার কথা।
– ঠিক আছে বাবা ঠিক আছে, এবারে চল।
পড়ানো শেষ করে আবির অর্পির সাথে দেখা করলো।
– দাদা একটু ঝাল বেশি দেবেন। (আবির)
– আরে ওই মেয়েটাকে তো আমি চিনি। ওর নাম তন্দ্রা। ওর বাবা আমার বাবার অফিস কলিগ সেই সূত্রে একটু পরিচয় আছে।
– আচ্ছা আর কিছু ?
– না আপাতত এটুকুই। কাল পরশুর মধ্যে নাম্বার এবং তোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো চাপ নেই। (এর আগেও অর্পি অনেক মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে আবিরের কিন্তু কখনো এমন
বুকের ভেতরে ধড়াস করে ওঠে নি।)
– আচ্ছা, তাই হবে। চল এবারে বাড়ির দিকে যাওয়া যাক। আজ ভাবছি বিরিয়ানি খাব তাই যাওয়ার সময় একটা নিয়ে যেতে হবে।
খাওয়া-দাওয়া সেরে আজও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আবির। এমন সময় তন্দ্রার আগমন। তন্দ্রা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে চুল আচড়াচ্ছে। আবির বলে উঠলো…
– Hi!! আমি আবির…!!
– আমি তন্দ্রা (মৃদু কন্ঠে)
– শুনেছি অর্পির বলছিল। অর্পি বলতে আপনার বাবার কলিগ কালীকিঙ্কর দত্ত তাঁর ছোটো মেয়ে। বলছিল আপনার সাথে আলাপ আছে।
– বাব্বা বেশ খোঁজ নিয়েছেন দেখছি।
– না তেমন না।
ওদিক থেকে তন্দ্রার মা এর ডাক— এ তনু ঘুমোতে আয় অনেক রাত হলো!! – হ্যাঁ যাচ্ছি মা। – আসছি আবিরবাবু, আবার পরে কথা হবে। – হুমঃ জান অনেক রাত হলো!! আবির সজোড়ে নিঃশ্বাস ফেলে আস্তে আস্তে এগিয়ে গেল নিজের বিছানার দিকে… তারপর আর কি মনের আনন্দে উৎফুল্লিত নিদ্রা দিল… পরদিন সকালে একইভাবে…কলিং বেল বেজে উঠলো, ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলল, ব্রাশ করে আবির ঘরে ঢুকতে অর্পিতা চায়ের কাপটা হাতে দিয়ে বলল– আগামী কাল তো রবিবার তাই আজ আর তোর সাথে তন্দ্রার পরিচয় না করিয়ে, আগামীকাল তিনজন মিলে কোথাও ঘুরে আসি।- আমি প্রাথমিক পর্যায়ে পরিচয় যদিও সেরে ফেলেছি। অর্পিতার বুক টা আবার ধড়াস করে উঠলো আর বলল-
– বাব্বা, কাজ সেরে ফেলেছ তাহলে আর আমার দরকার কি নিজে নিজেই করে নে বাকিটা। – আরে বাবা তুই না হলে তো জমে না বোঝার চেষ্টা কর। – ঠিক আছে আগামীকাল তবে ব্যবস্থা করছি তিনজন মিলে ঘুরতে যাওয়ার। আর শোন সব ঠিকঠাক করে রাখা আছে দেখে নিস। [এই বলে চলে গেল]- হুম ঠিক আছে !! রোজ দিনের মতো দিন কেটে গেল… রবিবার বৈকালে একটা ঘুরতে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেছে অর্পিতা। আয়োজন অর্পিতা করলেও ওর মন যেন চাইছে না আবিরের সাথে পরিচয় হোক সম্পর্ক হোক তন্দ্রার।
