নাম- কিংডম অফ দীক্ষিত
বর্তমান জনসংখ্যা- ১
রাজ্য- সুয়শপুর
শাসক- সম্রাট সুয়শ ১
পত্তন- ৫ই নভেম্বর, ২০১৭
জাতীয় প্রাণী- টিকটিকি
কি মনে হচ্ছে, এটা আবার কোন দেশ! ২০১৭ সালে আরেকটি নতুন দেশের পত্তন… হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন, ইন্দোরের এক তরুণ রাতারাতি নিজেকে রাজা ঘোষণা করেছেন বীর তাবিল নামে ৮০০ বর্গমাইল এলাকার এক ভূখণ্ডের। এই বীর তাবিল হল ইজিপ্ট এবং সুদানের মাঝের এক এমন ভূখণ্ড যেটিকে কোন দেশই নিজের বলে দাবি করেনা। উপনিবেশিক শাসনের পর ১৮৯৯ সালে যে সীমারেখা টানা হয়, ইজিপ্ট সেটিকেই মেনে চলে। কিন্তু সুদান ১৯০২ সালে তৈরি নতুন সীমারেখাকে মেনে চলে। এই গোলমালের কারণেই ইজিপ্ট মনে করে বীর তাবিল সুদানের অংশ, অন্যদিকে সুদান মনে করে এটি ইজিপ্টের অন্তর্গত। এই বীর তাবিলে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই এবং বিস্তীর্ণ মরুভূমির এই অংশে জনমানবের কোন চিন্হমাত্র নেই। কিন্তু এই ব্যারেন ল্যান্ডেরই নতুন রাজা সুয়শ দীক্ষিত।
সুয়শ ইন্দোরের এক সফটওয়ার কোম্পানির সিইও। এবারে ইজিপ্ট ঘুরতে গিয়েই সুয়শ ঠিক করে ফেলে বীর তাবিলে যাবে। মুস্তাফা নামের এক স্থানীয় গাড়ীর চালককে সঙ্গে নিয়ে শুরু হয় যাত্রা। আবু সিম্বেল থেকে ভোর ৪টেয় রওনা হয় সুয়শ। এই এলাকাটি ইজিপ্ট এবং সুদানের বর্ডার ঘেঁষা বলে এখানে প্রায় সবসময় সন্ত্রাসবাদীদের আনাগোনা লেগেই থাকে। আর আর্মির কাছে তাই “ Shoot at Sight” এর অর্ডার। শেষমেশ ইজিপ্ট আর্মির কাছ থেকে একটি পারমিশন লেটার নিয়ে রীতিমত প্রান হাতে করে ৩১৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় সুয়শ। আর তারপরেই নতুন পতাকা পুতে নিজের দেশের শুভ পত্তন করেন রাজা সুয়শ।
ফেসবুকেই সুয়শ তার দেশের কথা পৃথিবীবাসীকে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন সুয়শপুরের প্রথম রাষ্ট্রপতি হল তার বাবা এবং এই নতুন দেশ তার বাবাকে তার জন্মদিনের উপহার। আগেকার দিনে কেউ যদি কোন ভূখণ্ড দখল করতেন, তখন গাছ পুতে তিনি দখলের প্রমাণ রাখতেন। সুয়শও তাই তার নব আবিষ্কৃত দেশে কয়েকটা বীজ পুতে রেখেছেন। তিনি এও জানিয়েছেন, যে এরপর যদি কেউ তার দেশে অনধিকার প্রবেশ করেন, তবে যুদ্ধ হবে।
সুয়শের কথায়, “if they want it back, there will be a war (over a cup of coffee at the Starbucks probably)!”
সুয়শপুরের বর্তমান জনসংখ্যা তো এক, কিন্তু সুয়শ তার দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করেছেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী সহ আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা। তাই আর দেরি না করে ঢুঁ মেরে আসুন সুয়শের অন্তর্জলীয় ঠিকানায় https://kingdomofdixit.gov.best
তবে সুয়শ প্রথম নয়। এর আগেও বেশকিছু-জন নিজেকে বীর তাবিলের রাজা ঘোষণা করেছেন। যেমন জেরেমি হিটন নামের এক আমেরিকান ২০১৪ সালে বীর তাবিল তার মেয়েকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু এসব ভেবে কাজ নেই। আমাদের দেশের ছেলে আফ্রিকার এক ভূখণ্ডের রাজা হয়েছেন, এটাই কি কম গর্বের বিষয়। তাই, সুয়শপুরের জয় হোক।