উভয় সংকটে চূড়ান্ত বর্ষ ও সেমিস্টার। চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে চলতি বছরের পড়ুয়ারা। সমস্ত কিছু স্বাভাবিক থাকলে এতদিনে চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়ে যেত। পরবর্তী পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিতে সুবিধে হতো। কিন্তু বাঁধ সাধলো করোনা ভাইরাস,অতিমারী। বি.এড, ডি. এল.এড, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ভবিষ্যৎ এখনও পর্যন্ত দোদুল্যমান।
এদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। শিক্ষার্থীরা সহজাত ভাবেই পরীক্ষায় বসতে ভীতসন্ত্রস্ত।
গত ৬জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন(ইউজিসি) নির্দেশিকা জারি করে। তাতে বলা হয় যে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত বর্ষ ও সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে হবে।
তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষার্থীদের এই বছরের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় বসতে নাও হতে পারে। কারণ উপাচার্যরা বলেছেন, ইতিমধ্যেই মূল্যয়ন প্রক্রিয়া শেষ।
রাজ্য উচ্চশিক্ষা বিভাগ সর্বশেষ সেমিস্টারের গড়,হোম এসাইনমেন্ট এবং চূড়ান্ত সেমিস্টারের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশের প্রস্তাব দিয়েছে।
উচ্চশিক্ষা ও স্কুলশিক্ষা বিভাগের সচিব মনীশ জৈন পরীক্ষা না নেওয়ার আর্জি লিখে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে চিঠি দেন। তিনি বলেন,নির্দেশিকা বাধ্যতামূলক না করে রাজ্যকে নিজস্ব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অনুমতি দেওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্ট এবিষয়ে নাছোড়বান্দা। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি অরুণ মিশ্রর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ স্পষ্ট মতামত জানিয়েছেন।তাঁদের মতে, করোনার কঠিন সময়ে থেমে না থেকে পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। পরীক্ষা না হলে তা দেশের ক্ষতি নয়? এতে একবছর নষ্ট হবেনা পড়ুয়াদের? তাঁরা আরও যোগ করেন, পরীক্ষায় বসতে না পারলে তার অনেক বড় মূল্য চোকাতে হবে পড়ুয়াদের। করোনা-বছরে পরীক্ষা না দিয়ে পাশ করে যাওয়া ছাত্রছাত্রী হিসেবে তকমা লেগে যাবে। অসুবিধা হবে তাদের ভবিষ্যতে, উচ্চশিক্ষায় এবং কাজের জগতে।
এটাও পড়তে পারেন রবীন্দ্রনাথ ও ছিন্নপত্র
অন্যদিকে,চূড়ান্ত বর্ষ ও সেমিস্টার পরীক্ষা বাতিল করার আর্জি জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ। তাদের দাবি, ঝড়ের বেগে সংক্রমণ। প্রায়ই স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন করতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্য। পরীক্ষায় বসতে বাধ্য হওয়ার ঘটনা পরীক্ষার্থীর বিপদ ডেকে আনবেনা তো? তার দায় কি সরকার নেবে? এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থীরা কিভাবেই বা পৌঁছবে পরীক্ষা কেন্দ্রে? আপাতত কিছুদিনের জন্য পরীক্ষা পেছানোর আবেদন করেছে তারা।
বেঞ্চের পাল্টা প্রশ্ন,পড়ুয়াদের সুরক্ষা মাথায় রেখে ব্ব্যবস্থা হবে। আবেদনকারীরা এই আস্থা রাখছেন না কেন?
অনিশ্চয়তার মধ্যে পুরো বিষয়টা। পরবর্তী শুনানির আগে কিছু বলা যাচ্ছেনা।