রবিবার বিকেল পাঁচটা তিনজনে পৌঁছে গেছে ঢাকুরিয়া লেকে। আবির বলে উঠলো — এই জায়গাটা আমার খুব পছন্দের কতবার এসেছি। – কার সাথে প্রেমিকার সাথে ?অর্পিতা মৃদু হেসে… – হিঃ হিঃ ওর ওসব টেকে না। আমি ছাড়া ওর ঘুরতে আসার গতি নেই। – ওঃ আচ্ছা!! (মৃদু হেসে)- আমাকে লেগপুল কেন করছিস ? (আবির বিরক্তিকর অনুভব নিয়ে)- চল!! চলো!! একটু চা হয়ে যাক!! (মৃদু হেসে অর্পি)আবির চায়ের দোকানে গিয়ে তিনটে চা বললো– দিদি তিনটে চা দেবেন তো!! একটা একটু বেশি মিষ্টি। – আসলে আমার একটু মিষ্টি চলে তাই আরকি! (অর্পিতা তন্দ্রা কে বলল)- ওঃ!! চলো এবার বাড়ি ফেরা যাক। বিকেলটা বেশ ভালো কাটলো। (তন্দ্রা অর্পিতা কে বললো) – হ্যাঁ চলো !! বলছিলাম তোমার নাম্বারটা পাওয়া যাবে !! (অর্পিতা) – হ্যাঁ অবশ্যই, নাও লেখো 960909••••- রিং করে দিচ্ছি (অর্পিতা)- আমার নাম্বারটা রেখে দাও পাশেই থাকি তো !? দরকার পড়লে ফোন করতে পারো।- হু, বলো!! (তন্দ্রা) নাম্বারটা exchange এর পর আবির তন্দ্রার মধ্যে আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব বাড়তে থাকে। কাছে থেকে আরো কাছের হয়ে ওঠে দিনে দিনে ওদের সম্পর্কটা। ফলোতো আবিরের জীবনে খানিকটা গুরুত্ব কমতে থাকে অর্পিতার। যেমন এই ধরুন ফোন কেটে দেওয়া, যে মানুষটা সব কাজ জানিয়ে করত একসময় অর্পিতাকে সে একবারও বলার প্রয়োজন মনে করে না। তবে অর্পিতা তার যায়গায় স্থির ছিল শত খারাপ লাগার মাঝে ও সে কোনো দিন আবিরের খেয়াল রাখতে ভোলেনি, রোজ দিন আগে যেমন টিফিন বানিয়ে নিয়ে যেতে একসাথে খাবে বলে কিন্তু সে সৌভাগ্য কোথায় ?! আবির তো প্রেম মরীচিকার পেছনে ছুটছে এখন। যাইহোক এভাবে কয়েক মাস চলার পর একদিন রাতে আবির ধুম জ্বর এসেছে, আবির তন্দ্রা কে কোনো রকমে ফোন করে বললো — আমাকে একটু ঔষধ এনে দেবে!!- মা বাবাকে বলে এখন আমার পক্ষে এখন সম্ভব না গো, বাড়ি থেকে আমি এখন বেরোতে পারবোনা! অগত্যা তার খারাপ দিনের সঙ্গী অর্পিতা কে কল। – হ্যাঁ বল!! – Hello!! – তোর কি হয়েছে গলাটা এমন শোনাচ্ছে কেন দাঁড়া আমি আসছি…!! (আর কিছু না শুনে তৎক্ষণাৎ ফোনটা কেটে একছুটে আবিরের বাড়ি পৌঁছে গেল অর্পিতা)আবির কোনো রকমে মাথাটা তুমি দরজা খুলতেই… – এই তোর গা তো জ্বরে পুরে যাচ্ছে। নে তুই শুয়ে পর আমি ডাক্তার কাকু কে ডাকি। – আরে একটু ঔষধ এনে দে না মৃনাল দার দোকান থেকে তালেই হবে। – চুপ!! একদম চুপ!! তুই আমার থেকে বেশি বুঝিস তোর ব্যাপারে!? চুপচাপ শুয়ে থাকা। রিং রিং রিং…
