নারীদিবসের শুভেচ্ছা কী শুধু
নারীবাদী গোষ্ঠীর জন্যই?
যারা নারীর অধিকার নিয়ে লড়াই করেন,
গলা তোলেন,প্রতিবাদ করেন,
নারীদিবস কি শুধু তাদেরই জন্য?
যে স্ত্রীকে রান্নায় নুন-ঝাল কম হলে,
প্রতিনিয়ত শুনতে হয় সে অকর্মন্য!
সে প্রতিবাদের সুর না হেঁকে
আরও ভাল করে রান্নার চেষ্টা করে,
শুধুমাত্র অশান্তি এড়াতে
বাড়ির বড়বউয়ের কর্তব্য রক্ষা করতে,
পুরো সংসারটাকে এক সুতোয় বেঁধে রাখতে,
প্রতিনিয়ত মুখবুজে লড়াই করে।
আজ তার জন্য নারীদিবস নয়?
যে মা হাজার অশান্তি সহ্য করে,
যার স্বামীর সাথে হাজারও মতবিরোধ।
যে অনায়াসে ডির্ভোস দিয়ে
নারীবাদী ভাবমূর্তি প্রকাশ করতেই পারত,
কিন্তু শুধুমাত্র সন্তানের কথা ভেবে,
তাকে একটা সুস্থ জীবন দেবে বলে,
সব মানিয়ে নিয়ে একটা সুন্দর
পরিবার গড়ার লড়াই করছে
আজ তার জন্য নারীদিবস নয়?
সদ্য রূপান্তরিত যে নারী রোজ
একটা সুস্থ জীবনের আশায় বাঁচে,
প্রতিদিন এই দুমুখো সমাজের সঙ্গে
লড়াই করে নিজের অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখে
আজকের দিনটা তার জন্য নয়?
যে মুখচোরা মেয়েটি তথাকথিত
সুন্দরী ও স্মার্ট না হওয়ায় রোজ
বন্ধুদের কাছে হাসির-ঠাট্টার পাত্রী,
যে একটাও প্রতিবাদ না করে
লড়ে যায় নিজেকে প্রতিষ্টিত করার আশায়,
যে ওই ঠাট্টার উত্তর দিতে চায়
তার প্রতিভা দিয়ে,
আজ তার জন্য নারীদিবস নয় কি?
যে পুরুষালি চেহারার ভিতরে
একটা মিষ্টি প্রেমিকা লুকিয়ে আছে,
সমাজের নোংরা মন্তব্যে জর্জরিত হয়ে
যার আর প্রেমিকা হয়ে বাঁচা হয়না,
আজকের দিনটা তার জন্য কিছুই না?
কি? বলুন, দিনটা এদের জন্য নয়?
আপনি, আপনি, আপনারা,
আপনাদের দুমুখো সমাজ
কোনোদিন এদের পাশে দাঁড়িয়েছেন?
নারীদিবসে বড় বড় ভাষণ দিয়েছেন,
কিন্তু এদের এতটুকু সম্মান করেন নি!
আজ নারীদিবসের শুভেচ্চা জানাই
সেই সব নারীকে যারা অন্দরে থেকে
পরিবারের পাশে থেকে,তাদের আগলে রাখে।
সেই সব নারীকে যারা সন্তানদের জন্য
সবরকম ত্যাগ করছেন প্রতিনিয়ত।
সেই সমস্ত মানুষদের যারা সমাজভয় তুচ্ছ করে,
একজন নারী হয়ে নিজের অস্তিত্ব গড়তে চায়।
সেই সব পুরুষদেরও আজ নারীদিবসের শুভেচ্ছা
যারা নারীদের সম্মান করে,
তাদের সবরকম লড়াই-এ পাশে দাঁড়িয়ে
লড়ার শক্তি জুগিয়েছে।