শান্তনুর সবসময় পুরোনো স্মৃতিকে মনে করতে ইচ্ছে করে না । ইচ্ছে করে না , সেই চিন্তায় ডুবে যেতে । আবার অনেকদিন এমনও আসে যখন এগুলো মনে করে , অন্য একপ্রকার শান্তি পাওয়া যায় ।
প্রায় চোখে চোখ পড়ে আজকাল । তবে শুভ্রার ঠোঁটের কোণে একটা হাসি লেগে থাকলেও, শান্তনু চোখ সরিয়ে নেয় সাথে সাথেই ।এর মধ্যেই সে তার কাছের বন্ধুকে জানিয়েছে ব্যাপারটা । অনেক পরামর্শ পেয়েছে । তবে উদ্যম থাকা সত্ত্বেও কিসের একটা ভয় তার সাহসকে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে । একদিন খাতা চেয়েছিল শুভ্রার কাছে । ওটাই শান্তনুর এখন একমাত্র সম্বল ।পরের সপ্তাহে খাতাটা ফেরত দিতে হবে । নোটসগুলো তোলার সময় , শান্তনু খাতার গন্ধ নেয় মাঝে মাঝে । শুভ্রার হাতের সৌরভ লেগে আছে যে সেই এক দিস্তায় ।
শান্তনুর কাছে শুভ্রা এতটা কাছের মানুষ হয়ে উঠবে ভাবে নি সে । বয়ঃসন্ধিকালে এমনটা হয়ে থাকে হয়তো ।
দিনের পর দিন কেটে যাচ্ছে । কোনো একটা উপায় হয়ে উঠছে না । কীসেরই বা উপায় খুঁজছে সেটাও ধোঁয়াশা তার কাছে।
অভীক শান্তনুর ভালো বন্ধু । শুভ্রার কথা তাকেই জানিয়েছিল। তবে অভিককে তখনও এতো সমস্যার কথা জানায় নি । তবে আর সহ্য হচ্ছে না যেন!
-ভাই, খুব চাপে পড়েছি ।
-কি কেস ,??
-আরে ওই মেয়েটা ।
-কে বলতো ?
-আরে শুভ্রা বলে একজনের কথা বলেছিলাম না ।
-ও হ্যাঁ, বৌদি !
-ধুর ।
-আচ্ছা আচ্ছা বল ।
-কেমন একটা অস্বস্তি হচ্ছে বুঝলি !
-গুরু , তুমি প্রেমে পড়েছ ।
অভীক বেশ মজা পেয়েছে কথাটা শুনে । বোঝায় যাচ্ছে ।
-তাতে কি ? এত অস্বস্তি হবে তাবলে!
-ওকে জানা তোর ব্যাপার । যে তুই পছন্দ করিস ।নইলে শান্তি নেই ।
-সাহস নেই ভাই ।
-ও মেয়ে ঠিক আছে, শাকচুন্নি নয়!
-এই শালা ! বাজে কথা বলবি না ।
-ও বাওয়া ! দাঁড়া দেখছি কি করা যায় ।
কথাগুলো বলে কিছুটা হালকা হলো শান্তনু । বাড়ির কাছেই নদী আছে একটা । দুই বন্ধু মিলে গেল একটু হওয়া খেতে । ওখানে এক কাকিমা দারুন চপ ভাজে । কাকিমা বলেছি ‘পিসিমা’ নয় । তো তার দোকানে চপ খেতে খেতে , অনেককিছুই ভাবছিল ।
“ওই স্রোতে একবার গা ভাসালে , যদি মোহনা খুঁজে পাই ।”
( চলবে )