– হ্যাঁ অপু মা বল!! – কাকু আমার আবিরটার খুব জ্বর এসেছে একটু তাড়াতাড়ি আসুন না please…(কাঁদোকাঁদো কন্ঠে)- হ্যাঁ যাচ্ছি মা তুই শান্ত হোঃ!! টিং…টং…- কাকু আসুন!! ডাক্তার কাকু দেখে ঔষধ দেওয়ার পর বললো– – ওর জ্বর না কমা পর্যন্ত জলপট্টি দিলে খুব ভালো হয়।- ঠিক আছে কাকু। – তবে এবারে আমি আসছি মা আর ঔষধ গুলো সময় মতো খাইয়ে দিস্। আর ভালো থাকিস তোরা।
ডাক্তারবাবু চলে যাওয়ার পর আবির কে ওষুধগুলো এগিয়ে দিয়ে বলল— খেয়ে নে ঔষধ গুলো, আমি বাড়িতে একটা কল করি। আজ আমাকে এখানেই থাকতে হবে ডাক্তারকাকু বলে গেলেন। – না না তোকে থাকতে হবে না। ঠিক হয়ে যাবে আমি ওষুধ গুলো খেয়ে নিচ্ছি।- এই দাঁড়া দাঁড়া!! এখন ওষুধ খাবি মানে ? আগে কিছু খেয়ে তারপরে ওষুধ খাবি। সন্ধে থেকে তো কিছুই পেটে পড়েনি। দাঁড়া আমি মাকে কলটা করে নি তারপর তোকে খেতে দিচ্ছি। রিং…রিং…রিং…- হ্যাঁ মা আমাকে আজ এখানেই থাকতে হবে। আবিরের খুব জ্বর, ডাক্তার কাকু বলল জ্বর না কমা পর্যন্ত জলপট্টি দিতে।- ঠিক আছে কোন সমস্যা হলে ফোন করিস। – ঠিক আছে মা রাখছি। এরপর রান্নাঘর থেকে বিস্কুট আর জলের গ্লাস নিয়ে এসে বিস্কুট জল আর ওষুধগুলো আবিরকে খাইয়ে দিল, আর আবিরের মাথাটা কোলের ওপরে নিয়ে বেশ খানিকক্ষণ মানে সারারাতই বলা চলে জলপট্টি দেওয়ার পর জ্বরটা কমেছে।সকাল ছয়টা… টিং…টং…টিং…টং…টিং…টং…অনেকবার কলিং বেল বাজানোর পর কোন সাড়া না পাওয়ায় তন্দ্রা নিজের কাছে থাকা চাবিটা দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো… ঢুকতেই চোখে পড়ল অর্পির কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে আবির ! আর ঘুমের জেরে অর্পিতার মাথাটা নুয়ে পড়েছে, অর্পিতার চুলগুলো আবিরের ঘাড়ে-মুখে আছেরে পড়েছে…
এরপর তন্দ্রা পা টিপে টিপে পৌঁছে গেল ওদের কাছে এবং আলতো করে অর্পিতার মাথাটা বালিশ দিয়ে ঠিক করে দিতে যাবে এমন সময় অর্পিতার ঘুম ভাঙতে ইতস্তত হয়ে নড়েচড়ে উঠলো। – হ্যাঁ আসলে… – এই এই ঠিক আছে বুঝতে পেরেছি তোমরা ঘুমিয়ে গিয়েছিলে। – একটু আস্তে কথা বলো আবির অনেক রাতে ঘুমিয়েছে। এই বলে অর্পিতা আবিরের মাথাটা বালিশের রেখে দিয়ে উঠে পরল। তন্দ্রা বলল- – আমি চা বসাচ্ছি তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও। অর্পিতা ফ্রেশ হয়ে চা খেতে খেতে দুজন মিলে গল্প করছে এমন সময়, তন্দ্রার বেস্ট ফ্রেন্ড সিড্ মানে সিদ্ধার্থের ফোন…- Hallo তুই হঠাৎ সকালে ? – সারপ্রাইজ আমি কলকাতায়…!! আমি তোর বাড়ির সামনে গেটটা খোল।- সত্যি বলছিস ?- Yah Babs!! সত্যি বলছি।তন্দ্রা ছুটে গিয়ে বেলকনি দিয়ে রাস্তার দিকে তাকাতেই দেখলো হ্যাঁ সত্যিই এসেছে… তাই আর দেরি না করে থেকে বলল উল্টোদিকে দরজার সামনে দাঁড়াতে। সিড্ বলল — কিন্তু কেনো ? – তোকে আবিরের কথা বলেছিলাম না এটা আবিরের বাড়ি। এখন আমি ওখানেই আছি। – আচ্ছা!! এই সুবাদে আবিরের সাথে দেখা হয়ে যাবে। গেট খুলেই তন্দ্রা বলল— আসলে আবিরের খুব শরীর খারাপ কাল রাতে নাকি খুব জ্বর এসেছিল। আমি আসতে পারিনি ওর বেস্ট ফ্রেন্ডের কাল রাত থেকে আছে। – ও আচ্ছা!! তবে পরিচয় করতে হচ্ছে। – হ্যাঁ ও খুব ভালো মেয়ে।- Hey!! I’m Sid, সিদ্ধার্থ। – নমস্কার আমি অর্পিতা। ততক্ষণে আবির বিছানা থেকে উঠে পড়েছি। – Hey!! Abir what’s up !?- এই যেমনটা দেখছো।(দুর্বল কন্ঠে) এস বসো। অর্পি চেয়ারটা এনে দে তো।
অর্পিতা চেয়ারটি এনে দিতে বসে বেশ খানিকক্ষণ আড্ডার সাথে পরিচয় টা সেরে ফেলা গেল। তারপর ঠিক হল আজকে সারাদিনটা এখানে কাটানো হবে আর সাথে হৈ-হুল্লোড়। আবিরের গাছ লাগানোর শখ ছিল তাই বাড়ির ছাদে একটা ছোট্ট এরং সুন্দর বাগান রয়েছে, সেখানের চেয়ার দোলনা এবং বসার জন্য খুব ভালো জায়গা ও রয়েছে, তাই ঠিক করা হল আজ সারাদিনটা ওই বাগানে কাটানো হবে। পরিকল্পনা মতো রান্নার জোগাড় যন্ত্র থেকে শুরু করে রান্না করা সবটাই অর্পিতা এবং তন্দ্রা মিলে সেরে ফেলল। এর ফাঁকে ও আবিরের ওষুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে যত্ন নেওয়ার কথা একদম ভোলেনি অর্পিতা। – রান্না তো প্রায় শেষ এবার ওদেরকে ডাকি !? (তন্দ্রা)- হ্যাঁ হ্যাঁ এইতো চিকেন টা হয়ে এসেছে। – এই!! তোরা চলে আই রান্না হয়ে গেছে। – আমি এখন খাব না আমার ঠিক রুচি নেই, সিদ্ধান্ত তুমি লাঞ্চ করে নাও। – আবির!! চুপচাপ খেয়ে নে। এত কষ্ট করে তোর পছন্দের রান্নাটা করলাম আর তুই খাবি না ? এটা বলতে বলতে অর্পিতা ঘরে ঢুকলো। – নে নে নে!! ওঠ তুই চল একসাথে খেতে বসবো, তুই না বসলে কিন্তু আমিও খাবোনা সকাল থেকে আমার কিছু খাওয়া হয়নি একটা বিস্কুট আর চা ছাড়া। – চল (দীর্ঘশ্বাস ফেলে)। চলো সিদ্ধার্থ। এই বলে চার জন মিলে খেতে বসে পরলো, ততক্ষণে খাবারের গন্ধে বেশ মম করছে বাগান চৌহদ্দি। সিদ্ধার্থ বলে উঠলো…- Wow!! Who is the chief? The smell is too good.- আমি যোগাড় করে দিয়েছি, আর অর্পিতা সব রান্না করেছে। এই বলে খাওয়া শুরু হলো, খেতে আড্ডা চলছে এরই মাঝে সিদ্ধার্থ বলে উঠলো… – যেমন গন্ধ তেমন সুস্বাদু… – Thank god!! কেউ তো বললো আমার রান্না টা ভালো হয়েছে, আরেকজনের মুখে তো রচেই না!! এভাবেই চলতে থাকল আড্ডা খুনসুটি তাড় এবার সময় শেষে বাড়ি ফেরার পালা…
রাত ৮:৩০ — বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে, অর্পিতা এক কাপ কফি নিয়ে জানলার ধারে দাঁড়িয়ে। এমন সময় ফোনে একটি অচেনা নাম্বার থেকে ফোন ঢুকলো — Hallo !! কে? – I’m Sid.!! – ও তুমি বলো, হঠাৎ call করলে।- কেন খুব অসুবিধা হলো? – না তা নয়। যাগ্গে ছাড়ো বাদ দাও বলো। – দুপুরের রান্নাটাসত্যি অসাধারণ ছিল !! – সত্যি!? Thank you…(খুশির সঙ্গে)- তোমার রান্নার মতনই সুন্দর দেখতে তুমিও। (ফ্লার্টিং মুড)- আচ্ছা এটা কি পটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ? – এ বাবা না না !! সত্যি বললাম। এভাবে এদের মধ্যে কথা বাড়তে থাকে দিনের পর দিন…
আলাপ বাড়তে থাকে সিদ্ধার্থ আর অর্পিতার মধ্যে… একদিন সন্ধ্যাবেলা সিদ্ধার্থ বলেই দিল তার মনের কথা— একটা কথা বলব অর্পিতা ? – হ্যাঁ বলোই না এ ভাবে জিজ্ঞাসা করার কি আছে !!- আসলে একটা কথা জানো আমি না তন্দ্রা কে পছন্দ করি সেই স্কুল জীবন থেকে, ভেবেছিলাম এবারে বলবো তবে যখন শুনলাম ও একটা সম্পর্ক এগোচ্ছে আর এসব কথা তুলে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কটা খারাপ করতে চাইনি। নিজেকে এটা বলে সান্ত্বনা দিয়েছি, সব গোলাপ তো আর প্রেম নিবেদনে ব্যবহার হয় না।- মন খারাপ করোনা, জীবনের পথে এগিয়ে চলো দেখো কেউ না কেউ তোমার হাতটি ধরবে। (অর্পিতা গলাটা বেশ খানিকটা ভিজে এসেছিল) – আসলে কি বলতো আমরা যেটা চাই সেটা সবসময় পাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না আমিও পাইনি। – তোমার এমন কেউ… – না ছাড়ো বাদ দাও, কিছু না!! (দীর্ঘশ্বাসে মন খারাপের সুরঃ) – আমাকে বলবে না!!- কি বলি বলতো, আগে কখনো বুঝিনি জানো তো যখন আমি আবির একসাথে ঘুরতাম খেলতাম ইচ্ছেমতো জড়াজড়ি করতে পারতাম তখন বুঝিনি, হ্যাঁ এটা বুঝেছিলাম ও আমার জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ তবে ভালোবাসি কিনা বুঝতে পারিনি আজও। তবে এখন যখন আবিরকে দেখি তন্দ্রার সাথে তখন খুব কষ্ট হয় কেন জানি না এটা কি ভালোবাসা ? জানিনা ছাড়ো ওসব কথা, চলো অন্য কিছু নিয়ে কথা বলি।- তুমিও কষ্ট পেয়ে না তোমার জন্যও নিশ্চয়ই কেউ অপেক্ষা করছে, যে বড়ই সৌভাগ্যবান তোমার মত এক অসাধারণ রন্ধনশিল্পী সাথে সারাজীবন কাটানোর সুযোগ পাবে।- আচ্ছা আমার রান্না খেতে এত ভালো লেগেছে তোমার? – হ্যাঁ তা তো লেগেছেই। – ঠিক আছে আবার একদিন খাওয়াবো তোমাকে। এবারে খুশি তো !! (খোশমেজাজে)
এভাবেই কাটতে থাকলো দিনের পর দিন কেটে গেল চারটে মাস। অন্যদিকে আবির আর তন্দ্রা অর্পিতা আর সিদ্ধার্থের অভাব বুঝতে পারছে। আবির সারাটাক্ষণ তন্দ্রার মধ্যে অর্পিতা কে খুঁজতে চাইছে ওকে তন্দ্রার মধ্যে কখনো পাবে না এটা জানা সত্ত্বেও। যদিও সকাল বেলা অর্পিতা ঠিকই আসতো আবিরকে গুছিয়ে দিতে তবে সেই অন্তরঙ্গতা কোথায় যেন কমছিল ধিরে ধিরে। আর ওদিকে তন্দ্রাও খুঁজছে সিদ্ধান্তকে। এসব নিয়েই ওদের মধ্যে লাগছে নানান ঠোকাঠুকি, বিবাদ… এভাবে আরো কয়েকটা মাস অতিবাহিত হতে থাকে। তারপর একদিন বিকালে দেখা করে দুজন দুজনকে সবটা খুলে বললো। – আবির শোনো না একটা কথা বলার ছিল। ( কাতর কন্ঠে ) – হুম বলো আমিও কিছু বলবো। ( কাতর কন্ঠে ) – আসলে আমি বুঝতে পারছি না এটা কীভাবে বলা যায় বা বলা উচিৎ তবুও বলছি, আমি মনে হয় তোমাকে ভালোবেসে উঠতে পারিনি। আমি বা আমরা হয়তো দুজনেই মোহতে ভেসেছে প্রতি মুহূর্তে। আমি সব সময় সিদ্ধার্থ কে খুঁজে যাই তোমার মধ্যে এটা জানা সত্ত্বেও যে কেউ কারও মতো হয়না। আর সব থেকে বড় কথা আমাদের মধ্যে সাময়িক মিল থাকলেও অনেক অমিল, কিছু মনে কোরো না আমার মনে হয় আমাদের এই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আশা উচিৎ।আমি বুঝতে পেরেছি আমি সিদ্ধার্থ কে ভালোবাসি, আমার মনে হয় ও আমাকে ভালোবাসে। Please মন খারাপ করো না Please, I’m sorry but আমি চাই না এই সম্পর্ক টা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ভবিষ্যতের বাকি দিন গুলো খারাপ করতে। এবারে তোমার টা বলো Please…এই তুমি হাসছো কেনো? – Actually আমিও ঠিক একই কথা বলতে চাই, তাই নিয়তি দেখে হাসি পেলো খানিক !! আমার মনে হয় আমি অর্পি কে ভালোবেসে ফেলেছি অনেক আগেই, in fact আমার মা ও চাইতেন মনে হয়, কারণ মাঝে মাঝে ইয়ার্কি-র ছলে বলতে শুনেছি – “তোর আর অপুমার বিয়ে দিলে বেশ মানাবে।” কিন্তু আমরা কোনোদিন এসব নিয়ে ভাবিনি আর অর্পি আমার যেভাবে খেয়াল রাখে আমার মনে হয় অর্পিও। আর আমি দেখেছি তোমার সাথে সম্পর্কে আসার পর অর্পি কেমন যেন দূরে সরে গিয়েছে আমার থেকে আর আমিও তো…!! যাইহোক আমার মনে হয় ওকে আমার সবটা খুলে বলা উচিৎ।- শোনো না আবির আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা না থাকলেও বন্ধুত্বটা রেখে দিতে চাই আজীবন। তুমি আমার সাথে বন্ধু হয়ে থাকবে আজীবন ? – হ্যাঁ অবশ্যই থাকবে। যাইহোক সন্ধ্যে আসছে বাড়ির দিকে যাওয়া যাক!! – হুঃ চলো!!এই বলে আবির আর তন্দ্রা দুজন মিলে বাড়ির পথে রওনা দিল। এমন সময় ওদের চোখ পড়ল একটু দূরের এক ফুচকা দোকানে চোখ আটকালেও এক ঝলকে দেখে বুঝতে না পারায় আরো একবার ভালো করে দেখে আবির কে বললো– ওটা অর্পিতা আর সিদ্ধার্ত না…!?
এই দেখে আবির নিজেকে সামলাতে না পেরে তৎক্ষনাৎ ছুটে গিয়ে অর্পিতা কে বলল — তুই এত দূরে এগিয়ে গিয়েছিস? এই যে আমি তোর সব ছিলাম, এই তার নমুনা? তুই এটা কি করে করতে পারলি? একইভাবে তন্দ্রা ও সিদ্ধার্থ কে বলল— তুই এটা করতে পারিস না !! সিদ্ধার্থ আর অর্পিতা বলে উঠলো…- আমরা কি করলাম তোরা যেমন ভাবছিস তেমন কিছু নয়।- আমার আর সিদ্ধার্থের এই অফিসে একটা ইন্টারভিউ ছিল আমরা সেখানেই এসেছিলাম। আগে জানতাম ও না পরে এসে দেখা হয়। আর আমার ফুচকা খেতে মন চাইছিল তাই দুজন মিলে…আর তাছাড়া আমরা যদি তেমন কোনো সম্পর্কে গিয়েও থাকি তবে তোদের কি সমস্যা? তোরা তোদের সম্পর্কে ভালো থাক না, আমাদের নিয়ে কেন এত ভাবছিস ?- অর্পিতা তো ঠিকই বলেছে। তোদের কি এত সমস্যা? (সিদ্ধার্থ) – অর্পি তুই তো জানিস আমার মা তোকে কতটা পছন্দ করত আমার বউ হিসেবে। – আমি তো তোর বউ হতেই চেয়েছিলাম। আমিতো চেয়েছিলাম তোর হাতটাই চির জীবন ধরে রাখতে, even আজও চাই। হ্যাঁ আমি তোকে ভালবাসি কোনদিন বলিনি ভালোবাসলেই যে সব সময় মুখে বলে দিতে হবে এটা তো কোথাও লেখা নেই। কাকিমা তো আমার মায়ের সাথে কথা ও বলে গেছে তোর আর আমার বিয়ের ব্যাপারে। – কই আগে কখনো বলিস নি তো। – কেন বলবো তুইতো আমার মধ্যে কখনো ভালোবাসা দেখতেই পাসনি। – মানছি আমার ভুল হয়েছে ভালোবাসবি আমায়? আমার হাতটা ধরে রাখবে সব ভুলে? – তবে তোর আর তন্দ্রার সম্পর্কটা কী হবে? – আমরা অলরেডি মিউচুয়াল ব্রেকআপ করে নিয়েছি। ভেবেছিলাম আজ তোদেরকে জানাবো সবটা। আমরা সম্পর্কে আসার পর এদিকে যতটা ঘনিষ্ঠ হতে গেছি তোর থেকে তত বেশি যেন দূরে সরে গেছি। সত্যি বলতে তুই দূরে সরে যাওয়ার পরে বুঝতে পেরেছি তোকে আমি কতটা ভালোবাসি।
বছর চল্লিশ পর…- হ্যাঁ তারপর চার বছর পর আমাদের বিয়ে হয়েছে। তারপর পয়ত্রিশ বছর ধরে আমাকে গুছিয়ে অফিস পাঠানো, ছুটির দিনে ঘুরতে যাওয়া, ছেলেপুলে সামলানো আর রিটায়ারমেন্ট এর পর তীর্থস্থান ভ্রমণ মানে সংসার ওই আর কি, যদিও বিয়ে করার আগেও এ ঝক্কি পোহাতে হতো তা তে তোমাদের জানা।আর হ্যাঁ আমাদের দুটো যমজ সন্তান হয়েছিল একটি মেয়ে আরেকটি ছেলে। তারা জীবনে অনেক বড় হয়েছে বিয়ে দিয়েছি তাদের, জীবনের দিনগুলো আমার স্বপ্নের মতোই কেটেছিল আজ একটা বছর হল তুমি চিরঘুমের দেশে চলে গেছে। আমাকেও সাথে নিতে পারতে। জানো তো আজ আমি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছি, আমার COVID-19 positive, হয়তো আর কিছুক্ষণ পরেই তোর সাথে আমার আবার দেখা হবে, এই এক বছরের বিচ্ছেদ আমার আর সহ্য হচ্ছে না জানিস, বড্ড মনটা আনচান করছে তোকে দেখার জন্য…যাই হোক ঈশ্বর আমার সাংসারিক স্বপ্নটা বলেই না হয় পাঠিয়ে দিও চিরঘুমের দেশে, মানে আমার অর্পিতার কাছে…
আমি এ জীবনে চেয়েছিলাম-একসাথে জীবনের কোন একটা মুহূর্তে পথ চলা শুরু হবে, তাকে ঘিরে আমার পৃথিবী আর আমায় ঘিরে তার পৃথিবী। আমার চেনা রাস্তা কে নতুন করে চিনতে শেখাবে সেই মানুষটা। রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে কোনো একটা দোকানে গিয়ে তার পছন্দের একটা কিছু কিনে নির্দ্বিধায় আমাকে বলতে পারবে এই এত টাকা হয়েছে, আগে টাকাটা দিয়ে দাও। যার কোন কিছুই থাকবে না বাধা যেকোনো কিছু আস্বাদনের ইচ্ছে হলে আমায় এসে বলবে এটা করতে চাই ওটা করতে চাই। যেমন ধরো তার মদ খেয়ে নেশা করতে ইচ্ছা করে তাকে আমার সামনে বসিয়েই তার ইচ্ছেমত মদ খাইয়ে তাকে সুস্থ করে বাড়ি পৌঁছে দেবার সম্পূর্ণ দায়ভার আমার থাকবে। যার পিরিয়ডের এর দিনে একগোছা চকলেট গোলাপ আর তার পছন্দের খাবারগুলো তার চোখের সামনে পৌঁছে দেওয়া আমার দায়িত্ব থাকবে। যার চোখ মিথ্যে বলবে না, যার চোখের দিকে তাকালে আমি বলে দিতে পারব তার মনের সব কথা। এমন ভাবে অনেক কটা বছর একসাথে কাটানোর পর সেও তার জীবনের নিজের পায়ে দাঁড়াবে আর আমিও। তারপর বাড়ির সম্মতিতে আমাদের বিয়ে, তারপর আমাদের সম্মতিতে আমাদের নতুন প্রজন্ম, তারপর তাকে বড় করার আপ্রাণ প্রচেষ্টা, মানুষের মতন মানুষ করার আপ্রাণ চেষ্টা। সেই চেষ্টায় সফলতা পাবার পর তার পছন্দের মানুষের সাথে তাদের বিয়ে দেওয়া তারপর তাদের ইচ্ছাই তাদের নতুন প্রজন্ম। তারপর সেই নতুন প্রজন্ম যদি ছেলে হয় তবে আমার স্ত্রীর সাথে প্রেম হবে আর যদি মেয়ে হয় তবে আমার সাথে প্রেম হবে আমার নতুন বউ। আমার সেই পুরানো প্রেমিকা তখন যে আমার স্ত্রী কাকে বলব “তোমার সতীনের যেন কোন কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”- এভাবে পিছনে লাগতে লাগতে জীবনের বাকি কটা দিন আগে তারপর কোন একটা দিন আমি অথবা না আমার সেই পুরনো প্রেমিকা পৃথিবী থেকে বিদায় নিতাম। হ্যাঁ শেষমেষ আমার কাধেই শেষনিঃশ্বাস পড়েছিল অর্পিতার…
আবিরের সাথে গল্পটার ও নির্মাণ প্রাপ্তি হল।